কতিপয় যুগজিজ্ঞাসার জবাবে ইমাম আহমদ রেযা
[রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি]
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মাসুম >
[বর্তমান সমাজে এমন কিছু কাজ প্রচলন আছে, যেগুলো নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি বিরাজ করে। আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি প্রণীত ফতোয়ায়ে রযবীয়ায় এ ধরনের বিষয়গুলোর কুরআন হাদীসের আলোকে প্রামাণ্য সমাধান রয়েছে। তাই সেগুলো এ নিবন্ধে বর্ণিত হলো]
অশুভ প্রথা
ইমামে আহলে সুন্নাত শাহ আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহিকে প্রশ্ন করা হলো- এক ব্যক্তি সম্পর্ক প্রসিদ্ধি রয়েছে যে, যদি সকালে তার অশুভ চেহারা দেখে নেয় বা কোন কাজে যাওয়ার সময় সামনে এসে যায়, তবে অবশ্যই কিছু না কিছু অসুবিধা ও কষ্টের সম্মূখীন হতে হবে এবং যতই নিশ্চিত রূপে কাজটি হয়ে যাওয়ার প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা হোক না কেন। কিন্তু তাদের ধারণা হলো যে, কিছু না কিছু সমস্যা ও প্রতিবন্ধকতা অবশ্যই হবে। তাই তারা যদি কোথাও যাওয়ার সময় তার সামনে পড়ে যায়, তবে নিজের ঘরে আবার ফিরে যায় এবং সেই অশুভ ব্যক্তি সামনে থেকে চলে যাওয়ার পর আবারো নিজের কাজের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এখন প্রশ্ন হলো: ঐ লোকদের এরূপ বিশ্বাস এবং কর্মপদ্ধতি কতটুকু শরীয়ত সম্মত?
উত্তরে আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি বললেন: ইসলামী শরীয়াতে এর কোন ভিত্তি নেই, মানুষের মনের সন্দেহ মাত্র। শরীয়াতের আদেশ হলো: কোন প্রথা যদি কুধারণা সৃষ্টি করে, তবে সে অনুযায়ী আমল করবে না। এটি হিন্দুয়ানী পদ্ধতি, এই অবস্থায় মুসলমানদের উচিৎ আল্লাহর নিকট এই বলে প্রার্থনা করা যে, ‘হে আল্লাহ্! কোন অমঙ্গলই নেই, তবে সবই তোমারই পক্ষ থেকে এবং তুমি ছাড়া কোন মাবুদ নেই’ এবং মহান প্রতিপালকের প্রতি ভরসা রেখে নিজের কাজে যাওয়া। কখনো থামবে না, ফিরেও আসবে না। আল্লাহ্ই ভাল জানেন।
আল্লামা মুহাম্মদ বিন আহমদ আনসারী কুরতুবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, শুভ প্রথা হলো: যে কাজের ইচ্ছা পোষণ করেছে, সে সম্পর্কে কোন কথা শুনে সেই কাজের পক্ষে প্রমাণ গ্রহণ করা, এটি তখনই হয়, যখন কথাটি শুভ হয়, যদি অশুভ হয়, তাহলে অশুভ প্রথা। শরীয়াত এই কথার নির্দেশ দিয়েছে যে, মানুষ যেন শুভ প্রথা গ্রহণ করে খুশি হয় এবং নিজের কাজ আনন্দচিত্তে সম্পন্ন করে এবং যখন কোন অশুভ কথা শুনে, তখন সেদিকে যেন মনযোগ না দেয়, আর সেই কারণে নিজের কাজও যেন বন্ধ করে না দেয়।
হাকীমুল উম্মত মুফতী আহমদ ইয়ার খান নঈমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, শুভ প্রথা গ্রহণ করা সুন্নাত, এতে আল্লাহ্ তায়ালার পক্ষ থেকে আশার সঞ্চার হয় এবং অশুভ প্রথা তথা কুসংস্কার গ্রহণ করা নিষেধ। কেননা, এতে আল্লাহ্ তায়ালার প্রতি নিরাশার সঞ্চার হয়। আশা করা উত্তম, নিরাশা মন্দ, সর্বদা আল্লাহ্ তায়ালার নিকট আশা রাখা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য। রাসূলল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমার উম্মতের মাঝে তিনটি বিষয় অবশ্যই থাকবে- অশুভ প্রথা, হিংসা এবং কুধারণা। এক সাহাবী আরয করলেন: ইয়া রাসূলাল্লাহ্! যে লোকের মাঝে এই তিনটি অভ্যাস থাকবে, সে এর প্রতিকার কিভাবে করবে? ইরশাদ করলেন, যখন তুমি হিংসা করবে, তখন আল্লাহ্ তায়ালার নিকট ইস্তিগফার করো (তাওবা করো) এবং যখন তুমি কোন কু-ধারণা করো তবে তাতে দৃঢ় থেকো না। আর যখন তুমি অশুভ প্রথা বের করবে, তখন সেই অশুভ প্রথা তথা কুসংস্কার পরিত্যাগ করে স্বীয় কাজ করবে।
মন্দ ধারণা
আলা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মন্দ ধারণা হচ্ছে কোন মুসলমানের ব্যাপারে প্রমাণ ছাড়া এমনটি ধারণা করা যে, (কোন কাজে) তার নিয়্যত হচ্ছে রিয়া তথা লৌকিকতা, অহংকার ও সুনাম অর্জন করা- এটা অকাট্য হারাম। অনির্দিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে যে ধারণা, তা কোন নির্দিষ্ট মুসলমানের ব্যাপারে কোন সুস্পষ্ট প্রমাণ ব্যতিরেকে মনে করা বদগুমানী বা কুধারণা।এটা হারাম। ইরশাদ হচ্ছে- ولا تقف ما ليس لك به علم إن السمع والبصروالفؤاد كل أولئك كان عنه مسؤلا অর্থাৎ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না; কর্ণ,চক্ষু,হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। আর খারাপ ধারণা খারাপ অন্তর থেকেই বের হয়। তাই মুসলমানদের কর্ম সমুহের প্রতি ভাল ধারণা পোষণ করা ওয়াজিব। আর কু-ধারণা রিয়া অপেক্ষা কম হারাম নয়।
মসজিদে পানাহার করা
ইমামে আহলে সুন্নাত শায়খ আহমদ রেযা রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ইতিকাফকারী ব্যতিত অন্য কেউ মসজিদে ইফতার করা, পানাহার করা জায়েয নেই। তাই অন্যরা যদি মসজিদে ইফতার করতে চায়, তবে ইতিকাফের নিয়তে মসজিদে গমন করবে এবং কিছুক্ষণ যিকির-আযকার, দরুদ শরীফ পড়ার পর পানাহার করতে পারবে। কিন্তু এক্ষেত্রে মসজিদের আদব, সম্মান রক্ষা করা আবশ্যক। বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে সিংহভাগ মসজিদে ইফতার করার সময় মসজিদ সমূহের চরমভাবে মর্যাদা হানি করা হয়, যা নাজায়েজ ও হারাম। মসজিদের ইমাম ও মোতাওয়াল্লীদের এ ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। অন্যথায় কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে। ইরশাদ হচ্ছে- كلكم راع وكلكم مسؤول عن رعيته
অর্থাৎ,তোমাদের প্রত্যেকে দায়িত্বশীল এবং প্রত্যেকেই আপন দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।
সন্তানদের আদেশ-নিষেধ করা
ইমাম আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, শরীয়ত মতে যে কাজটি যে মর্যাদা রাখে সে ব্যাপারে মাতা-পিতা তার সন্তানদের সংশোধন করার বিধানও অনুরূপ। অর্থাৎ কাজটি ফরয হলে সন্তানদের সংশোধন করা ফরজ, আর কাজটি ওয়াজিব পর্যায়ের হলে ওয়াজিব, সুন্নাত পর্যায়ের হলে সুন্নাত এবং মুস্তহাব পর্যায়ের হলে মুস্তহাব। মঙ্গল কামনার্থে নিজ ক্ষমতানুযায়ী সন্তানদের সংশোধনের নির্দেশ দেবে। অন্যথায় ইরশাদ হচ্ছে- يا أيها الذين امنوا عليكم أنفسكم لا يضركم من ضل إذا اهتدينم অর্থাৎ হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের (সংশোধন করার) জন্য চিন্তা কর, যখন তোমরা দ্বীনের পথে চলছ তখন কেউ পথভ্রষ্ট হলে তোমাদের কোন ক্ষতি নেই।
তাওয়াক্কুল
মুজাদ্দিদে দ্বীন ও মিল্লাত ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মাধ্যম বর্জন করার নাম তাওয়াক্কুল নয়, বরং মাধ্যমের উপর ভরসা না করে আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করার নামই তাওয়াক্কুল। এটা ফরযে আইন। মাধ্যম ও কৌশল ব্যতিরেকে হালাল উপার্জন বাদ দিয়ে নির্জনতা অবলম্বন করার অনুমতি শরীয়তে নেই। আমিরুল মু’মিনীন হযরত ফারুকে আযম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালার উপর তাওয়াক্কুল করার মতো তাওয়াক্কুল করো, তবে তিনি তোমাদেরকে এমনভাবে রিযিক প্রদান করবেন যেমনটি পাখিদের প্রদান করেন। এরা সকালে খালি পেটে আপন নীড় থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় ভরা পেটে ফিরে।
আক্বীক্বা
এ প্রসঙ্গে আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আক্বীক্বা হচ্ছে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার শুকরিয়া স্বরূপ। তাই মৃত্যুর পর আক্বীক্বা হয় না। অর্থাৎ সন্তান যদি সপ্তম দিনের পূর্বেই মারা যায়, তবে তার আক্বীক্বা না করার কোন প্রভাব শিশুর সুপারিশে (শাফায়াত ইত্যাদিতে) পড়বে না। যেহেতু আকীকার সময় আসার পূর্বেই মারা গিয়েছে। হ্যাঁ! যে সন্তানের পিতা আক্বীক্বার সময় পেয়েছে অর্থাৎ সপ্তম দিনের হয়েছে, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বিনা কারণে তার আকীকা করেনি, তার জন্য এটা এসেছে যে, সে আপন মা-বাবার জন্য সুপারিশ করবে না। যার আকীকা করা হয়নি, সে যৌবন, বৃদ্ধ বয়সেও নিজের আকীকা নিজে করতে পারবে। যেমন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুয়ত প্রকাশের পর নিজের আকীকা নিজে করেছেন। আকীকার ক্ষেত্রে ছেলের জন্য দু’টি ছাগল এবং মেয়ের জন্য একটি। ছেলের জন্য দু’টি ছাগল জবেহ করা সম্ভব না হলে একটি যথেষ্ট হবে। আকীকার মাংস চিল, কাককে খাওয়ানোর কোন গুরুত্ব রাখে না। এমনটি করা ফাসেকী। (বরং তা পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, গরীব-মিসকিন সকলে খেতে পারবে।)
তাওবা
ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,সত্যিকার তাওবা এমন এক অনন্য বস্তু, যা প্রতিটি পাপ দূর করতে যথেষ্ট। এমন কোন গুনাহ নেই যা তাওবা করার পর অবশিষ্ট থাকে এমনকি শিরক ও কুফরীও। সত্যিকার তাওবার অর্থ হলো মহান আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হওয়ায় লজ্জিত হয়ে তড়িৎ গতিতে ঐ গুনাহ ছেড়ে দেয়া এবং ভবিষ্যতে কখনো ঐ পাপের নিকটে না যাওয়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা এবং কৃত কর্মের প্রতিকার সরূপ বান্দা তার কাছে রক্ষিত ক্ষতিপূরণ আদায় করা। যেমন, নামায-রোযা ছেড়ে দেয়া, অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ছিনিয়ে নেয়া,চুরি, সুদ-ঘুষ প্রভৃতি কর্মকান্ড থেকে তাওবা করে ভবিষ্যতের জন্য ঐ অপরাধ ছেড়ে দেয়াই যথেষ্ট নয়, বরং দৈনিক অনাদায়কৃত নামায সমুহ কাযা আদায় করা, লুন্ঠনকৃত কিংবা চুরিকৃত সম্পদের মালিকের নিকট তা ফিরিয়ে দেয়া আবশ্যক। সুদ-ঘুষ গ্রহণকারী দাতাকে তার মূদ্রা ফিরিয়ে দেয়া কিংবা তাদের অবর্তমানে তাদের উত্তরাধিকারীর নিকট ফিরিয়ে দেয়া নতুবা ক্ষমা চেয়ে নেয়াও জরুরী। সন্ধান না পেলে সমপরিমাণ সম্পদ সাওয়াবের নিয়ত ব্যতিত সদকা করা এবং এ নিয়ত অন্তরে রাখা আবশ্যক যে, ঐ লোকের সন্ধান পাওয়ার পর সদকা করায় লোকটি অসন্তুষ্ট হলে নিজের সম্পদ থেকে তা পরিশোধ করবে। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মহান আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারী ও পরীক্ষায় অবতীর্ণ মুমিন বান্দাকে পছন্দ করেন। ইমাম গাজ্জালী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, প্রত্যেক মুসলমান পাপ করা মাত্রই তড়িৎ গতিতে তাওবা করা ওয়াজিব। অর্থাৎ গুনাহ সম্পর্কে অবহিত হওয়ার পর ঐ ব্যাপারে লজ্জিত হয়ে অনুশোচনা করা এবং ভবিষ্যতে না করার অঙ্গিকার করা ওয়াজিব। এ কথার উপর আলেমগণের ইজমা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে আল্লামা নঈমুদ্দীন মুরাদাবাদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সত্যিকার তাওবার প্রভাব তাওবাকারীর আমলে প্রকাশ পায়। তার জীবন আনুগত্য ও ইবাদতে পরিপূর্ণ হয় এবং গুনাহ করা থেকে বিরত থাকে।
কবরস্থানে জুতা পরিধান
আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,হাদীস শরীফে এসেছে- মুসলমানের কবরের উপর পা রাখার চেয়ে তলোয়ারের ধারালো অংশে পা রাখা অধিকতর সহজ অন্যত্র রয়েছে, কোন মুসলমানের কবরের উপর পা রাখার চেয়ে অগ্নি স্ফুলিঙ্গের উপর পা রাখা আমার নিকট অধিকতর পছন্দনীয়। যদিও তা জুতার তলা ভেদ করে আমার পায়ের তলা স্পর্শ করে। এ প্রসঙ্গে ফতহুল কাদীর, তাহতাভী ও রদ্দুল মুহতারে রয়েছে, কবরস্থানে জুতা পরিধান করে চলা-ফেরা করা হারাম। একদা হুযূর পুরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে এক ব্যক্তি কবরস্থানে গমন করলে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন,হে লোম পরিস্কারকৃত জুতা পরিধানকারী! নিজ জুতা নিক্ষেপ করো। অন্যত্র ইরশাদ করেন, কবরবাসীকে কষ্ট দিওনা, তবে তোমাকেও কষ্ট দেয়া হবে না।
অহংকার থেকে মুক্তি
এ প্রসঙ্গে আযিমুল বরকত ইমাম আহমদ রেযা খান রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অহংকার থেকে মুক্তি অর্জনের একটি পদ্ধতি হলো, যখন কারো সাথে মতানৈক্য সৃষ্টি হয়, অতঃপর আপনি জেনে যান যে, সে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত তবে বিরোধ করার পরিবর্তে মেনে নিন। অতঃপর তার সামনে এই বিষয়টি স্বীকার করে সত্য কথার জন্য তার প্রশংসাও করুন যে, আপনি সঠিক বলেছেন, আল্লাহ্ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুক। সত্যকে স্বীকার করার এই ঘোষণা যদিও নফসের জন্য খুবই কষ্টকর, কিন্তু ধারাবাহিকভাবে এরূপ করতে থাকায় সত্যকে স্বীকার করা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে এবং এর বরকতে অহংকার থেকেও মুক্তি অর্জিত হবে। অহংকার থেকে মুক্তি অর্জনের জন্য নিজের সাথীর সাথে বা কোন মাহফিলে কখনোই অন্তরে এই আকাক্সক্ষাকে স্থান দেবেন না যে, আমাকে আলাদা সম্মান দেয়া হোক, উচ্চ স্থানে বসানো হোক, আমাকে সাদর-সম্ভাষণ করা হোক। হ্যাঁ! যদি কেউ নিজে থেকেই আপনাকে বিশেষ স্থানে বসার অনুরোধ করে তবে তা গ্রহণ করাতে কোন সমস্যা নাই। [ফতোয়ায়ে রযবীয়া, ২৩/৭২০]