প্রশ্ন করেছেন আহমদ কবির-
রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: কোন মুসলমান হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজা মন্ডপে গিয়ে হাত জোড় করে অথবা তাদের রান্না করা খাবার খায়, তার ব্যাপারে ক্বোরআন ও হাদিসের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ হবো।
উত্তর: হিন্দুদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মুসলমানদের অংশগ্রহণ দুঃখজনক ও দুর্বল ঈমানের পরিচয়। পূজা হিন্দুদের একটি বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। পূজা মন্ডপ তথা হিন্দুদের উপাসনালয়ে মুসলমানদের অংশগ্রহণ আসা-যাওয়া, তাদের জবাইকৃত জন্তুর মাংস খাওয়া ইত্যাদি হারাম ও ঈমান নষ্ট হওয়ার কারণ। তারা চাইবে ছলে-বলে বা কৌশলে তাদের পূজায় নিয়ে যেতে এবং তাদের মূর্তি ও পূজা-মন্ডপ দেখাতে। কিন্তু তা থেকে মুসলমানদের অবশ্যই বিরত থাকতে হবে। তাদের অনুষ্ঠানে যাওয়া-আসা, সীমালঙ্ঘন ও তাদেরকে সমর্থন ও সাহায্য করার নামান্তর। পবিত্র ক্বোরআনে মহান আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন-
ولاتعاونوا عَلَى الاِثْمِ والعدوان- অর্থাৎ- আর তোমরা (ঈমানদারগণ) গুনাহ্ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে একে অপরকে সাহায্য করো না। [সূরা মা-ইদাহ্: আয়াত ২]
তাই বিধর্মীদের পূজা উপলক্ষে তাদের পূজায় সাহায্য করা, প্রসাদ খাওয়া বা শারীরিকভাবে অংশগ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নাজায়েয। এমনকি (খেলার ছলে) বা নিছক ঘুরা-ফেরার জন্যে যাওয়াও না-জায়েয আর মূর্তির প্রতি ঝুকা, হাত জোড় করা ঈমান ধ্বংস হওয়ার কারণ। পবিত্র ক্বোরআনে মহান আল্লাহ্ তা‘আলা ইরশাদ করেন- -وَلاَ تَرْكَنُواْ إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُواْ فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ
অর্থাৎ- আর তোমরা (মুলমানরা) পাপিষ্ঠদের (কাফের-মুশরিকদের) প্রতি (তাদের ধর্মীয় বিষয়ে ও কাজে শরীক হয়ে কিংবা সাদৃশ্য রেখে) ঝুঁকবে না। নতুবা তোমাদেরকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে।
[সুরা হুদ: আয়াত ১১৩]
সুতরাং হিন্দুদের পূজা মন্ডপে গিয়ে হাত জোড় করা, ঝুকে পড়া ইত্যাদি কুফরি ও শিরিক এর নামান্তর।
হাদীসে পাকে রয়েছে- হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আল আনহুমা হতে বর্ণিত প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ‘যদি কেউ কোন সম্প্রদায়ের অনুরূপ করে, তাহলে সে (তাদের) উক্ত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত বলে গণ্য হবে। [সুনানে আবু দাউদ শরীফ]
অপর হাদীসে রয়েছে- প্রিয়নবী রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ‘‘যে আমাদের ব্যতীত অন্যদের রীতি-নীতি অনুসরণ করে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। [মিশকাত শরীফ] আর কাফির মুশরিকদের অনুসরণ ও অনুকরণ করা, তাদের অনুষ্ঠানে যাওয়া মুসলামনদের জন্য জঘন্যতম অপরাধ। বরং তা থেকে বিরত থাকা ফরজ। তবে যারা প্রশাসনিক ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে এবং এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্বে নিয়োজিত আর জনপ্রতিনিধি- তারা শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য এবং কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা যেন কেউ করতে না পারে দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন বিনষ্ট না হয় সে জন্য যাবতীয় অনুষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ করতে হয় বিশেষ প্রয়োজনে। এটাই ইসলামী শরীয়তের ফায়সালা।