মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, স্বর্ণা ভিলা, বাকলিয়া, চট্টগ্রাম
প্রশ্নঃ জনৈক লোক বলেছেন, খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, দ ‘আ-মুনাজাত ইত্যাদি করে টাকা নেয়া ভিক্ষার ন্যায়। এর কোন প্রমাণ কোরআন-হাদীসে নেই। সুতরাং এই পন্থায় জীবিকা নির্বাহ করা হারাম। অথচ সুন্নী আক্বীদায় এটা হালাল। তাই উপরোক্ত বিষয়ের উপর কোরআন এবং হাদীসের মূল ইবারতসহ আলোচনার অনুরোধ করছি।
উত্তরঃ খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল, ইমামতি ইত্যাদি সৎকাজ করে টাকা নেয়া ইসলামী শরীয়তে জায়েয। তবে পূর্ববর্তী ফক্বীহ্গণের মতে এটাকে না বলা হয়েছে, কিন্তু বর্তমান যুগের অবস্থার প্রেক্ষিতে তা জায়েয। কারণ, পূর্ববর্তী আলেম উলামাদের জন্য সরকার কর্তৃক নির্দিষ্ট ভাতা, সম্মানী, জায়গীর ইত্যাদি নির্ধারণ করা হত। ফলে, জীবিকা নির্বাহের জন্য তাঁদেরকে ওয়াজ-নসিহত, ইমামত, খেতাবত, দরস-তাদরীস ইত্যাদির বিনিময়ে হাদিয়া বা বেতন নেয়ার প্রতি তাঁরা মোটেই মুখাপেক্ষী ছিলেন না এবং তাঁদের জন্য প্রয়োজনও ছিল না।
কিন্তু বর্তমানে বিশেষতঃ আমাদের দেশে আলেম-উলামাদের জন্য সরকার কর্তৃক সে রকম কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই, পরবর্তী মুফতীগণ অবস্থার চাহিদার প্রেক্ষিতে কোরআন পড়ে, মিলাদ মাহফিল, ওয়াজ-নসিহত ও ইমামত ইত্যাদি সৎকাজ করে বেতন বা হাদিয়া গ্রহণ করাকে জায়েয বলে ফতোয়া দিয়েছেন। শুধু তা নয়, এক সাহাবী সূরা ফাতেহা পড়ে দম করে এর বিনিময়ে হাদিয়া স্বরূপ ছাগল/বকরি ইত্যাদি গ্রহণ করেছেন মর্মে হাদীস শরীফ তথা ছহি বোখারীতে বর্ণিত আছে।
সুতরাং, শরীয়তের কোন প্রামাণ্য দলীল ছাড়া একে ভিক্ষা বা হারাম মনে করা জঘন্য অপরাধ এবং সীমালঙ্ঘণের নামান্তর। [সহীহ বুখারী, সুনানে ইবনে মাজাহ, আহকামুল কোরআন, হেদায়া,
ফাতহুল ক্বদীর এবং কিতাবুল আশবাহ্ ওয়ান্ নাজায়ের ১ম খণ্ড ইত্যাদি।]