প্রশ্ন করেছেন মুহাম্মদ আসমত উল্লাহ্ চৌধুরী-
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: মুসলমান এর জন্য জুমার দিনকে ঈদের দিন বলা হয় কেন? বিস্তারিত ক্বোরআন-হাদীসের আলোকে জানানোর আবেদন করছি।
উত্তর: খ্রিস্টানরা রোববারকে কেবল এজন্য মান্য করে যে, ওই দিন হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম এর উপর আসমান থেকে ‘মায়েদাহ্’ অর্থাৎ খাদ্যভর্তি খাঞ্চা অবতীর্ণ হয়েছে। তিনি দো’আ করেছিলেন-الهُمَّ رَبَّنَا أنزِلْ علينَا مَائدَةً مِنَ السَّمَاءِ تكُونُ لناعيدًا لّأَوَّلِنَا وَأخرنَا-
অর্থাৎ- হে আল্লাহ্! হে আমাদের রব! আমাদের উপর আকাশ থেকে খাদ্যভর্তি খাঞ্চা অবতরণ করুন যা আমাদের জন্য ঈদ বা খুশির কারণ হবে আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের জন্য। [সূরা মায়েদাহ্: আয়াত ১১৪]
পরম করুণাময় আল্লাহ্ তা‘আলা আসমান হতে ঈসা আলায়হিস্ সালামের উম্মতের জন্য খাদ্যভর্তি খাঞ্চা অবতরণ করেন। আর সেই থেকেই এদিনটি তাদের জন্য ঈদে পরিণত হলো। তবে জুমার দিন আমাদের নবীর উম্মত মুসলমানদের জন্য ঈদ এজন্য হয়েছে যে, জুমার দিনটি মানব জগতের তথা পৃথিবীর প্রথম এবং শেষ দিন। তাছাড়া জুমার দিনেই মহান আল্লাহ্র হুকুমে ও দয়ায় হযরত বাবা আদম আলায়হিস্ সালাম-এর সৃষ্টি ও জান্নাতে গমন হয়েছে এবং জান্নাত থেকে পৃথিবীতে তিনি অবতরণও করেছেন এ দিনে।
এ ছাড়া কোন কোন বর্ণনা মতে আল্লাহ্ তা‘আলা নবীগণের উপর তাঁর বড় বড় নিয়ামত সমূহ জুমার দিনে দান করেছেন। যেমন হযরত মুসা আলায়হিস্ সালামকে অভিশপ্ত ফিরাউন থেকে নাজাত, হযরত ইউনুস আলায়হিস্ সালামকে দীর্ঘ ৪১ দিন পর মাছের পেট থেকে রক্ষা করা, হযরত ইয়াকুব আলায়হিস্ সালাম এবং হযরত ইউসুফ আলায়হিস্ সালাম-এর মাঝে সাক্ষাৎ, হযরত নূহ আলায়হিস্ সালাম-এর নৌকা মহাপ্লাবন থেকে রক্ষা পাওয়াসহ পৃথিবীর ইতিহাসে বহু ঐতিহাসিক ঘটনা জুমার দিনে সংঘটিত হওয়ায় এবং জুমার দিনের অসাধারণ ফজিলত ও মর্যাদার কারণে জুমার দিনকে মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া আদিপিতা হযরত আদম আলায়হিস্ সালামের শরীর মোবারক এদিনেই একত্রিত করা হয়েছিল। তাই হাদীস শরীফে রয়েছে, ‘‘জুমার দিন হলো মুসলামনদের জন্য ঈদেন দিন।’’ [তাফসীরে রহুল বয়ান, ইবনে মাজাহ শরীফ, যুগজিজ্ঞাসা ইত্যাদি]