্উত্তর: নামায শেষে দুই হাত তুলে মুনাজাত করা তারপর মুখমণ্ডলে মসেহ করা নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের সুন্নাত। তদুপরি ফরয নামাযের সালাম ফিরানোর পর বা সাধারণভাবে নামাযের পর দুই হাত তুলে মুনাজাত করা মহান আল্লাহর নির্দেশ। যে কোন মুনাজাতে উভয় হাত উত্তোলন করা এবং দোয়া শেষে মুখমণ্ডলে মসেহ করা নবীজির সুন্নাত এবং উম্মতের প্রতি নবীজির নির্দেশ। নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ রকম করতেন না বলা মানে নবীজির উপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়া এবং তাঁর নির্দেশকে অমান্য ও অস্বীকার করার নামান্তর, যা অমুসলিমদেরই চরিত্র। যেমন মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেন- অর্থাৎ (হে প্রিয় হাবীব) যখন আপনি নামায থেকে অবসর হবেন তখন দোয়ার মধ্যে লেগে যান এবং আপনার প্রভুর দিকে মনোনিবেশ করুন। [সূরা ইনশেরাহ্]
এখন দেখতে হবে নামাযের পর যে দোয়া বা মুনাজাতের নির্দেশ আল্লাহ্ তা‘আলা প্রিয় নবীর মাধ্যমে আমাদেরকে দিয়েছেন তার পদ্ধতি কি রকম। পবিত্র হাদিস শরীফে নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নিজের উম্মতদেরকে তালিম দিয়েছেন। যেমন আবু দাউদ শরীফে উল্লেখ আছে -অর্থাৎ হযরত মালিক বিন ইয়াসির রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন যখন তোমরা আল্লাহর দরবারে দোয়া করবে তখন তোমাদের হাতের তালু উপরের দিকে করে দোয়া করবে হাতের পৃষ্ঠ দিয়ে নয় আর মুনাজাত থেকে অবসর হয়ে উভয় হাতের তালু তোমাদের চেহারাতে মসেহ করবে। তদুপরি মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বাতে উল্লেখ আছে- অর্থাৎ হযরত আসওয়াদ আমেরী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন তিনি বলেন আমি নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পেছনে ফজরের নামায পড়েছি। যখন তিনি ফজরের নামাযের সালাম ফিরালেন তখন ঘুরে বসলেন এবং উভয় হাত উপরের দিকে উঠিয়ে মুনাজাত করলেন। এভাবে ফোকহায়ে কেরাম ও নামাযের পর উভয় হাত উঠিয়ে মুনাজাতের পর চেহারায় মসেহ করার ফতোয়া দিয়েছেন। নুরুল ইজাহ্ কিতাবে ইমামত অধ্যায়ে উল্লেখ আছে- অর্থাৎ নামায শেষে হাত তুলে নিজেদের জন্য এবং সকল মুসলমানের জন্য দোয়া করবে। অতঃপর হাতদ্বয় দ্বারা নিজেদের চেহারা মসেহ করবে। সুতরাং ফরজ, সুন্নাত, ওয়াজিব, নফলসহ প্রত্যেক নামাযের শেষে দুয়া মুনাজাত করতঃ উভয় হাত চেহারায় মসেহ করা মুস্তাহাব ও উত্তম আমল। যা কোরআন হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এটা অস্বীকার করা পবিত্র কোরআন হাদিসকে অস্বীকার করার নামান্তর।
[সুনানে আবি দাউদ শরীফ ও মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা ইত্যাদি]