এ চাঁদ এ মাস : মাহে রমযান

0

মাহে রমযান
মহা ফযিলতপূর্ণ এ মাস, আল্লাহর মাস, গুনাহ্ মাফের মাস, ইবাদতের মাস। পবিত্র হাদীস শরীফ অনুযায়ী এ মাসের নফল ইবাদত অন্য মাসের ফরযের সমতুল্য সওয়াব। তাই প্রত্যেক মু’মিন মুসলমান নর-নারীর উচিত এ মাসে ফরয ইবাদত আদায়ের পাশাপাশি নফল নামায আদায় করা। অবহেলা অলসতা না করা। অত্যন্ত ফযিলতময় এ মাসে তাহাজ্জুদ ও সালাতুত্ তাসবিহ্ আদায় করার অন্যতম সুযোগ।

তাহাজ্জুদ নামায পড়ার সময় ও নিয়ম
এ নামাযের সময় হচ্ছে- রাতে ঘুম থেকে উঠার পর হতে শুরু হয়ে সুব্হে সাদেক্ব পর্যন্ত। এ নামায সর্বাধিক ১২ রাক‘আত। দু’দু’ রাক্’আত করে নিয়্যত বেঁধে প্রত্যেক রাক্’আতে একবার ‘আলহামদু’ শরীফ ও ৩ বার ‘ক্বুলহুওয়াল্লাহ’ শরীফ বা অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে এ নামায পড়তে হয়। তারপর সাধ্যমত অন্যান্য দো’আ-দুরূদ পড়ে মুনাজাত করা চাই। এ নামাযে দেহ ও মনের রোগমুক্তি এবং নিজের মা-বাপ বংশধরগণসহ বিশ্ব মুসলিমের গুনাহ্ মাফের জন্য দো’আ করা অতীব ফলদায়ক।

তাহাজ্জুদ নামাযের নিয়্যত
উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন্ উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা‘আলা রাক‘আতাই সালাতিত্ তাহাজ্জুদ। সুন্নাতু রাসূলিল্লা-হি তা‘আলা মুতাওয়াজ্জিহান্ ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লা-হু আকবর।

সালাতুত্তাসবীহ্
একদা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আপন চাচা হযরত আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে ডেকে বললেন, ‘‘চাচা! আমি কি আপনাকে দান করব না? সুসংবাদ দেব না? দশটি মর্তবা লাভের অধিকারী করব না? তা হচ্ছে আপনি যদি চার রাক‘আত ‘সালাতুত্তাস্বীহ’ (তাসবীহ্র নামায) পড়েন তাহলে আল্লাহ্ তা‘আলা আপনার বিগত গুনাহ ও আগাম গুনাহ্, জানা গুনাহ্ ও অজানা গুনাহ্, ইচ্ছাকৃত, অনিচ্ছাকৃত, প্রকাশ্য গুনাহ্্ ও অপ্রকাশ্য গুনাহ্ মাফ করে দেবেন।’’ অতঃপর রাসূল সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেন-‘‘যদি আপনার সামর্থ্য থাকে, তাহলে পত্যহ একবার এ নামায পড়ুন। যদি তা না পারেন, তাহলে প্রত্যেক জুমু’আর দিনে পড়ুন। যদি তাও না পারেন, তবে মাসে একবার করে পড়ুন। যদি তাও না পারেন, তাহলে বৎসরে একবার পড়ুন। যদি তাও না পারেন, তাহলে জীবনে একবার হলেও এ নামায পড়া চাই।’’ [মুসলিম শরীফ]

সালাতুত্তাসবীহর নিয়ত
উচ্চারণঃ নাওয়াতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা আরবা’আ রাকা’আ-তি সালাতিত্ তাসবীহ্। সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তা’আলা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবর।

নিয়মঃ অন্যান্য নামাযের নিয়মে চার রাক’আত সালাতুত্তাস্বীহ’র নিয়্যত করে সানা পড়ার পর নিম্নের কলেমাটি ১৫ বার পড়বে, তারপর সূরা ফাতিহা ও তার সঙ্গে একটি সূরা মিলিয়ে রুকু’তে যাওয়ার আগে নিম্নোক্ত কলেমাটি ১০ বার পড়বে।
উচ্চারণ ঃ সুব্হানাল্লা-হি ওয়াল হাম্দু লিল্লা-হি ওয়া লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াল্লা-হু আকবর।

তারপর রুকূ’তে গিয়ে প্রথমে রুকূ’র তাসবীহ্ সুব্হানা রাব্বিয়াল্ ’আযী-ম ৩ বার পাঠ করে উক্ত কলেমাটি পড়বে ১০ বার। তারপর ‘সামি’আল্লা-হু লিমান্ হামিদাহ’ বলে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ‘রাব্বানা লাকাল হাম্দ’ বলবে। তারপর উক্ত কলেমাটি পড়বে ১০ বার। তারপর আল্লা-হু আকবর বলে সাজদায় গিয়ে সাজদার তাসবীহ ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আ’লা’ ৩ বার পড়ে উক্ত কলেমাটি পড়বে ১০ বার। তারপর আল্লাহু আকবর বলে সোজা হয়ে বসে সেই কলেমাটি পড়বে ১০ বার। এবং দ্বিতীয় সাজদায় ‘সুবহা-না রাব্বিয়াল আ’লা’ ৩ বার পড়ে এ কলেমা ১০ বার পড়বে। তারপর আল্লা-হু আকবর বলে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাক’আত একই নিয়মে শুরু করবে। উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত প্রথম রাক’আতে কলেমাটি সর্বমোট ৭৫ বার পঠিত হলো।

এভাবে প্রত্যেক রাক’আতে ৭৫ বার হিসেবে চার রাক’আত নামাযে সর্বমোট ৩০০ বার কলেমাটি পাঠ করতে হবে। প্রথম ও শেষ বৈঠকে যথানিয়মে তাশাহ্হুদ ইত্যাদি পড়তে হবে। [বুখারী শরীফ]

এ মাসে ওফাতপ্রাপ্ত মনীষীগণ
হযরত ফাতেমাতুয্ যাহ্রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা ৩ রমযান ১১ হিজরি
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু ৮ রমযান ৩২/৩৩হিজরি
হযরত খাদিযাতুল ক্বুবরা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা ১০ রমযান
হযরত আলী মুরতাদ্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু ১৭/২১ রমযান ৪০ হিজরি
ইয়াওমে বদর (ঐতিহাসিক বদর যুদ্ধ যে যুদ্ধে ৩১৩জন সাহাবী শাহাদত বরণ করেন।)
হযরত নাছির উদ্দিন চেরাগ দেহলভী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ১৭ রমযান
হযরত ইমাম ইবনে মাজাহ্ রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ২২ রমযান ২৭৩হিজরি।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •