মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম
সরকারী সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংক এবং সরকারী-বেসরকারী ব্যাংকে চাকরি করে জীবন নির্বাহ করা ইসলামী শরিয়তসম্মত কিনা? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: ২. বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী ব্যাংক সহ সকল সরকারি-বেসরকারী ব্যাংক সমূহ বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনস্থ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ আর ব্যাংকিং লেন-দেন ও ব্যাংকে জমাকৃত টাকার উপর ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত অতিরিক্ত লভ্যাংশ বা ইনটারেস্ট বর্তমান যুগের বিশুদ্ধ ও বিশিষ্ট ফকিহ, মুফতিগণের দৃষ্টিতে সুদের অবকাশ হতে মুক্ত নয়- বিধায় বৈধ পন্থায় মান-সম্মত সরকারি-বেরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ থাকতে ব্যাংকের চাকরি হতে নিজকে পরহেজ বা বিরত রাখাই নিরাপদ ও ইহতিয়াত তথা সাবধানতা। আর যদি অন্য কোন জায়গা/প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ না থাকে তখন একান্ত বাধ্য হলে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যাংক চাকরি গ্রহণ করে জীবন নির্বাহ করা যায়। অনুরূপ সরকারি পোস্ট অফিস সমূহে যদি সুদের লেন-দেন করে আয় করে এবং তা হতে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদেরকে মাসিক বেতন প্রদান করা হয় তা সুদ হিসেবে পরিগণিত হবে। তবে তা পারিশ্রমিক হিসেবে গ্রহণ করে তা দ্বারা জীবন নির্বাহ জায়েয। অর্থাৎ উক্ত শাখা/বিভাগে চাকুরি করতে অসুবিধা নেই। তবে সুযোগ হলে ওই চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়া উচিত। যেহেতু এই সম্পর্কে সহি মুসলিম শরীফের (باب الربوا) ‘বাবুর রিবা’ অধ্যায়ে বর্ণিত হাদিসে বিশিষ্ট সাহাবী হযরত জাবের বিন আবদুল্লাহ্ আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন-
لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم اكل الربوا وموكله وكاتبه وشاهديه وقال هم سواء-
অর্থাৎ সরওয়ারে কায়েনাত হযরত রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সুদ ভক্ষণকারী আর অন্য জনকে সুদ খাওয়ার সুযোগ সৃষ্টিকারী, সুদী লেন-দেনের লেখক, সুদী কারবারের সাক্ষীদাতার উপর অভিশাপ-লানত দিয়েছেন এবং তিনি রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন ‘এরা প্রত্যেকেই গুনাহর মধ্যে এক সমান।
[সহি মুসলিম শরীফ- সুদের অধ্যায়, শরহে সহি মুসলিম কৃত: ইমাম নববী রহ. ও শরহে সহি মুসলিম কৃত: আল্লামা গোলাম রাসূল সাঈদী রহ. ইত্যাদি]