ঈদ-ই মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম পালিত হবে আগামী ২ ডিসেম্বর

0
 ধর্ম সচিব আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে রোববার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠকে ঈদ-ই মিলাদুন্নবির তারিখ নির্ধারণ হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্ম-সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. হাফিজুর রহমান, তথ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (প্রেস) মো. মিজান-উল-আলম, অতিরিক্ত প্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী, আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আবদুর রহমান, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রমুখ সভায় উপস্থিত ছিলেন।  [সূত্র. ইন্টারন্যাট]
===============

১২ রবিউল আউয়াল হচ্ছে ‘পবিত্র মিলাদ’-এর দিন
সত্যের মাপকাঠি সাহাবা কেরাম থেকে বিশুদ্ধরূপে বর্ণিত হয়েছে, ১২ রবিউল আউয়াল শরীফ বিশ্বনবী হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘য়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র বেলাদতেরই দিন। যেমন হাফেয আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ্ (ওফাত ২৩৫হিজরি) সহীহ্ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন-
عَنْ عَفَّانٍ عَنْ سَعِیْدِبْنِ مِیْنَا عَنْ جَابِرٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ اَنَّہُمَا قَالاَ وُلِدَ رَسُوْلُ اللّٰہِ صَلَّی اللّٰہُ عَلَیْہِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِیْلِ یَوْمَ الْاِثْنَیْنِ الثَّانِیْ عَشَرَ مِنْ شَہْرِ رَبِیْعِ الْاَوَّلِ
অর্থাৎ হযরত আফ্ফান থেকে বর্ণিত, তিনি হযরত সা‘ঈদ ইবনে মীনা থেকে বর্ণনা করেছেন, হযরত জাবের ও হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা বলেন, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বেলাদত শরীফ ঐতিহাসিক ‘হস্তি বাহিনী বর্ষের’ (যে বছর আবরাহা তার হস্তিবাহিনী নিয়ে কা’বা শরীফ ধবংস করতে এসে নিজে ধবংসপ্রাপ্ত হয়েছিলো) ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার হয়েছিলো।
[সূত্র: ‘বুলূগুল আমানী ফী শরহিল ফাত্তিহর রব্বানী’ঃ ২য় খণ্ডঃ ১৮৯ পৃ. বৈরুতে মুদ্রিত এবং ‘আল-বিদায়াহ্ ওয়ান্ নিহায়াহ্’ঃ ২য় খণ্ডঃ ২৬০ পৃ. বৈরুতে মুদ্রিত ]

উক্ত বর্ণনার ‘সনদ’-এর মধ্যে প্রথম বর্ণনাকারী হযরত আফ্ফান সম্পর্কে মুহাদ্দিসগণ বলেছেন, ‘‘আফ্ফান একজন উচ্চ পর্যায়ের নির্ভরযোগ্য ইমাম, প্রবল স্মরণশক্তি ও দৃঢ় প্রত্যয়সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব।’’ [সূত্র: খোলাসাতুত্ তাহ্যীব’ ২৬৮পৃ. বৈরুত মুদ্রিত]

‘‘২য় বর্ণনাকারী সা‘ঈদ ইবনে মীনা। তিনিও অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য।’’ [সূত্র: খোলাসাহ্ঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা এবং ‘তাক্বরীব’ ১২৬ পৃ.]

এ দু’জন উচ্চ পর্যায়ের ফক্বীহ্ সাহাবীর বিশুদ্ধ সনদসহকারে বর্ণনা থেকে প্রমাণিত হলো, ১২ রবিউল আউয়াল হচ্ছে হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পবিত্র ‘মিলাদ দিবস’। সুতরাং পরবর্তী যুগগুলোর কোন ইতিহাস লেখকের ভিন্নকথা এবং ধারণা বা অনুমান উক্ত বিশুদ্ধ বর্ণনার মোকাবেলায় দৃষ্টিপাতযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

অতএব, হযরত যোবায়র ইবনে বাক্কার, ইমাম ইবনুল আসাকির, ইমাম জামাল উদ্দীন ইবনে জূযী এবং ইবনুল জায্যার প্রমুখ ১২ রবিউল আউয়াল ‘বিশ্বনবীর মিলাদ দিবস’ হওয়াই নির্ভরযোগ্য ও সেটার উপর গবেষক ইমামদের ‘ইজমা’ (ঐকমত্য) প্রতিষ্ঠিত হবার কথা ঘোষণা করেছেন।
[সুত্র: ‘সীরাত-ই হালবিয়াহঃ ১ম খণ্ডঃ ৯৩ পৃ, যারক্বানী আলাল মাওয়াহিবঃ ১ম খণ্ডঃ ১৩২ পৃ, ‘মা-সাবাতা মিনাস্ সুন্নাহ্, কৃত. শায়খ আল-মুহাক্বক্বিক্ব দেহলভীঃ ৯৮পৃ, ‘শামামাহ্-ই আম্বরিয়াহ্’ পৃ. -৭, কৃত. নাওয়াব সিদ্দীক্ব হাসান খান ভূপালী আহলে হাদীস] ‘‘আর এটাই হচ্ছে প্রায় সব ওলামা ও মুসলমানের অনুসৃত পথ ও মত। এটাই তাঁদের মধ্যে প্রসিদ্ধ।’’
[সূত্রঃ ‘আল-বিদায়া’ঃ ২য় খণ্ডঃ ২৬০ পৃ, ‘আল-ফত্হুর রব্বানী’ঃ ২য় খণ্ডঃ ১৮৯ পৃ, আল-মাওরেদ আর-রাভী; কৃত. মোল্লা আল-ক্বারীঃ পৃ. ৯৬, মক্কা মুকাররামায় মুদ্রিত, ‘হাজ্জাতুল্লাহি আলাল্ আলামীন’, কৃত. আল্লামা নাবহানীঃ প্রথম খণ্ড ৭৩১ পৃ, ‘মা-সাবাতা মিনাস্ সুন্নাহ্’ ৯৮ পৃষ্ঠা, ‘আল-মাওয়াহিব-আল-লাদুন্নিয়াহ’, কৃত. ইমাম ক্বাস্তলানী এবং এর ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘যারক্বানী’ঃ ১ম খণ্ডঃ ১৩২পৃ. ‘মাদারিজুন্নবূয়ত’, ২য় খণ্ড ১৪পৃ.]

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •