সুন্নাত নামাযের ফজীলত
অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি >
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ ثَابَرَ عَلَى ثِنْتَىْ عَشَرَةَ رَكَعَةً مِنَ السُّنَةِ بَنَى لَهُ بَيْتٌ فِىْ الْجَنَّةِ اَرْبَعٌ قبلَ الظَّهْرِ وَرَكَعَتَيْنِ بَعْدَ الظّهرِ وَرَكَعْتَيْنِ بَعْدَ الْمغرِبِ وَركعتينِ بَعْدَ الْعِشَاءِ وَرَكَعْتَيْنِ قَبْلَ الْفَجْرِ– (رواه ابن ماجه) عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمْ رَكَعْتَا الْفجر خيرٌ مِنَ الدُّنْيَا وَمَا فِيْهَا- (رواه مسلم- ٤٥٠١/١)
অনুবাদ: হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বার রাকা‘আত সুন্নাত নামায নিয়মিত আদায় করে তার জন্য জান্নাতে একখানা ঘর তৈরী করা হবে। তাহলো জোহরের আগে চার রাকা‘আত, জোহরের পরে দুই রাকা‘আত, মাগরিবের পরে দুই রাকা‘আত, এশার পরে দুই রাকা‘আত, এবং ফজরের আগে দুই রাকা‘আত। [ইবনে মাযাহ্, ১ম খন্ড, হাদীস নং-১১৪০]
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ফজরের দুই রাকা‘আত সুন্নাত নামায দুনিয়া থেকে এবং দুনিয়ার মধ্যে যা কিছু রয়েছে, সবকিছু থেকে উত্তম। [সহীহ্ মুসলিম১/৫০১]
প্রাসঙ্গিক আলোচনা
বর্ণিত হাদীসদ্বয় ও আরো অসংখ্য হাদীস শরীফের বিশুদ্ধ বর্ণনা মতে সুন্নাত নামাযের ফজীলত প্রমাণিত। হাদীস সংশ্লিষ্ট আলোচনার আলোকে সুন্নাতের অর্থ, গুরুত্ব, তাৎপর্য কুরআন হাদীসের সুন্নাত শব্দের ব্যবহার, উপরন্তু হাদীসের আলোকে সুন্নাত নামাযের ফজীলত ও কিছু সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ শরয়ী মাসআলা বর্ণনা করার প্রয়াস পাবঃ
সুন্নতের অর্থ ও তাৎপর্য
প্রখ্যাত অভিধানবেত্তা ইবনুল মানযুর বলেন-
اَلسُّنَّةُ وَمَا تَصَرَّفَ مِنْهَا وَالْاُصُلُ فِيْهِ الطَّرِيْقَةُ وَالسِّيَرَةُ
অর্থাৎ সুন্নাহ এবং তা থেকে নির্গত শব্দের অর্থ হলো, রীতি-পদ্ধতি, পথ নিয়ম জীবন চরিত। [লিসানুল আরব, ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ. ৩৯৯]
কুরআন ও হাদীসে সুন্নাত শব্দের ব্যবহার
পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে সুন্নাত শব্দের উল্লেখ রয়েছে-
سُنَّةَ مَنْ قَدْ اَرْسَلْنَا قَبْلَكَ مِنْ رُسُوْلِنَا وَلاَتَجِدُ لِسُنَّتِنَا تحويلاَ
অর্থাৎ আমার রাসূলগণেল মধ্যে আপনার পূর্বে যাদেরকে পাঠিয়েছিলাম তাদের ক্ষেত্রেও ছিল এরূপ নিয়ম, আর আপনি আমার নিয়মে কোন পরিবর্তন পাবেন না। [সূরা আল ইসরা: আয়াত-৭৭]
এভাবে পবিত্র কুরআনের ১১টি আয়াতে ১৪বার সুন্নত শব্দটি ব্যবহার হয়েছে। মহান আল্লাহ্ তা‘আলা আরো এরশাদ করেছেন-
سُنَّةَ اللّٰهِ فِی الَّذِیْنَ خَلَوْا مِنْ قَبْلُۚ – وَلَنْ تَجِدَ لِسُنَّةِ اللّٰهِ تَبْدِیْلًا- (۶۲)
অর্থাৎ পূর্বে যারা অতীত হয়ে গেছে, তাদের ব্যাপারে এটাই ছিলো আল্লাহর রীতি। আপনি কখনো আল্লাহর রীতিতে কোনো পরিবর্তন পাবেন না। [সূরা আল আহযাব: আয়াত-৬২]
হাদীস শরীফের আলোকে সুন্নাতের বর্ণনা
দৈনিক পঞ্জেগানা ফরজ নামাযের পূর্বাপর আমরা সুন্নাত নামায আদায় করি, অসংখ্য হাদীস শরীফ দ্বারা সুন্নাত নামাযের গুরুত্ব ও ফজীলত প্রমাণিত। যেসব নামায নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরাম আদায় করেছেন তা আমাদের জন্য সুন্নাত হিসেবে গণ্য।
ফজর ও জোহরের সুন্নাত অত্যধিক গুরুত্ববহ
হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
عَنْ عَائِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ لاَيَدْعُ اَرْبَعَا قَبْلَ الظُّهْرِ وَرَكَعَتَيْنِ قَبْلَ الْغَدَاةِ – (رَوَاهُ الْبُخَارِىْ)
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম জোহরের পূর্বে চার রাকা‘আত এবং ফজরের পূর্বের দুই রাকা‘আত, পরিত্যাগ করতেন না। [বোখারী শরীফ]
শরয়ী মাসায়েল
সকল সুন্নাতের মধ্যে ফজরের সুন্নাত সর্বাধিক ফজীলত পূর্ণ। এমনকি ইমামগণ এটাকে ওয়াজিব বলেছেন, বিশুদ্ধ মতানুসারে ফজরের সুন্নাতের পর জোহর নামাযের পূর্বের চার রাকাআত সুন্নতের মর্যাদা।
হাদীস শরীফে এ প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে যে ব্যক্তি তা পরিত্যাগ করবে, সে নবীজির শাফাআত পাবে না। [রদ্দুল মোখতার, বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড, পৃ.-২৩]
জোহর বা জুম্আর সুন্নাত পড়তে পারেনি, ফরজ পড়ে নেবে। ফরজের পর পূর্বের সুন্নাত পড়ে নেবে। উত্তম হলো পরের সুন্নাত আদায়ের পর পূর্বের সুন্নাত পড়ে নেয়া। [ফাতহুল কদীর, বাহারে শরীয়ত ৪র্থ খন্ড]
ফজরের সুন্নাত কাযা হলে
ফজরের সুন্নাত কাযা হলে সূর্যোদয়ের পর পড়ে নেয়া উত্তম। (গুনিয়া), ফরজ নামাযের পর সূর্যোদয়ের পূর্বে পড়া সর্বসম্মতভাবে নিষিদ্ধ।
[রদ্দুল মোখতার, ফাত্ওয়া-এ রজভীয়্যাহ, খন্ড-৩, পৃ. ৪৬২, বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড, পৃ. ২৪]
আসরের সুন্নত
আসরের সুন্নাত শুরু করল এমতাবস্থায় জামাত শুরু হল, তখন দু’ রাকাআত সুন্নাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে জামাতে শামিল হয়ে যাবে। এ সুন্নাত পুনরায় পড়ার প্রয়োজন নেই। [ফাতওয়া-এ রজভীয়্যাহ]
আসরের নামাযের পর কোন প্রকার নফল নামায পড়া নিষেধ। [দুররুল মোখতার, আলমগীরি]
সুন্নাতের প্রকারভেদ: সুন্নাত দু’ প্রকার
১. সুন্নাতে মুআক্কাদাহ, ২. সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদাহ্
সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ হচ্ছে সেই নামায যা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম সর্বদা আদায় করেছেন, ওজর ব্যতীত কখনো ত্যাগ করেননি। যে সুন্নাতের ব্যাপারে শরীয়তের তাগিদ রয়েছে। বিনা ওজরে একবারও বর্জন করলে গুনাহ্গার হবে। কোন কোন ইমাম সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ বর্জনকারীকে পথভ্রষ্ট হিসেবে গণ্য করেছেন। বর্জনে অভ্যস্থ ব্যক্তি ফাসিক, শরয়ী বিধানে তার সাক্ষ্য পরিত্যাজ্য। [বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড]
সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ নামাযের রাকাআত সংখ্যা
১. ফজরের নামাযের পূর্বে দুই রাকাআত
২. জোহরের নামাযের পূর্বে চার রাকাআত, পরে দু’ রাকাআত।
৩. মাগরিবের ফরজের পর দুই রাকাআত
৪. এশার ফরজের পর দুই রাকাআত। মোট বার রাকআত। সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ বিধানগতভাবে ওয়াজিবের কাছাকাছি। [ফাতাওয়া-এ রজভীয়্যাহ্, খন্ড-৩, পৃ. ২৭৯]
জুমাবারে দুই রাকাআত ফরজের পূর্বে চার রাকা‘আত, ফরজের পর প্রথম নিয়্যতে চার রাকাআত, দ্বিতীয় নিয়্যতে দু’ রাকাআত। মোট দশ রাকাআত, সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ আদায় করতে হবে।
সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদাহ্
নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং তাঁর সাহাবায়ে কেরাম অধিকাংশ সময়ে যে নামায আদায় করেছেন, কোন কোন সময় ওজর না থাকা সত্ত্বেও আদায় করেনি। তা সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদাহ্ এর অন্তর্ভুক্ত। উক্ত নামায আদায়ে অসংখ্য সওয়াব রয়েছে। তবে আদায়ের ব্যাপারে কঠোরতা নেই। তিরস্কার বা শাস্তি নেই। সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদাহ্কে সুন্নাতে যায়েদাহ্ও বলা হয়। [দুররুল মোখতার]
আসর নামাযের পূর্বে চার রাকা‘আত এবং এশার নামাযের পূর্বে চার রাকা‘আত সুন্নাতে যায়েদাহ’র অন্তর্ভুক্ত। [বাহারে শরীয়ত]
জুমআর আগে-পরে সুন্নাতের বর্ণনা
জুমুআর সুন্নাত প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- হযরত আবু আবদুর রহমান আস্ সুলামী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু আমাদেরকে নির্দেশ দিতেন যে, যেন আমরা জুম্আর আগে চার রাকাআত এবং পরে চার রাকাআত সালাত আদায় করি। [ফিকহুস সুনানি ওয়াল আমার, ১ম খন্ড, পৃ. ৩০৩]
তাহাবী শরীফে হাদীস বর্ণিত হয়েছে-
عَنْ عَلِىْ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ مَنْ كَانَ مُصَلِيًّا بَعْدَ الْجُمُعَةِ فَلْيُصَلِّ سِتًا – (طحاوى)
অর্থাৎ- হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যদি কেউ জুমুআর পর সালাত আদায় করে তবে সে যেন ছয় রাকাআত সালাত আদায় করে। [তাহাবী শরীফ]
মাসআলা
জুমুআর পূর্বে চার রাকাআত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ পরে চার রাকাআত পড়বে অতঃপর দু’ রাকাআত পড়বে। যেন উভয় হাদীসের উপর আমল হয়ে যায়।
[গুনিয়া, বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড]
আসরের ফরজের পূর্বে চার রাকাআত সুন্নাতে যায়েদাহ্ প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে-
عَنْ اِبْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَحِمَ اللهُ اِمْرًا صَلَّى قَبَلَ الْعَصْرِ اَرْبَعًا-) رواه الترمذى(
অর্থাৎ হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে ওমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আল্লাহ্ সেই ব্যক্তিকে রহমত করুন। যে ব্যক্তি আসরের পূর্বে চার রাকাআত সালাত আদায় করে। [তিরমিযী, ফিকহুস সুনানি ওয়াল আসার]
আসরের চার রাকাআত সুন্নাতে যায়েদা সময় সুযোগের অভাবে চার রাকাতের স্থলে দু’ রাকাআত আদায় করারও অনুমতি রয়েছে।
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে
عَنْ عَلِىْ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلذَمَ كَانَ يُصَلِّىْ قَبْلَ الْعَصْرِ رَكَعَتَيْنِ- (رواه ابو داود)
অর্থাৎ হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আসরের পূর্বে দু রাকাআত সালাত আদায় করেছেন। [আবু দাউদ]
মাগরিবের সুন্নাত
মাগরিবের ফরজের পর দু’ রাকাআত সুন্নাতে মুআক্কাদাহ্ প্রসঙ্গে এরশাদ হয়েছে-
عَنْ عَآئِشَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ كَانَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُصَلِّىْ الْمَغْرِبَ ثُمَّ يَرْجِعُ اِلى بَيْتِىْ فَيُصَلِّىْ رَكَعْتَيْنِ-
হযরত আয়েশা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাগরিবের ফরজ সালাত আদায় করতেন, এরপর তিনি আমার ঘরে ফিরে এসে দু’ রাকআত সালাত আদায় করতেন। [ইবনে মাজাহ্, ১ম খন্ড, হাদীস নং-১১৬৪]
মাগরিবের পর ছয় রাকাআত আওয়াবীন নামায
عَنْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اَنَّ النَّبِىَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ مَنْ صَلَّى بَعْدَ الْمَغْرِبِ سِتَّ رَكَعَاتٍ لَمْ يَتَكَلَّمُ بَيْنَهُنَّ بِسُوْءٍ عُدِلْنَ لَه بِعَبَادِةِ ثِنْتَىْ عَشْرَةَ سَنَةً- )رواه ابن ماجه(
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি মাগরিবের পরে ছয় রাকাআত সালাত আদায় করবে এবং এর মাঝখানে কোন মন্দ কথা বলবেনা, তাকে বার বছর ইবাদতের সাওয়াব দেওয়া হবে। [ইবনে মাযাহ, ১ম খন্ড, হাদীস-১১৬৭]
মাগরিবের নামাযের পর ছয় রাকাআত সালাতুল আওয়াবীন পড়া খুবই ফজীলতপূর্ণ। হাদীস শরীফে এসেছে, যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাআত নামায পড়বে তার গুনাহ্ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণ হয়। [তিরমিযী, মুমিন কি নামায, পৃ. ১২৬]
সুন্নাত ও নফল নামায ঘরে পড়া উত্তম
ফকীহগণের বর্ণনা মতে সুন্নাত ও নফল নামায মসজিদের চেয়ে ঘরে পড়া উত্তম। নবীজি একদল লোককে মসজিদে নফল নামায আদায় করতে দেখে এরশাদ করেন- عَلَيْكُمْ بِهذِه الصَّلواةِ فِى الْبُيُوْتِ – [رواه الترمذى والنساء]
তোমরা ওসব নামায ঘরে আদায় করবে। [তিরমিযী ও নাসাঈ] কিন্তু তারাবীহ্ নামায তাহিয়্যাতুল মসজিদ এবং সফর হতে প্রত্যাবর্তন করে দু’ রাকাআত নফল নামায মসজিদে পড়া উত্তম। ইতিকাফ পালনকারী নফল নামায এবং সূর্যগ্রহণের নামায মসজিদে পড়বে। [বাহারে শরীয়ত ৪র্থ খন্ড]
যদি ঘরে ব্যস্ততা ও একাগ্রতা কম হওয়ার আশঙ্কা হয় তখন মসজিদে পড়বে। [রদ্দুল মোহতার]
তবে অনেক সময় নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরাম মসজিদেই সুন্নত ও নফল আদায় করতেন। তবে তারাবীহ্র ক্ষেত্রে জামাতের বিধান থাকার কারণে মসজিদে আদায় করা উত্তম। [বাহারে শরীয়ত, ৪র্থ খন্ড]
লেখক: অধ্যক্ষ- মাদ্রাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), হালিশহর, বন্দর, চট্টগ্রাম।