হযরত আবদুল কাদির জিলানী রহমাতুল্লাহি আলায়হিকে গাউসে আযম বলা যাবে কিনা?

0

প্রশ্ন: বড়পীর হযরত আবদুল কাদির জিলানী রহমাতুল্লাহি আলায়হিকে গাউসে আযম বলা যাবে কিনা? একজন মওলভী সাহেব বললো, আল্লাহ্ তা‘আলাই একমাত্র গাউসে আযম। বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।

উত্তর: আউলিয়ায়ে কেরামের স্তর সমূহের মধ্যে একটি স্তরের নাম গাউসুল আযম। যার অর্থ মহান সাহায্যকারী। এটা আল্লাহর গুণবাচক নামসমূহের অন্তর্ভুক্ত নয়। ক্বোরআনুল করিম ও হাদিস শরীফের কোথাও প্রমাণ নেই যে, এটা আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট, আর আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো জন্য এটা ব্যবহৃত হতে পারবে না ব্যবহার করা যাবে না রবং এটা আল্লাহর অলির গুণবাচক নাম। হুযূর পীরানেপীর গাউসে পাকের উপাধি সমূহের মধ্যে একটি উপাধি গাউসে আযম, স্বয়ং রাব্বুল আলামীন ইলহামের মাধ্যমে এ নামে হুযুর গাউসে পাককে আহ্বান করেছেন। যেমন হুযূর গাউসে পাকের রচিত কিতাব রেসালায়ে গাউসুল আযম তার প্রমাণ। উক্ত কিতাবে দেখা যায় যখনই আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে কোন বিষয়ে ইলহামের মাধ্যমে আহ্বান করেছেন তখনই এরশাদ করেছেন ইয়া গাউসাল আযম।

ক্বোরআন শরীফে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন-
ولله الاسماء الحسنى فاعوا بها الاية – (اعراف-১৮০)
অর্থাৎ আল্লাহর বহু সুন্দর গুণবাচক নাম আছে সেই নামেই তাঁকে আহ্বান কর। [সূরা আরাফ: আয়াত১৮] উক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় হাদিস শরীফে উল্লেখ আছে হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত- নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তা‘আলার ৯৯টি নামগুলোর মধ্যে গাউসুল আযম নামটির উল্লেখ নেই। সুতরাং এটা আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট আর কারো জন্য ব্যবহৃত হতে পারে না বলা মুর্খতা ও অজ্ঞতা। হুযূর গাউসে পাক বড়পীর সৈয়্যদুনা আবদুল কাদের জিলানীকে গাউসুল আযম বলা বা তাঁর বরকতমণ্ডিত নামের সাথে উক্ত উপাধি ব্যবহার করা ইসলামী শরীয়ত সম্মত। তবে যে কেউ গাউসুল আযম দাবী করতে পারে না। কারণ এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্য থেকে বিশেষ নির্দিষ্ট বান্দার উপাধি আউলিয়ায়ে কেরাকমের মধ্যে এটা সর্বোচ্চ উপাধি। এই পদবীর জন্য বিশেষ গুণাবলী ও যোগ্যতা আবশ্যকীয়। যোগ্যতা ব্যতীত গাউসে আযম উপাধি প্রয়োগ করা মূলত দ্বীনের ও জাতির সাথে ভন্ডামি/প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। সৈয়্যদুনা ইমাম মাহদী আলায়হিস্ সালাম আগমনের পূর্ব পর্যন্ত পীরানে পীর শেখ আবদুল কাদের জিলানী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু আল্লাহ্ প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতা বলে গাউসুল আযম পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন। যা ইমাম আহমদ রেযা আ’লা হযরত রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। আল্লাহ্ প্রদত্ত বিশেষ ক্ষমতা বলে আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর সৃষ্টিজগত ও মাখলুকাতের প্রতি দয়া ও সাহায্য প্রদানকারী নির্ধারিত বিশেষ ব্যক্তি, অলি, গাউস, কুতুব ও আবদালের মধ্যে সর্বোচ্চ ডিগ্রী গাউসুল আযম। যা সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা যে কোন প্রকৃত হক্কানী আল্লাহর অলিও এ উপাধি নিজের জন্য ব্যবহার করেনি। এ বিষয়ে তরজুমান প্রশ্নত্তোর বিভাগে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

[জামিয়ূ কারামাতিল আউলিয়া কৃত: আল্লামা ইউসূফ নিবহানী রাহ., মাজহারে জামালে মোস্তফায়ী কৃত: সৈয়্যদ নাছির উদ্দীন রাহ. ও তাফরিহুল খাতিরীল ফাতির ফি মানাকিবে আশ্ শায়খ আবদুল কাদির কৃত: হযরত মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রাহ. ইত্যাদি]

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •