প্রশ্নোত্তরসংবাদ আমি হিন্দু পরিবারে কয়েকটি টিউশনি করি। এদের চা-নাস্তা খাওয়া যাবে কিনা? প্রকাশ করেছেন admin - Tue 18 Safar 1439AH 7-11-2017AD 0 মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন- চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম প্রশ্ন: আমি হিন্দু পরিবারে কয়েকটি টিউশনি করি। এরা আমার জন্য চা-নাস্তা আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন। প্রশ্ন হল- এদের চা-নাস্তা খাওয়া যাবে কিনা। যদি খাওয়া যায় তাহলে সৌজন্যবোধ রক্ষা করার জন্য কি কি খাওয়া যাবে। জানালে উপকার হবে। উত্তর: হিন্দু, বৌদ্ধ ইত্যাদি বিধর্মীর ঘরে চা নাস্তা খাওয়া শরীয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ নয়। তবে তা হালাল দ্রব্য হতে হবে। নাস্তা ও খাদ্য দ্রব্য যদি হালাল ও বৈধ বস্তু না হয় তখন উক্ত খাদ্য দ্রব্যকে গ্রহণ করা শরীয়ত সম্মত হবে না বরং তা গ্রহণ করা হারাম। বিধর্মীর কোন অনুষ্ঠানে মুসলমানদেরকে দাওয়াত করা হলে এবং উক্ত অনুষ্ঠানে হালাল পশু মুসলিম কর্তৃক যবেহ ও রান্না করা হলে তখন মুসলমানদের উক্ত অনুষ্ঠানে যোগদান করা এবং আয়োজিত খাবার গ্রহণ করতে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন অসুবিধা নেই আর হালাল পশু ইত্যাদি যদি মুসলিম কর্তৃক আল্লাহর নামে যবেহ না হয় তবে উক্ত খাবার গ্রহণ করা মুসলমানের জন্য বৈধ হবে না। অবশ্যই বিধর্মীদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি থেকে মুসলমান বিরত থাকবে এবং বিধর্মীদের খানা পিনা থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়। এটা তকওয়ার দাবী। প্রশ্ন: বর্তমান সরকার নারী নীতিমালায় পৈত্রিক সম্পত্তিতে নারীর যে সমঅধিকারের কথা বলছে সেটা কতটুকু কোরআন-হাদীসসম্মত। মুসলিম আইনে, পিতা ও স্বামীর সম্পত্তিতে নারীর যে অধিকার দেওয়া হয়েছে সেটা যে কোন প্রেক্ষাপটে যথার্থ। এ সম্পর্কে আলোচনা করার জন্য অনুরোধ রইল। উত্তর: বর্তমান সরকার নারী নীতিমালায় পৈত্রিক সম্পত্তিতে নারীর সম অধিকারের কথা বলেছে যা নিয়ে কিছুদিন পূর্বে সারা দেশে বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছিল- তবে নারীর সম অধিকারের মর্মার্থ যদি এভাবে করা হয় যে, পিতার মৃত্যুর পর পিতার পরিত্যাক্ত সম্পত্তিতে ছেলেদেরও অধিকার আছে মেয়েদেরও অধিকার স্বীকৃত আছে তা সহীহ ও বিশুদ্ধ। আর যদি নারীর সম-অধিকারের কথা বলে এটা বলতে চায় যে পিতার পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে ছেলে ও মেয়ে এক সমান তর্কা পাবে, ছেলে বেশী আর মেয়ে তার অর্ধেক এটা হবে না। বা এ কথা বলা বা উক্তি করা পবিত্র কোরআন ও সুন্নাহর সাথে প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া এবং কোরআন-সুন্নাহকে অবমাননা করা, যা কোন ঈমানদারের চরিত্র হতে পারে না বরং বেঈমানীর নামান্তর। স্বয়ং রাব্বুল আলামীন সূরা নিসায় বর্ণনা করেছেন যে, পিতা ও মাতার মৃত্যুর পর তাঁদের পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে মেয়ে পাবে ছেলের অর্ধেক। এখানে একটি যুক্তিও আছে আর তা হল- সাধারণত মেয়ে বড় হয়ে বিবাহের পর স্বীয় স্বামীর ঘরে চলে যায় আর সাধারণভাবে ছেলেও বড় হওয়ার পর পিতার সব কিছু সংরক্ষণ করতে হয় এবং মা-বাবার খেদমতও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাকে (ছেলেকে) আনজাম দিতে হয়। উল্লেখ্য যে, ইসলামের পূর্বে তথা জাহেলী যুগে পিতা ও স্বামীর পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে নারী, মেয়ে ও স্ত্রীর কোন অধিকার সংরক্ষিত ছিল না বরং পিতা ও স্বামীর মৃত্যুর পর নারী সমাজের জন্য বোঝা হয়ে ঘৃণ্য, নিষ্পেষিত ও করুণ অবস্থায় নারীকে জীবন-যাপন করতে হত। কোথাও তার জন্য ঠাঁই ছিল না, ইসলাম নারীকে সম্মান ও ইজ্জতের আসনে আসীন করে পিতা ও স্বামীর পরিত্যাক্ত সম্পত্তিতে নারীর অধিকার সম্মানের সাথে সাব্যস্ত করেছে। আল-কোরআনের সূরা নেসার তাফসির ও হাদিসের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থসমূহের ফরায়েজ অধ্যায়ে এসব বিষয় গুরুত্ব সহকারে আলোকপাত করা হয়েছে। কোরআন-সুন্নাহর সম্পর্কে যারা অজ্ঞ একমাত্র তারাই বলতে পারে ইসলামে নারীর অধিকার যথাযথ সংরক্ষণ করা হয় নাই। তাদেরকে কোরআন-সুন্নাহ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জনের অনুরোধ রইল। শেয়ার