আরবী বর্ণের যথাযথ বাংলা প্রতিবর্ণায়ন বিলুপ্তির পথে
বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্রে ইসলামী পরিভাষা ও মুসলিম ঐতিহ্য
মাওলানা মুহাম্মদ জহুরুল আনোয়ার
আরবী, ফার্সী ও উর্দূ বর্ণের বাংলা
প্রতিবর্ণায়ন ও উচ্চারণ
আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন দুনিয়ায় তার একত্ববাদ ও নবী-রসূলগণের নুবূয়ত ও রিসালত প্রতিষ্ঠার জন্য হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম থেকে হযরত ‘ঈসা আলায়হিস্ সালাম পর্যন্ত যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রাসূল আলাইহিমুস্ সালাম প্রেরণ করেন। তাঁরা তাদের খোদা প্রদত্ত জ্ঞান ও তাঁদের উপর অবতীর্ণ কিতাব ও সাহীফাহ্র আলোকে স্ব স্ব যুগে নিজ নিজ এলাকা ও সম্প্রদায়সহ মানুষ ও জিন জাতিকে আল্লাহ্র ওয়াহ্দানিয়াতের দা‘ওয়াত তথা দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। পরিশেষে ইসলামের পূর্ণতায় সর্বশেষ নবী ও রাসূল হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর অবতীর্ণ করা হয় কুরআন মাজীদ। এ জন্যই ক্বিয়ামত পর্যন্ত মুসলমানদের জীবন-জীবিকাসহ সবকিছুতে কুরআন-সুন্নাহ্ অনুসরণ করতে হবে এবং মানুষকে আল্লাহ্র মনোনীত দ্বীন ইসলামের আদর্শের আহ্বান করতে হবে।
পৃথিবীর সকল মানুষ আল্লাহ্র সৃষ্টি। সকলের ভাষাও তাঁর সৃষ্টি। তবে মানব জাতির পথপ্রদর্শনের মহাগ্রন্থ পবিত্র কুরআন মাজীদ অবতীর্ণ হয় আরবী ভাষায়। হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা তিন কারণে আরব ও আরবী ভাষাকে ভালবাসবেঃ কেননা আমি আরাবী (আরবীভাষী), কুরআন মাজীদের ভাষা আরবী এবং জান্নাতবাসীর ভাষা আরবী’। তাই পৃথিবীর সকল দেশের মুসলমানদের মাতৃভাষা এবং নিজস্ব আঞ্চলিক ও রাষ্ট্রীয় ভাষার পাশাপাশি কুরআনের ভাষা আরবী হওয়ায় বিশ্ব মুসলিমের একক মৌলিক ভাষা হল আরবী। মানুষের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ইহকাল সমাপ্তির পর পরকাল শুরুর মধ্যবর্তী সময় আলমে বারযাখ। অর্থাৎ কবরের ভাষা হবে আরবী। নাশ্র, হাশ্র, জান্নাতের ভাষাও হবে আরবী। তাই মৃত্যুর সাথে সাথে সকল মানুষের স্ব স্ব মাতৃভাষা বিলুপ্ত হয়ে আরবী ভাষায় রূপান্তরিত হয়ে যায়।
আরবীতে শাব্দিক প্রতিশব্দ, পরিভাষা ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে আরবী ভাষা অত্যন্ত সমৃদ্ধ ও ব্যাপক অর্থবহ। সুতরাং এ ভাষার শুদ্ধ ও যথাযথ উচ্চারণ অতীব জরুরী। এর উচ্চারণ যথাযথ না হলে অর্থ পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই শব্দের উচ্চারণ ও লিখন যথাসম্ভব সাহীহ্-শুদ্ধ হতে হবে। আরবী বর্ণ, শব্দ ও বাক্য অন্য যে কোন ভাষায় উচ্চারণে ও লিখন হুবহু বা একেবারে যথাযথভাবে সম্ভবপর নয়। এটা আরবী ভাষার অলৌকিকত্ব। তবুও আরবী ভাষার সঠিক উচ্চারণ ও বর্ণায়ন ইত্যাদিতে কিছু কিছু নীতি অনুসরণে এর স্বাতন্ত্র্য কিছুটা হলেও বজায় থাকে। যেমন- বাংলায় আরবী বর্ণের প্রতিবর্ণ হবে আলিফ-অ, হাম্যাহ্-অ, বা-ব, তা-ত, তা তানীস-ত/হ, সা-স, জীম-জ, হা-হ্, খা-খ, দাল-দ, যাল-য, রা-র, ঝা-ঝ, সীন-স, শীন-শ, সোয়াদ-স, দ্বোয়াদ-দ্ব, ত্বোয়া-ত্ব, যোয়া-য, ‘আইন-‘আ, গাইন-গ, ফা-ফ, ক্বাফ-ক্ব, কাফ-ক, লাম-ল, মীম-ম, নূন-ন, হা-হ, ওয়াও-ও/উ/ভ, ইয়া-য়/ই। হরকত সহকারে উচ্চারণ হবে হাম্যাহ্-আ/ই/উ, বা-বা/বি/বু, তা-তা/তি/তু, সা-সা/সি/সু, জীম-জা/জি/জু, হা-হা/হি/হু, খা-খা/খি/খু, দাল-দা/দি/দু, যাল-যা/যি/যু, রা-রা/রি/রু, ঝা-ঝা/ঝি/ঝু, সীন-সা/সি/সু, শীন-শা/শি/শু, সায়াদ-সা/সি/সু, দ্বায়াদ-দ্বা/দ্বি/দ্বু, ত্বায়া-তা¡/ত্বি/ত্বু, যোয়া-যা/যি/যু, ‘আইন-‘আ/‘ই/‘উ, গাইন-গা/গি/গু, ফা-ফা/ফি/ফু, ক্বাফ-কা¡/ক্বি/ক্বু, কাফ-কা/কি/কু, লাম-লা/লি/লু, মীম-মা/মি/মু, নূন-না/নি/নু, ওয়াও-ওয়া/ভি/ভু, হা-হা/হি/হু, ইয়া-ইয়া/ই/ইউ। যতি চিহ্ন ব্যবহারে কুরআন মাজীদের ‘মাজ্রেহা’য় ‘রা’ বর্ণের ‘যের’ হারকাতের উচ্চারণে ও লিখনে এ-কার ()ে হবে। এছাড়া সকল ‘যের’ উচ্চারণে ও লিখনে হ্রর্ষ ই-কার (ি ) হবে। যেমন কিতাব, ফিক্বহ্, মিহ্রাব ইত্যাদি বর্ণে হবে হ্রর্ষ-ই। যেমন ‘ইবাদাত, ইখলাস, ইনক্বিলাব ইত্যাদি। ‘যের’-এর পর সাকিন বিশিষ্ট ‘ইয়া’ থাকলে উচ্চারণে ও লিখনে দীর্ঘ ঈ-কার ( ী) হবে। যেমন মীলাদ, মীযান, জীলান ইত্যাদি। বর্ণে হবে দীর্ঘ-ঈ। যেমন ঈমান, ‘ঈসা, ‘ঈদ ইত্যাদি। শব্দের শেষ বর্ণ সাকিনযুক্ত ইয়ায়ে মা’রূফ হলে দীর্ঘ-ঈ কার হবে। যেমন মুহাম্মাদী, হাবীবী, হানাফী ইত্যাদি। ‘যবর’ উচ্চারণে ও লিখনে আ-কার (া) হবে। যেমন মান্নান, গাফ্ফার, সাত্তার ইত্যাদি। ‘পেশ’ উচ্চারণে ও লিখনে হ্রর্ষ উ-কার ( ু) হবে। যেমন মুহাম্মাদ, মুস্ত্বাফা, মুখ্তার ইত্যাদি। বর্ণে হবে হ্রর্ষ-উ। যেমন ‘উমার, ‘উসমান, ‘উবাইদ ইত্যাদি। অবশ্য, ‘আইনকে হলকে উচ্চারণ করতে এর কাছাকাছি ওমর, ওসমান, ওবায়দও লিখা ও পড়া যাবে। ‘পেশ’-এর পর সাকিন বিশিষ্ট ‘ওয়াও’ থাকলে দীর্ঘ ঊ-কার ( ূ) হবে। যেমন নূর, হূর, হূদ ইত্যাদি। বর্ণে হবে দীর্ঘ-ঊ। যেমন ঊলা, ঊদ, ঊর ইত্যাদি।
ফার্সী ও উর্দূ বর্ণমালায় আরবী বর্ণের অতিরিক্ত ৮ টি বর্ণ রয়েছে। এগুলোর প্রতিবর্ণ হবে পে-প, টে-ট, চে-চ, ডাল-ড, ড়ে-ড়, ঝে-য, গাফ-গ, ইয়ায়ে মাজ্হূল-এ। উচ্চারণ হবে পে-পা/পি/পু, টে-টা/টি/টু, ডাল-ডা/ডি/ডু, ড়ে-ড়া/ড়ি/ড়–, ঝে-ঝা/ঝি/ঝু, গাফ-গা/গি/গু, ইয়ায়ে মাজহূল-এ। ফার্সী ও উর্দূ শব্দের শুরুর যের উচ্চারণে এ অথবা এ-কার হবে। যেমন ফেরেশ্তা, বেহেশ্ত, মেহ্মান, মেজ্বান, মেহেরবান ইত্যাদি।
বাংলা ভাষায় ইসলামী পরিভাষা
বাংলা ভাষা বাংলাদেশীদের প্রিয় মাতৃভাষা। সর্বস্তরে এর যথাযথ মর্যাদা ও সঠিকভাবে চর্চা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে বাংলাভাষী মুসলমানদের কিছু নিজস্ব ইসলামী পরিভাষা রয়েছে। যা প্রাচীনকাল থেকে বলনে ও লিখনে প্রচলিত। মুসলমানদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে মাতৃভাষার পাশাপাশি ইসলামী পরিভাষার ব্যবহারও চালু রাখতে হবে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কেউ কেউ ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বহুল প্রচলিত ইসলামী পরিভাষাগুলোর পরিবর্তে বাংলা অর্থ ব্যবহার করতে থাকায় ইসলামী ভাবধারা ক্রমে বিলুপ্তির পথে। যেমন আখিরাত-পরকাল, ইন্তিকাল-পরলোকগমণ, আসমান-আকাশ, ঈমান-বিশ্বাস, আওয়াজ-ধ্বনি, ভরসা-আস্থা, দা‘ওয়াত-নিমন্ত্রণ, মেজবান-ভোজ, মেহ্মান-অতিথি, যিয়াফত-কুলখানি, তিলাওয়াত-পাঠ, তা‘লীম-শিক্ষা, মুরুব্বী-গুরু, মুনাজাত-প্রার্থনা, গোরস্থান-কবরস্থান, শশ্বান, মরহুম-মৃত/প্রয়াত, কবর-সমাধি, দাফন-সমাহিত করো, লাশ-মরদেহ, রূহ-আত্মা, দু‘আ-আশির্বাদ, তক্বদীর-অদৃষ্ট, সাওয়াব-পূণ্য, গুনাহ্-পাপ, নাজাত-পরিত্রাণ, যামানাহ্-কাল, গ্রেফতার-বন্দী, মুশকিল-বিপদ, পরওয়া-ভয়, খালাসী-মুক্তি, তদ্বীর-চেষ্টা, ওহী-প্রত্যাদেশ, ক্বিয়ামত-বিচারদিবস, শবে বরাত-ভাগ্যরজনী, শবে ক্বদর-মর্যাদার রাত, শবে মি‘রাজ-মেরাজরজনী, গোশ্ত-মাংস, ক্বিসমত-ভাগ্য, তাওফীক্ব-সামর্থ, যমীন-ভূমি, দুনিয়া-বিশ্বব্রহ্মাণ্ড, ময়দান-মাঠ, তারা-নক্ষত্র, রাত-রজনী, দিন-দিবস, মেসাল-উদাহরণ, ঠাণ্ডা-শীতল, গরম-উঞ্চ, পানি-জল, খোশবু-সুগন্ধি, শরীক-অংশ, শাদী-বিয়ে, ওয়ালীমাহ্-বৌভাত, খবর-সংবাদ, রহমত-দয়া, মাফ-ক্ষমা, খোশ্আম্দেদ্-স্বাগতম, মেহনত-পরিশ্রম, দোস্ত-বন্ধু, দুশমন-শত্রু, খোন-রক্ত, মদদ-সাহায্য, খয়রাত-ভিক্ষা, সহীহ্-শুদ্ধ, ওযর-আপত্তি, খেদমত-সেবা, ইবাদতখানা-নামাযেরস্থান, ইয়াতীমখানা-অনাথালয়, সফর-ভ্রমণ, রওয়ানা-যাত্রা, মুসাফির-আগন্তুক, হেফাযত-সংরক্ষণ, দখল-আয়ত্ব, হায়াত-আয়ু, জিন্দেগী-জীবন, শেফা-আরোগ্য, হাওয়া-বাতাস, গায়েব-অনুপস্থিত, হাযির-উপস্থিত, পয়দা-সৃষ্টি, ফায়দা-উপকার, আরযগুযার-নিবেদক, চাচা-কাকা ইত্যাদি। (যদিও এখানেও এ শেষোক্ত আরবী-ফার্সী পরিভাষাগুলো অনেকাংশে অপরিবর্তিত রয়েছে)
আরো উদ্বেগের সাথে লক্ষ্যণীয়, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড প্রণীত পাঠ্যপুস্তক থেকে ইসলামী পরিভাষাগুলো বাদ দেওয়ায় মাদ্রাসায় শিক্ষার্জন করেও ভবিষ্যতে হয়ত ইসলামী ভাবধারার পরিভাষাগুলোর ব্যবহার থাকবে না। বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংরেজী, বাংলা, বিজ্ঞান, গণিত, অর্থনীতি, সমাজ বিজ্ঞান, রাষ্ট্র বিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয় আধিক্যের কারণে পবিত্র কুরআন-হাদীসের মৌলিক জ্ঞানার্জনের সহযোগী বিষয়গুলো হ্রাস পেয়েছে। এককালে আরবী তথা পবিত্র কুরআন-হাদীসের অর্থ, ব্যাখ্যা, বিশ্লেষণ, উদাহরণ, উপমা ও দৃষ্টান্তের মাধ্যম ভাষা ছিল ফার্সী ও উর্দূ। এ দু’ভাষায় পবিত্র কুরআন-হাদীসের তারজামাহ্, তাফসীর ও মতলব পরিপূর্ণভাবে হাসিল হয়। বাংলায় অনুবাদে পবিত্র কুরআন-হাদীসের যথাযথ উদ্দেশ্যগত অর্থ আদায় করা সহজতর হয় না। যেমন আরবী সালাত শব্দের ফার্সী বা উর্দূ ভাষায় অর্থ হল নামায, বাংলায় প্রার্থনা। আরবী সাওম অর্থ ফার্সী-উর্দূতে রোযা, বাংলায় উপবাস। আরবী ‘আব্দ অর্থ ফার্সী-উর্দূতে গোলাম বা বান্দাহ্, বাংলায় দাস ইত্যাদি।
বাংলা ভাষার নিজস্ব স্বকীয়তা ও ঐতিহ্য রক্ষায়ও সর্বদা আদি বাংলা ব্যাকরণ ও বর্ণবিধান অনুসরণে সচেষ্ট থাকতে হবে। না হয় অশুদ্ধ ব্যবহার, ত্রুটি ও বিকৃত উচ্চারণে ও লিখনে বাংলা ভাষার মৌলিক বৈশিষ্ট্য ও স্বকীয়তা হারিয়ে যাবে। তাই ইসলামী পরিভাষা চালু রাখার পাশাপাশি মাতৃভাষা বাংলার শুদ্ধ উচ্চারণ ও লিখনে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
মুসলমান ছেলে-মেয়েদের ইসলামী নামের শুরু বা শেষে যুক্ত করা হচ্ছে বাংলা বা ইংরেজী নাম। ছেলেদের বাংলা নাম স্বপন, মিলন, বাদল, বাবুল, সুজন, রতন ইত্যাদি। মেয়েদের বাংলা নাম জ্যোৎ¯œা, স্বপ্না, রতœা, রূপা, আঁখি ইত্যাদি। ছেলেদের ইংরেজি নাম জুয়েল, প্রিন্স, জন, হ্যারি, নোবেল ইত্যাদি। মেয়েদের ইংরেজী নাম জেসি, মূন, সুইটি, রকসী, শেলী ইত্যাদি। আল্লাহ্ মানুষকে সৃষ্টির সেরা মর্যাদা দান করেছেন। অথচ কেউ কেউ বিদেশী সেবামূলক সংস্থা-সংগঠনের পদ-পদবী ধারণ করে নামের পূর্বে ‘লায়ন’ অর্থাৎ পশু লিখতে গর্ববোধ করে থাকেন।
মুসলিম পরিবারে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলে প্রথমে আযান-ইক্বামাতের মাধ্যমে তার দু’কানে আল্লাহ্র একত্ববাদ ও রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রিসালাতের বাণী পৌঁছানো হয়। ইসলামের পায়গাম ও দাওয়াতী বার্তা দ্বারা নবজাতকের জীবনের সূচনা করা হয়। হযরত হুসাইন ইবন আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যার সন্তান জন্ম নিবে তার ডান কানে আযান ও বাম কানে ইক্বামাত দেবে। এতে শিশুরোগ তার ক্ষতি করতে পারবে না। হযরত সামুরাহ্ ইব্ন জুন্দুব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, নবজাতক নিজ আক্বীক্বাহ্র সাথে বন্ধক থাকে। তার জন্মের ৭ম দিনে একটি পশু যবেহ্ করবে এবং নাম রাখবে আর মাথা মুণ্ডাবে। হাদীস শারীফে ইরশাদ হয়েছে, সন্তানের সুন্দর অর্থবোধক ইসলামী নাম রাখা উচিত। জীবন ও কর্মে নামের প্রভাব প্রতিফলিত হয়। আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের নিরানব্বই নাম অতীব সুন্দর ও অর্থবহ। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লমের নামও অত্যন্ত প্রশংসিত, সুন্দর, অর্থবহ ও আকর্ষণীয়। তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয় ক্বিয়ামত দিবসে তোমাদেরকে তোমাদের নাম ও পিতার নামে ডাকা হবে। অন্য হাদীসে রয়েছে, তোমরা আমার (নবী) নামে নাম রাখ। অপর হাদীসে রয়েছে, নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট তোমাদের নামসমূহের মধ্যে সর্বাপেক্ষা প্রিয় নাম হল, ‘আবদুল্লাহ্ এবং ‘আবদুর রাহ্মান। তাই সন্তান ভূমিষ্ঠের পর অর্থবোধক ইসলামী নাম রাখাই উচিত। কাফির, মুশরিক, নাস্তিকদের নামানুসারে নাম রাখা উচিত নয়। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেকের জাহেলী যুগের আপত্তিকর নাম পরিবর্তন করে সুন্দর ও যথার্থ অর্থবোধক নাম রেখেছিলেন।
স্কুল-কলেজের কোন কোন মুসলিম শিক্ষার্থী পরিবেশগত কারণে অজানা, অসাবধানতা, অবচেতনা বা উদারতা বা অসাম্প্রদায়িকতার নামে অমুসলিম ধর্মীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও উৎসব পালন করে থাকে। যেমন এপ্রিলফুল, নিউইয়ার পার্টি, হ্যালোইন পার্টি, ভ্যালেন্টাইন ডে, হ্যাগ ডে, কিস ডে, বার্থ ডে, বিদ্যাদেবীর বাণী অর্চনা ইত্যাদি।
বাংলা সাহিত্য ও কাব্য রচনায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, কায়কোবাদ, ইসমাঈল হোসেন সিরাজী, মুনশী মেহেরুল্লাহ্, ইব্রাহীম খাঁ, ফররুখ আহমদ, ড. কাজী দীন মুহম্মদ, ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্, প্রমুখের বহুমাত্রিক অবদান রয়েছে। তারা তাদের কাব্য-সাহিত্যে শব্দ গাঁথুনীতে আরবী, ফার্সী, উর্দূ তথা ইসলামী পরিভাষা ব্যবহার করে বাংলা সাহিত্যকে ইসলামী ভাবধারায় সমৃদ্ধ করেছেন। (আগামী সংখ্যায় সমাপ্য)
যুগে যুগে মুসলিম অধিকার
ঐতিহ্যের উত্থান-পতন
বাংলা বিহার উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজুদ্দৌলাহ্র কিছু অদূরদর্শী নিকটাত্মীয়ের ষড়যন্ত্র এবং ক্ষমতা ও পদলোভী সেনাপতি মীর জাফর আলী খানের হঠকারি ভূমিকায় ১৭৫৭ সালে তার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে এ দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা ও শাসন ব্যবস্থা বৃটিশ বেনিয়াদের দখলে চলে যায়। তারা প্রায় দু’শ বছর ভারতবর্ষ শাসন-শোষণ করে। তখন থেকে এ দেশের মুসলমানরা শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ব্যবসা, বাণিজ্য, সরকারী চাকুরী ও ন্যায্য সুযোগ সুবিধা এবং প্রাপ্য অধিকার থেকে ক্রমান্বয়ে বঞ্চিত হতে থাকে। ১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ও পরবর্তীতে সূর্যাস্ত আইনে মুসলমানদের জমি জমা ও ধন-সম্পদ বেহাত হতে থাকে। দারিদ্র্য ও অসহায়ত্ব তাদের চেতনাহীন ও অনেকটা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য জনগোষ্ঠিতে পরিণত করে। অনেকে স্বল্পমূল্যে বাস্তুভিটিও বিক্রি করে ভূমিহীন হয়ে পড়ে। ইংরেজরা মুসলিম স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার শর্তে কিছু দুর্বলচিত্তের মুসলমানদের সুযোগ সুবিধা দিয়েছিল। কেউ কেউ মুসলিম স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে এবং শাসক গোষ্ঠির তোষামোদ করে সর্বোচ্চ কেরানী চাকুরী পেলেও মুসলিম চেতনা ও ইসলামী আদর্শে অনুপ্রাণিত উঁচু শিক্ষিত মুসলমানের সরকারী চাকুরী ছিল না। অবর্ণনীয় নিপীড়ন, নির্যাতন, শোষণ, বঞ্চনার মধ্য দিয়ে মুসলিম জাতি অনেকটা অভাবী ও অসহায় জনগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিল। বহু ত্যাগ তিতিক্ষা ও অগণিত প্রতিবাদী মুসলিম বুদ্ধিজীবী ও উলামা-মাশায়িখের শাহাদতের বিনিময়ে ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পূর্ব ও পশ্চিম দু’অঞ্চলের সমন্বয়ে ‘পাকিস্তান’-এর স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষে মুসলমানদের ‘স্বাধীন মুসলিম রাষ্ট্র’ সৃষ্টি হয়। ফলে রাষ্ট্রিয়ভাবে মুসলমানদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অধিকার পুনরুদ্ধার হয়। মুসলমানদের নামের শুরুতে ‘শ্রী’ লিখনের স্থলে ‘মুহাম্মদ’ লিখা শুরু হয়। এরপর আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ স্বাধীন হয়।
উল্লেখ্য যে, ১৫ আগস্ট ভারত বর্ষের অবশিষ্ট বিশাল অঞ্চলের প্রদেশগুলো নিয়ে ‘হিন্দুস্থান’ স্বাধীন হয়। তখন থেকে নানা শর্ত সাপেক্ষে ভারতীয় মুসলমানরা সীমিত পরিসরে অধিকার ভোগ করে আস্লেও এদিকে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের বাংলাভাষীদের মাতৃভাষা ‘বাংলা’কে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানে অসম্মতিসহ পশ্চিম পাকিস্তানের শাসক গোষ্ঠীর অসদাচরণ, দমন, পীড়ন ও পূর্ব-পশ্চিম উভয় অঞ্চলের নাগরিক অধিকার ও ভোটাধিকারে বৈষম্যনীতি ইত্যাদির প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও বিক্ষোভ আন্দোলন থেকে স্বাধিকার আন্দোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে তা স্বাধীনতা আন্দোলনে রূপ নিলে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ’ স্বাধীন হয়। ফলে মাতৃভাষা ‘বাংলা’ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা লাভ করে। এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃতি অর্জন করে। এরপর থেকে এ দেশের বাংলাভাষী জনগণের স্বাধীনতার সুফল ভোগ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এ দেশের সকল ধর্মের জনগণ সমঅধিকার ও ন্যায্যপ্রাপ্য ভোগের নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠা পায়। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ে বাঙ্গালী ও রাষ্ট্রীয় পরিচয়ে বাংলাদেশী জনগণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সদ্ভাব বজায় রেখে বসবাস করে আসছে। ইসলামের উদারনীতিও তাই। ইসলাম অন্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকার, প্রাপ্য ও নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্বশীল। এরপরও উদ্বেগের সাথে লক্ষণীয়, কোন কোন ক্ষেত্রে ইসলামী চেতনাকে পরস্পর বিরোধী উপস্থাপন ও আখ্যায়িত করে ইসলামী চেতনায় বিশ^াসীদের ঢালাওভাবে স্বাধীনতাবিরোধী আখ্যায়িত করে তাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা করা হয়নি তাও বলা যায় না। অথচ ইসলাম সবসময় আধুনিক, বর্ণবৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও সকল মানুষের কল্যাণকর ধর্ম। তাই অনেকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ না করেও কেবল ইসলামের সামাজিক নীতি-পদ্ধতি অনুসরণ করে উদার মনে সুস্থ-স্বাচ্ছন্দ্যে পার্থিব জীবন যাপন করে যাচ্ছেন। তবে মুসলমানদের জন্য দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তি লাভে ইসলামকে আল্লাহ্ প্রদত্ত পরিপূর্ণ জীবন বিধানরূপে গ্রহণ করতে হবে এবং ইসলামে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করতে হবে। ইসলামের নীতি-আদর্শকে নিজের মধ্যে, পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাস্তবায়নে মুসলমানদের স্ব স্ব অবস্থান থেকে সদা সচেষ্ট হতে হবে। কুরআন মাজীদে সূরাহ্ বাক্বারাহ্র ২০৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মু’মিনরা তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ সূরাহ্ আল-ই ‘ইমরানের ১৯ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই ইসলামই আল্লাহ্র নিকট একমাত্র ধর্ম।’ এজন্যই আল্লাহ্র সন্তুষ্টি অর্জনে মুসলমানদেরকে মানব রচিত কোন নীতি-আদর্শ অনুসরণের প্রয়োজন হয় না। সুতরাং ইবাদাত-বন্দেগীর সাথে সাথে মুসলমানদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, শিক্ষা, সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সভ্যতায় এবং ঐতিহ্য রক্ষা ও পরিচয়ে স্বাতন্ত্র্য বজায় রাখতে হবে। সর্বাবস্থায় আল্লাহ্র উপর পরিপূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে হবে। ইসলাম সবসময় আল্লাহ্র বিধান মতে মৌলিক বিশ^াসের কর্মমুখী জীবনধারা। এজন্য ইসলামী চিন্তা-চেতনাকে কোনভাবেই সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদিতা বা মৌলবাদিতা বলা যাবে না। মুসলমানদের জানাযার নামাযে বলতে হয়, ‘আল্লাহুম্মা মান্ আহ্ইয়াইতাহু মিন্না ফাআহ্য়িহি ‘আলাল্ ইসলাম ওয়ামান্ তাওয়াফ্ফাইতাহু মিন্না ফাতাওয়াফ্ফাহু ‘আলাল্ ঈমান’। অর্থাৎ, ‘হে আল্লাহ্ আপনি (আমাদের মধ্যে) যাকে জীবিত রাখবেন, ইসলামের উপর জীবিত রাখবেন এবং যাকে মৃত্যু দেবেন, ঈমানের সাথে মৃত্যু দেবেন’। এতে প্রতীয়মান হয়, মুসলমানদের ইসলাম পরিচয়ে বেঁচে থাকাতেই ঈমানের বহিঃপ্রকাশ।
ইসলাম আল্লাহ্র এমন এক ধর্ম বা মানুষের জীবন বিধান, যাতে রয়েছে অন্য ধর্মাবলম্বীদেরও নিজ নিজ ধর্ম পালনের অধিকার, নিরাপত্তা ও জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তা। প্রত্যেক মুসলমানের কার্যকলাপে সর্বাবস্থায় ইসলামী চিন্তা-চেতনা ও বোধ-বিশ্বাস থাকতে হবে। ইসলামী আদর্শের বিপরীতে অন্য কোন চেতনায় বিশ্বাসী হওয়ার সুযোগ নেই। কোন কোন মুসলমানের মধ্যে ইসলামের মৌলিক শিক্ষা, দর্শন ও আদর্শজ্ঞান চর্চা না থাকার সুযোগটা ইসলামবিদ্বেষীরা কাজে লাগায়।
ইসলাম মানব জাতির জন্য আল্লাহ্ প্রদত্ত বিশ^জনীন ধর্ম ও জীবন বিধান। তাই বিশে^র মুসলমানদের জীবন জীবিকা ও আচার আচরণে ইসলামী অনুশাসন ও বিধি বিধান অনুসরণ করতে হয়। এজন্য প্রাত্যহিক জীবন-জীবিকায় সর্বদা হালাল-হারাম, জায়িয-নাজায়িয, সত্য-অসত্য, শোভন-অশোভন মেনে চলা অপরিহার্য। প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ঈমান-আক্বীদাহ্র পর নামায ফরয বা বাধ্যতামূলক আমল। এরপর রমযানের রোযা এবং আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনায় যাকাত ও হজ আদায় করা ফরয। পুরুষের দাঁড়ি রাখা, নামাযের সময় পরিস্কার ও শালীন পোশাক এবং টুপি-পাগড়ি পরিধান করা সুন্নাত। মহিলাদের সর্বদা মাথায় কাপড় ও মুখে নেকাবসহ শালীন পোশাক পরিধান ও পর্দা করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, মুসলিম নারীদের অনেক ক্ষেত্রে আবরু ও পর্দা রক্ষা করা হচ্ছে না। পুরুষদের অনেকে কারণ ছাড়াই টুপিবিহীন ও দ্রুততার সাথে নামায আদায় করে থাকেন। যা অনেকটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অনেকে নামায পড়েও, হজ করেও দাঁড়ি রাখায় গুরুত্ব দেন না। ছাত্র-যুবকদের অনেকে দাঁড়ি রাখলেও তা সুন্নাত অনুযায়ী নয়। চুল কাটা হচ্ছে নানা ধরনের কুরুচি, দৃষ্টিকটু ও অশালীনভাবে। যা সুন্নাতে রাসূলের অনুকরণে নয় বরং খেলোয়াড় ও চিত্রনায়কদের অনুকরণে। আদান-প্রদান করা হচ্ছে বাম হাতে। কথা বলার শুরুতে সালাম-মুসাফাহা এবং বিদায়ের সময় আল্লাহ্ হাফিয বলার প্রথা উঠে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজের অনেক মুসলিম শিক্ষার্থীর ইসলামী জ্ঞান এবং পারিবারিক নৈতিক শিক্ষার অভাবে ভিন্ন সংস্কৃতিতে ধাবিত হচ্ছে। উৎকণ্ঠার সাথে লক্ষ্যণীয়, মাদ্রাসার কিছু শিক্ষার্থীও তা অনুকরণ করে চলেছে। এক সময় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অনুকরণে পায়জামা-পাঞ্জাবী ও টুপি পরিধান করত। বর্তমানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অনুকরণে দৃষ্টিকটু চুল-দাঁড়ি রাখা ও প্যান্ট-শার্ট পরিধানে গর্ববোধ করছে। অবস্থা দৃষ্টে প্রতীয়মান হয়, ইসলামী শিক্ষা-সংস্কৃতি, কৃষ্টি-সভ্যতা ও আচার-আচরণ সবকিছু থেকে ক্রমান্বয়ে মুসলমানদের বিচ্যুতি ঘটানোর গভীর ষড়যন্ত্র যেন অবচেতনায় মুসলমানরাই বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
সুতরাং ইসলামী তাহ্যীব-তামাদ্দুনের সুষ্ঠু বিকাশে, ইসলামী পরিভাষা সচল রাখতে, মুসলমানের সঠিক ও অর্থবহ ইসলামী নাম রাখতে, মুসলমানদের ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে, মুসলিম গৌরবোজ্জ্বল অবস্থার পুনরুদ্ধারে এবং আরবী বর্ণের প্রতিবর্ণায়ন ও উচ্চারণ-লিখনে স্বকীয়তা বজায় রাখতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে মুহাক্বক্বিক্ব ‘উলামায়ে কেরাম, মাশায়িখে ‘ইযাম, মুবাল্লিগে ইসলাম, মু‘আল্লিমে দীন ও মিল্লাত, ইমাম-খতীব, ইসলামী গবেষক, চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ, শিক্ষক, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, লেখক, সাংবাদিক সকলের সমন্বিত ভূমিকা রাখা জরুরী।
লেখক : সাহিত্যিক, গবেষক ও সংগঠক।