আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবিব যে কাজে সন্তুষ্ট

0

আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবিব যে কাজে সন্তুষ্ট

মাওলানা মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান হাবিবী

ওয়াদা পালন করা
আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তুষ্ট হয়, এমন কাজের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ওয়াদা পালন করা। প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য ওয়াদা রক্ষা করা অতীব জরুরী। কেননা ওয়াদা রক্ষা করা মুমিনদের ঈমানের পরিচায়ক। ওয়াদা বাস্তবায়ন করা স্বয়ং আল্লাহ তা’আলার একটি অবিচ্চেদ্য গুণ। এ ব্যাপারে কালামুল্লাহ শরীফে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন- নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা ওয়াদা ভঙ্গ করেন না। হাদিসে পাকের মধ্যেও ওয়াদা রক্ষা করার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। আমাদের আকা ও মওলা হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদা সর্বদা ওয়াদা রক্ষা করতেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু হাসমা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে আমি তাঁর কাছ থেকে কোন কিছু ক্রয় করেছিলাম। যার কিছু মূল্য আদায় করা আমার উপর বাকি রয়ে গিয়েছিল। আমি তাঁকে বললাম, বাকি টাকা আমি এ স্থানে নিয়ে আসব। কিন্তু আমি সে ওয়াদার কথা কেন জানি ভুলে গেলাম। তিন দিন পর এ কথা স্মরণ হওয়ার সাথে সাথে আমি ওই স্থানে এসে দেখলাম, তিনি সেখানেই আমার জন্য অপেক্ষমান রয়েছেন। তখন তিনি শুধু আমাকে এতটুকু বললেন, তুমি তো আমাকে খুবই কষ্টে ফেলে দিয়েছিলে। আমি তিন দিন পর্যন্ত তোমার জন্য এখানে অপেক্ষা করছি। [আবু দাউদ শরীফ]

সুবহানাল্লাহ, দেখুন! এই হচ্ছে আমাদের প্রিয় নবী হুযুর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুপম আদর্শের নমুনা। আমরা যদি আমাদের জীবনকে নবীর আদর্শের উপর পরিচালিত করতে পারি; তাহলে আমাদের পরিবার, সমাজ-সংসার কখনো কলুষিত ও বিশৃঙ্খল হবে না। উক্ত বিষয়ে আরো একটি হাদিস শরীফ পেশ করা যেতে পারে।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমের রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমার মা আমাকে ডাকলেন। তখন নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ঘরে বসা ছিলেন। আমার মা আমাকে বললেন, এদিকে এসো। আমি তোমাকে একটি জিনিস দেব। তখন রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পক্ষ থেকে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে কি দিতে চাচ্ছ। আমার মা বললেন, আমি তাকে একটি খেজুর দিতে চাচ্ছি। তখন নবীজি তাকে বললেন, জেনে রেখ! এরূপ নিয়ত করে যদি তুমি তাকে না দিতে; তবে তোমার আমল নামায় মিথ্যা গুনাহ লিখা হতো। [আবু দাউদ শরীফ]

উপরোক্ত হাদিসের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে, বিশ্ব বিখ্যাত বিশুদ্ধ হাদিসের কিতাব ছহীহ বুখারী শরীফের প্রণেতা হযরত আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ বিন ইসমাঈল বুখারী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু। তিনি একদা অর্থাভাবে তাঁর একটি চৌকি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিলেন। একজন গ্রাহক এসে চৌকির দাম হাঁকালেন পাঁচশত দিরহাম। ইমাম বুখারী বললেন, চৌকি হিসেবে মূল্য তো কম হচ্ছে আর একটু বাড়িয়ে দিন। কিন্তু গ্রাহক দাম আর না বাড়িয়ে চলে গেলেন। রাত্রে ইমাম বুখারী মনে মনে ভাবলেন অর্থের তো খুব দরকার, দাম কম হলেও সকালে ডেকে তাকে দিয়ে দিব। সকাল হতে না হতে আর একজন গ্রাহক এসে চৌকিটা দেখে দাম হাঁকালেন এক হাজার দিরহাম। তার মানে পূর্বের দিনের গ্রাহকের চেয়ে দ্বিগুণ দাম। কিন্তু ইমাম বুখারী বললেন, ভাই! চৌকিটাতো আপনার কাছে বিক্রি করতে পরব না। গ্রাহক বললেন কেন? তিনি বললেন, গতকাল একজন এসে এটার দাম দিয়েছিল পাঁচশত দিরহাম। দাম কম হওয়াতে আমি তাকে দিই নাই। তবে রাত্রে আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার কাছে চৌকিটা বিক্রি করব। গ্রাহক বললেন, আপনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটা তো ঐ ব্যক্তি জানে না। আর আমি দ্বিগুণ দাম দিচ্ছ্ িসুতরাং আমাকে দিয়ে দিন। ইমাম বুখারী বললেন, ঐ ব্যক্তি না জানলেও আমার আল্লাহ তো জানেন। অতএব, দাম কম হলেও আমি ঐ ব্যক্তির কাছেই বিক্রি করবো। দেখুন! ওয়াদা কাকে বলে; মনে মনে স্থির করেছেন আর সেটা বাস্তবায়ন করেছেন। এজন্যই তো আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে এত উঁচু মকাম দান করেছেন। তাদের পদাঙ্ক অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে ইহকালিন শান্তি ও পরকালিন মুক্তি।

রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর সাহাবায়ে কেরামও ওয়াদা রক্ষার প্রতি জোর তাগিদ দিয়েছেন। হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলে ইসলামের প্রথম খলীফা হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বললেন, নবী-এ দো জাঁহা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর কারো ঋণ অর্থাৎ কোন কিছু পাওনা থাকলে অথবা কারো সাথে তাঁর পক্ষ থেকে কোন প্রতিশ্রুতি থাকলে তারা যেন আমাকে বলেন, হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বললেন, তখন আমি বললাম। রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, আমাকে এতগুলো এতগুলো এতগুলো দান করবেন। অর্থাৎ তিনি তিন বার তাঁর হস্তদ্বয় প্রসারিত করেছিলেন। হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, অতঃপর হযরত আবু বকর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু আমাকে এক কোষ দিলেন। আমি গুণে দেখলাম, সেখানে পাঁচশত দিরহাম রয়েছে। তখন তিনি বললেন, এ পরিমাণ আরো দু’বার নাও। [বুখারী ও মুসলিম শরীফ]

এছাড়া রাসুলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘোষণা মতে, মুনাফিকদের তিনটি নিদর্শনের মধ্যে প্রধান নিদর্শন হচ্ছে; ওয়াদা ভঙ্গ করা। পক্ষান্তরে মুমিন মুসলমানগণ আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গুণে গুণান্বিত হয়ে সর্বদা ওয়াদা রক্ষা করার চেষ্টা করে। আর যদি চেষ্টা করেও ওয়াদা রক্ষা করা না যায় তাহলে গুনাহ হবে না। এ বিষয়ে একটি হাদীস শরীফ প্রনিধান যোগ্য। হযরত যাযেদ বিন আরকাম রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হুযুর আকদাস সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন কোন ব্যক্তি তার কোন মুসলমান ভাইকে কোন ব্যাপারে ওয়াদা দেয় এবং এরুপ নিয়্যত রাখে যে, সে তা পূরণ করবে; কিন্তু পরে কোন ঘটনাক্রমে সে তা পূরণ করতে পারেনি। এতে তার কোন গুনাহ হবে না। [আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফ]

উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে একথা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, ওয়াদা তথা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা মুমিন জীবনে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাই জীবনের সর্বক্ষেত্রে কথা দিয়ে কথা রক্ষা করা অর্থাৎ ওয়াদা পালন করা ইসলামী বিধান মতে অতীব গুরুত্ববহ।
অতএব, আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে ওয়াদা পূরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন!

লজ্জাশীলতা অবলম্বন করা
হায়া আরবী শব্দ যার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে পরিবর্তন, ন¤্রতা, ভদ্রতা ইত্যাদি। যা লজ্জাশীল অর্থে ব্যবহৃত হয়। লজ্জা ঈমানের ভূষণ। আল্লাহ তা’আলার প্রিয় মাহবুব হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়তের জবানে ঘোষণা করেন- আল হায়াউ শু’বাতুম মিনাল ঈমান অর্থাৎ লজ্জাশীলতা ঈমানের অঙ্গ। মানুষ যেমন দেহের কোন একটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছাড়া পরিপূর্ণতা লাভ করতে পারে না; ঠিক তেমনিভাবে লজ্জা ছাড়া ঈমানও পরিপূর্ণ হবে না। কারণ যার কাছে লজ্জা থাকে না, সে সব কিছুই করতে পারে। ভাল-মন্দের বিচার-বিবেচনার তোয়াক্কা করে না। এজন্যইতো নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- ইজা ফাতাল হায়াউ ফাফআল মাশিতা অর্থাৎ যখন লজ্জাশীলতা দূরীভূত হয়ে যায় তখন যা ইচ্ছা তা করতে পার। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তির কাছে লজ্জাশীলতা রয়েছে, সে যে কোন কাজ করার আগে নিজের বিবেক দিয়ে চিন্তা করবে; কাজটা কি ভাল না মন্দ। কেননা লজ্জাশীলতা এমন একটি মানবিকগুণ যা মানুষকে বিনয়ী করে। সৎ ও সুশৃঙ্খলভাবে জীবন যাপন করতে সহায়তা করে। ভাল ও ন্যায় কাজ করতে এবং মন্দ ও অন্যায় কাজ থেকে দূরে থাকতে উৎসাহিত করে। যারা লজ্জাশীলতার অধিকারী, তারা বেপর্দা ও নির্লজ্জতা থেকে সদা সর্বদা নিজেদেরকে নিরাপদ রাখার চেষ্টা করে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসার ব্যক্তির কাছে গেলেন। ওই ব্যক্তি তখন তার ভাইকে লজ্জাশীলতা সম্পর্কে উপদেশ দিচ্ছিলেন, তখন হুযুর করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে ছেড়ে দাও, কেননা লজ্জাশীলতা ঈমানের অন্তর্ভূক্ত। [বুখারী ও মুসলিম শরীফ]

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত অপর হাদিসে নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, সাবধান! তোমরা উলঙ্গ হওয়া থেকে বিরত থাক। কারণ তোমাদের সাথে এমন সৃষ্টি (ফেরেশতা) রয়েছেন, যারা পায়খানা-প্র¯্রাব ও স্ত্রী সহবাসের সময় ছাড়া কখনো তোমাদের সঙ্গ ত্যাগ করেন না। অতএব, তাদের কারণে লজ্জাবোধ এবং তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন কর। [তিরমিযী শরীফ] হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আরয করা হলো- কোন আমল সবচেয়ে বেশী মানুষকে বেহেশতে প্রবেশ করাবে তথা জান্নাতী বানাবে? উত্তরে তিনি ফরমালেন, তা হলো খোদাভীতি ও সৎ চরিত্রতা। নবীজির কাছে আবারো আরয করা হলো- কোন আমল সবচেয়ে বেশী মানুষকে দোযখে প্রবেশ করাবে অর্থাৎ জাহান্নামী বানাবে? তিনি উত্তরে বললেন, রসনা ও লজ্জাস্থান। [তিরমিযী শরীফ]

হযরত জুনাইদ বাগদাদী রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন, আল্লাহ তা’আলার অগণিত নেআমত ভোগ করে এবং নিজের দোষ ত্রুটি দেখে নিজের স্বভাবের মধ্যে যে অবস্থা সৃষ্টি হয় তাকে হায়া বা লজ্জাশীলতা বলে।
হাদিসে পাকের মধ্যে লজ্জাশীলতাকে বিশেষভাবে উল্লেখ করার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। তম্মধ্যে কয়েকটি পাঠক সমাজে উপস্থাপন করছিঃ
ক) হায়া বা লজ্জাশীলতা সৃষ্টিগত ও অভ্যাসগত ব্যাপার। সেহেতু বিশেষভাবে এর উল্লেখ করা হয়েছে।
খ) হায়া যেহেতু অভ্যাসগতভাবে সৎ কর্মে উৎসাহ দানকারী এবং অসৎ কর্মে বাঁধা প্রদানকারী। তাই বিশেষভাবে এর উল্লেখ করা হয়েছে।
গ) হায়া বা লজ্জাশীলতা হচ্ছে ঈমানের স্থলাভিষিক্ত। আর এটা এ জন্য যে, লজ্জা ঈমানের মত মানুষকে সকল প্রকার পাপ কাজ থেকে মুক্ত রাখে। তাই বিশেষভাবে এর উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘ) ঈমানের পরিপূর্ণতার জন্য হায়া বা লজ্জা অত্যাবশ্যক। তাই পরিপূর্ণ মুমিন হওয়ার জন্য তাগিদ প্রদান করতে গিয়ে লজ্জাশীলতাকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঙ) লজ্জা না থাকলে মানুষের চোখের পর্দাও উঠে যায়। তখন হালাল-হারামের পার্থক্য অনুধাবন করতে পারে না। আর হালাল-হারামের চিহ্ন না থাকলে ধর্মের কোন মূল্যও থাকে না। তাই ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগ্রত করার জন্য লজ্জাশীলতাকে বিশেষ উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়াও আরো অনেক কারণে ইসলামে লজ্জাশীলতার গুরুত্ব অপরিসীম। এক কথায় বলতে গেলে খোদাভীতির অপর নাম লজ্জাশীলতা। যার কাছে লজ্জা আছে তার কাছে ধর্ম-কর্ম সবই আছে। আর যার কাছে লজ্জা নেই তার কাছে নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছুই নেই। কারণ লজ্জাশীল ব্যক্তি কখনো বেপরোয়া হওয়ার স্পর্ধা পোষণ করে না। ¯্রষ্টার প্রতি সব সময় কৃতজ্ঞ থাকে এবং অকৃতজ্ঞ হওয়ার ধৃষ্টতা প্রদর্শন করে না। লজ্জাশীলতা মানুষকে ন¤্র-ভদ্র, বিনয় ও সুন্দর আচরনের প্রতি উদ্ভুদ্ধ করে। আল্লাহর প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ পাক বিনয়ী, তিনি বিনয়কে পছন্দ করেন। বিনয়ের কারণে তিনি রুক্ষতা বা অন্য কিছু দান করেন না। তিনি আরো ফরমান, যে ন¤্রতা থেকে বঞ্চিত সে সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। [ছহীহ মুসলিম শরীফ]

উপরোক্ত হাদিস শরীফ আমাদেরকে এই বিষয়ের প্রতি ইংগিত দেয় যে, আল্লাহ তা’আলার দয়া তথা কল্যাণ চাইলে অবশ্যই ন¤্র এবং বিনয়ী হতে হবে আর ন¤্র এবং বিনয়ী হওয়ার জন্য লজ্জাশীলতার কোন বিকল্প নেই। সুতরাং আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় হাবিব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নৈকট ও করুণা হাসিলের জন্য লজ্জাশীলতার প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। পরিশেষে আল্লাহ তা’আলার দরবারে ফরিয়াদ জানাই, তিনি যেন আমাদের সকলকে লজ্জাশীলতা অবলম্বন করে পরিপূর্ণ মুমিন-মুত্তাকী হওয়ার তাওফিক দান করেন। আমিন! বেহুরমতে ইমামিল আম্বিয়ায়ে ওয়াল মুরসালিন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। (চলবে)

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •