সম্পাদকীয়===
বিশ্বের একজন মহাজ্ঞানী ও বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ইসলামী শরীয়ত তথা ইসলামের শাখায় প্রজ্ঞাশীল, যৌক্তিক সমাধানের এক অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, গবেষক চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ১২৭২ হিজরীর ১০ শাওয়াল (১৪ জুন ১৮৫৬ খ্রিস্টাব্দ) ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরলী শহরে শুভাগমন করেন। ইসলামের মূল ধারা (আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত) বিকৃত করে মনগড়া ব্যাখ্যা প্রদান পূর্বক বিশেষ করে ওহাবী গোষ্ঠী যখন সরল প্রাণ মুসলমানদের ঈমান হারা করার একচ্ছত্র প্রচারনামুখর, ঠিক সে সময়েই আল্লাহ্ জাল্লাশানহুর পক্ষ হতে অসধারণ জ্ঞানে জ্ঞানী, লেখক, গবেষক, নবী কদমে অবস্থানকারী এক অনন্য প্রতিভার ভাস্মর আ’লা হযরত’র ক্ষুরধার লেখনী যৌক্তিক বিশ্লেষণধর্মী (ক্বোরআন-সুন্নাহ্ আলোকে) বক্তব্য আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’র গ্রহণযোগতা এবং এ দলই একমাত্র জান্নাতী দল সে বিষয়ে উপমহাদেশ তথা বিশ্বব্যাপী এক ইতিবাচক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। নবী অলী প্রেমিক মুসলিম জনতা কালো মেঘে ঢাকা আকাশে অত্যুজ্জ্বল নক্ষত্র প্রত্যক্ষ করে ঈমানী যুদ্ধের জন্য তৎপর হয়। পবিত্র ক্বোরআন সুন্নাহ্, ফিক্হ, মানতেক সহ ইসলামের সকল শাখা-প্রশাখায় তিনি বিচরণ করে সত্য উদঘাটিত করেন।
লেখনী ও বক্তব্যে সমান পারদর্শী দুর্লভ ব্যত্তিত্ব আ’লা হযরত এর অবদান এখনো অম্লান, অপ্রতিরোধ্য। রোজ কিয়ামত অবধি এর ধারাবাহিকতা ও কার্যকারিতা অক্ষুন্ন থাকবে ইনশাআল্লাহ। এ মহান মনীষীর সে সময়ে আবির্ভাব না হলে আমাদের মতো কোটি কোটি মুসলমান দিশেহারা হয়ে ওহাবী ধারার পঙ্খিলতায় ডুবে যেতাম। প্রাণহীন জড়োপদার্থের মতো আমরাও হয়ে যেতাম অস্তিত্ব ও ঈমান সংকটে। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এ মহান মনীষীকে পাঠিয়ে আমাদের ঈমান-আক্বীদা রক্ষা করেছেন, বেঁচে থাকার সাহস যুগিয়েছেন, সত্যকে ধারণ ও লালন করার পথ নির্দেশনা দিয়েছেন। তাই সৃষ্টিকর্তার নিকট লক্ষ কোটিগুণ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি। সাথে সাথে দোঁ’জাহানের সর্দার সাইয়্যেদুল মুরসালিন শাফায়াতকারী প্রিয় নবী রাহমাতুল্লিল আলামীনের কদমে কোটিগুণ সালাম ও শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে শুকরিয়া আদায় করছি।
মসলকে আ’লা হযরত’এর নীতি-আদর্শভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার প্রতিষ্ঠাতা আওলাদে রসূল কুতুবুল আউলিয়া হযরতুল আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ও পৃষ্ঠপোষক হাদীয়ে দ্বীনো মিল্লাত গাউসে জমান হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয্যব শাহ্ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি এবং গাউসে জমান সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মুু.জি.আ.)’র নেতৃত্বে ও পরিচালনায় আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট’র উদ্যোগে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ‘মসলকে আ’লা হযরত’র চর্চা ও প্রচার অব্যাহত রয়েছে। আল্লাহ্ জাল্লাশানুহুর কৃপায় ও প্রিয়নবী রাহমাতুল্লিল আলামীনের নেগাহে করমে আওলাদে রসূলগণের প্রতিষ্ঠিত ও পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত আনজুমান ট্রাস্ট সমগ্র বিশ্বে ‘মসলকে আ’লা হযরত’র প্রচার-প্রসারে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে যার মাধ্যমে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’র অবস্থান সুদৃঢ় হয় এবং নবী অলী প্রেমিকদের মনে সাহস সঞ্চারিত হয়। বাতিলের বিরুদ্ধে ‘হক’র জয় অবশ্যম্ভাবী ইনশাআল্লাহ। আমরা তথা সুন্নী মুসলমান মহান মুজাদ্দেদ-এর নিকট ঋণী ও কৃতজ্ঞ। আল্লাহ্পাক আ’লা হযরত’র দরজা বুলন্দ করুন। তার উত্তোলিত পতাকা বহন করার শক্তি দিন। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এ মহান সংস্কারক-এর শতবার্ষিকী ওফাত দিবসে বিন¤্র শ্রদ্ধাজ্ঞাপন পূর্বক উচ্চতর মকাম প্রদান করুন। আ-মী-ন।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত’র পথিকৃৎ লক্ষ লক্ষ সুন্নি মুসলমানের মুর্শিদ-এ বরহক জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া ও আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট-এর প্রতিষ্ঠাতা আওলাদে রাসূল (দ.) হযরতুল আল্লামা আলহাজ্ব হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি রাহমাতুল্লাহি আলায়হি-এর প্রিয় মুরিদ ও খেলাফত প্রাপ্ত সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার একনিষ্ঠ সেবক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও দৈনিক আজাদীর প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ আবদুল খালেক-এর ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ খ্রিস্টাব্দ ৫৬তম ওফাত বার্ষিকী। তিনি কোহিনুর ইলেক্ট্রিক প্রেস এর ওপরে আওলাদে রাসূল সৈয়্যদ আহমদ শাহ্ সিরিকোটি রাহমাতুল্লাহি আলায়হি’র খানকাহ্ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আনজুমান ট্রাস্ট ও জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়ার একজন প্রজ্ঞাবান ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তা হিসেবে সিলসিলায়ে আলিয়া কাদেরিয়ার প্রচার প্রসারে এক অনন্য ভূমিকা পালন করেন আমৃত্যু। আমরা সুন্নীয়ত প্রতিষ্ঠা ও আপন মুর্শিদের খেদমত ও মানবসেবা মূলক অবদানকে গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। আমরা ও মহান তরীক্বত-এর সিপাহ্ সালার রাফে দরাজাত কামনা করছি।