কুরআন মজীদ আল্লাহর সর্বোত্তম কিতাব

0
কুরআন মজীদ আল্লাহর সর্বোত্তম কিতাব
অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি

عَنْ جَابِرٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِنَّ خَيْر الحديث كتاب اللهِ وخير الهدى هدى محمد صلى الله عليه وسلم
[رواه مسلم] عَنْ مَالِك بْنِ اَنَسٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْه ِوَسَلَّمَ تَرَكت فِيْكُمْ امرين لن تضلوا ما تمسكتم بهما كتاب الله وسنة رسوله
[ الموطا للاامام المالك]

অনুবাদ: হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, সর্বোত্তম বাণী হচ্ছে আল্লাহর কিতাব, সবচেয়ে উত্তম পথ হচ্ছে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের দেখানো পথ। [সহীহ্ মুসলিম] হযরত মালিক ইবনে আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, আমি তোমাদের মধ্যে দু’টি বিষয় রেখে যাচ্ছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা এ দু’টিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরবে কখনো তোমরা বিভ্রান্ত হবে না। তা হলো আল্লাহর কিতাব (আল কুরআন) ও তাঁর রসূলের সুন্নাত (আল হাদীস)। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক]

প্রাসঙ্গিক আলোচনা
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব মহাগ্রন্থ আল কুরআন ও অন্যান্য নবী রাসূলের প্রতি অবতীর্ণ আসমানী কিতাবসমূহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ঈমানের তৃতীয় মূলনীতি বা মৌলিক ফরজ। যুগে যুগে নবী রসূলগণের উপর আসমানী কিতাব ও অসংখ্য সহীফা অবতীর্ণ হয়েছে, এর প্রকৃত সংখ্যা আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। তবে পবিত্র কুরআনে প্রসিদ্ধ চারখানা কিতাব ও কয়েকটি সহীফা অবতরণের কথা ঘোষিত হয়েছে। সংক্ষিপ্ত বা সামগ্রিকভাবে নাযিলকৃত সব আসমানী কিতাবের উপর ঈমান আনা মু’মিন মুসলমানদের উপর ফরজ করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআন ও পূর্ববর্তী সকল কিতাবের উপর ঈমান আনা ফরজ। হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ মহাগ্রন্থ আল কুরআনসহ পূর্ববর্তী সকল আসমানী কিতাবের উপর ঈমান না থাকলে মু’মিন হিসেবে গণ্য হবে না।
পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
وَ الَّذِیْنَ یُؤْمِنُوْنَ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْكَ وَ مَاۤ اُنْزِلَ مِنْ قَبْلِكَۚ-
(মুত্তাকী তারাই) যারা ঈমান আনে আপনার (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম) উপর অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি এবং আপনার পূর্বে অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি। [সূরা আল বাক্বারা: আয়াত-৪] বর্ণিত আয়াতের ব্যাখ্যায় তাফসীরে নাঈমী প্রণেতা হাকিমুল উম্মত মুফতি আহমদ ইয়ার খান নঈমী রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন, যেমনিভাবে পবিত্র কুরআন মেনে নেওয়া অপরিহার্য, তেমনি আসমানী কিতাবসমূহের উপর ঈমান রাখা আবশ্যকীয়। তবে এ ক্ষেত্রে ঈমান নেয়ার মধ্যে দু’ ধরনের পার্থক্য রয়েছে,
১. সমস্ত কুরআন মেনে নেয়াও অপরিহার্য এবং এর (মুহকাম) যেসব আয়াতের অর্থ সুস্পষ্ট আয়াতগুলোর উপর আমল করাও অপরিহার্য।
২. অন্যান্য আসমানী কিতাবগুলো পূর্ববর্তী নবীদের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল সবগুলো সত্য; কিন্তু সেগুলোর উপর আমল করা আমাদের উপর কর্তব্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। পবিত্র কুরআনের বিধানাবলী সবিস্তারে জানা অপরিহার্য কিন্তু পূর্ববর্তী কিতাবগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা আমাদের জন্য প্রয়োজন নেই। [তাফসীরে নাঈমী ১ম খন্ড] পবিত্র কুরআনে আরো এরশাদ হয়েছে-
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اٰمِنُوْا بِاللّٰهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ الْكِتٰبِ الَّذِیْ نَزَّلَ عَلٰى رَسُوْلِهٖ وَ الْكِتٰبِ الَّذِیْۤ اُنْزَلَ مِنْ قَبْلُؕ-
অর্থ: হে মু’মিনগণ, তোমরা আল্লাহ তাঁর রাসূল এবং তিনি যে গ্রন্থ তাঁর রসূলের (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের) প্রতি (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন এবং যে কিতাব তিনি পূর্বে অবতীর্ণ করেছেন এ সবের প্রতি ঈমান আন। [সূরা নিসা: আয়াত-১৩৬]

প্রসিদ্ধ আসমানী কিতাবসমূহ
নবী রসূলগণের উপর অবতীর্ণ আসমানী চারটি প্রসিদ্ধ কিতাব ও কয়েকটি সহীফার বর্ণনা পবিত্র কুরআনে এসেছে।
প্রথম: ১. সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের উপর হযরত জিবরাঈল আলায়হিস্ সালামের মাধ্যমে ২৩ বছর ব্যাপী কুরআন মজীদ অবতীর্ণ হয়েছে। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন-تَبٰرَكَ الَّذِیْ نَزَّلَ الْفُرْقَانَ عَلٰى عَبْدِهٖ لِیَكُوْنَ لِلْعٰلَمِیْنَ نَذِیْرَ اۙ
অর্থ: বরকতময় সেই মহান সত্তা যিনি তাঁর বান্দা (মুহাম্মদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের প্রতি ফুরকান (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন, যেন তিনি সমগ্র জগতবাসীকে ভীতি প্রদর্শন করেন। [সূরা ফুরকান: আয়াত-১] যে কুরআন মানবজাতির জন্য খোদাপ্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন।
وَ نَزَّلْنَا عَلَیْكَ الْكِتٰبَ تِبْیَانًا لِّكُلِّ شَیْءٍ
অর্থ: আমি প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ আপনার প্রতি কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করলাম। [সূরা নাহ্ল: আয়াত-৮৯] যে কুরআনের আদ্যপান্ত, প্রতিটি অক্ষর প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাণী প্রতিটি ঘটনা, নিরেট অকাট্য সত্য। এতে সন্দেহ সংশয়ের কোন অবকাশ নেই। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন-ذٰلِكَ الْكِتٰبُ لَا رَیْبَ ﶈ فِیْهِ ۚۛ -هُدًى لِّلْمُتَّقِیْنَۙ
অর্থ: এই সেই কিতাব এতে কোন সন্দেহ নেই, মুত্তাকীদের জন্য যা পথ নির্দেশক। [সূরা বাক্বারা: আয়াত-২] উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহার বর্ণনা মতে এ কুরআনে রয়েছে- ৬৬৬৬টি আয়াত (প্রসিদ্ধ মত)
আল কুরআনে বিষয়ভিত্তিক আয়াতের বিন্যাস
জান্নাতের ওয়াদা বিষয়ক ১০০০ আয়াত, জাহান্নামের ভয় বিষয়ক ১০০০, আদেশসূচক ১০০০, নিষেধ সূচক ১০০০, উদাহরণ ১০০০, ঘটনাবলী সংক্রান্ত ১০০০, হারাম বিষয়ক ২৫০, হালাল বিষয়ক ২৫০, আল্লাহর তাসবিহ্ পবিত্রতা বিষয়ক ১০০, বিবিধ ৬৬, মোট-৬৬৬৬।
কুরআনের শব্দ সংখ্যা ৮৬,৪৩০, কুরআনের অক্ষর সংখ্যা ৩২৩৭৬০, আল্লামা সুয়ুতীর মতে ৩২৩৭৬১, তিলাওয়াতে সিজদা ১৪, এক বর্ণনায় ১৫, মোট সূরা ১১৪, মক্কী সূরা ৮৬, মাদানী সূরা ২৮।
দ্বিতীয়ত: তাওরাত: এটি হযরত মুসা আলায়হিস্ সালামের উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব, এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
نَزَّلَ عَلَیْكَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ وَ اَنْزَلَ التَّوْرٰىةَ
وَ الْاِنْجِیْلَۙ(۳) مِنْ قَبْلُ هُدًى لِّلنَّاسِ وَ اَنْزَلَ الْفُرْقَانَ۬ؕ-
অর্থ: তিনি (আল্লাহ্) সত্যসহ আপনার প্রতি কিতাব (কুরআন) অবতীর্ণ করেছেন, যা এর পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সমার্থক, আর তিনি অবতীর্ণ করেছেন, তাওরাত ও ইনজিল ইতোপূর্বে মানব জাতির সৎপথ প্রদর্শনের জন্য এবং তিনি কুরআনও অবতীর্ণ করেছেন। [সূরা আলে ইমরান: আয়াত-৩-৪] আল্লাহ্ তা‘আলা আরো এরশাদ করেছেন-وَ لَقَدْ اٰتَیْنَا مُوْسَى الْكِتٰبَ وَ قَفَّیْنَا مِنْۢ بَعْدِهٖ بِالرُّسُلِ
অর্থ: এবং আমি নিশ্চয়ই মূসা আলায়হিস্ সালামকে কিতাব দিয়েছি এবং এরপর পর্যায়ক্রমে রাসূলগণকে প্রেরণ করেছি। [সূরা বাক্বারা: আয়াত-৮৭] তাওরাত সম্পর্কে গবেষকদের অভিমত হলো বারেল স¤্রাট বখতে নসর, মসজিদুল আকসায় আক্রমণ করে হাজার হাজার নারী পুরুষকে নির্বিচারে হত্যা করে তাদের অগণিত লোকদের বন্দী করে। আল্লাহর ঘর মসজিদুল আকসায় তারা হামলা করে হযরত সোলায়মান আলায়হিস্ সালাম’র নিদর্শনাদিতে অগ্নিসংযোগ করে এবং হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামের প্রতি অবতীর্ণ আসমানী কিতাব তাওরাতসহ যাবতীয় কিতাব জ্বালিয়ে তারা ভস্মিভূত করে। [আন নাবিয়ুল খাতাম, মানাযির আহসান গিলানী] তৃতীয়ত: যবুর এটি অবতীর্ণ হয়েছিল হযরত দাউদ আলায়হিস্ সালামের উপর পবিত্র কুরআনে যবুর সম্পর্কে এরশাদ হয়েছে-
وَ لَقَدْ كَتَبْنَا فِی الزَّبُوْرِ مِنْۢ بَعْدِ الذِّكْرِ اَنَّ الْاَرْضَ یَرِثُهَا عِبَادِیَ الصّٰلِحُوْنَ اِنَّ فِیْ هٰذَا لَبَلٰغًا لِّقَوْمٍ عٰبِدِیْنَؕ
অর্থ: ‘‘আমি উপদেশের পর যবুর কিতাবে লিখে দিয়েছি যে, আমার যোগ্যতা সম্পন্ন বান্দাগণ, পৃথিবীর অধিকারী হবে। এতে রয়েছে বাণী, সে সম্প্রদায়ের জন্য যারা ইবাদত করে। [সুরা আম্বিয়া: আয়াত-১০৫-১০৬] আরো এরশাদ হয়েছে-وَاتَيْنَا دَاودَ زَبُوْرَا অর্থ: আমি দাউদকে যাবুর দিয়েছিলাম। [সূরা নিসা: আয়াত-১৬৩] চতুর্থ: ইঞ্জিল: এটি হযরত ঈসা (আলায়হিস্ সালামের উপর অবতীর্ণ আসমানী কিতাব। হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালামের উপর ইঞ্জিল শরীফ অবতীর্ণ হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে
وَ قَفَّیْنَا عَلٰۤى اٰثَارِهِمْ بِعِیْسَى ابْنِ مَرْیَمَ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ مِنَ التَّوْرٰىةِ۪-وَ اٰتَیْنٰهُ الْاِنْجِیْلَ فِیْهِ هُدًى وَّ نُوْرٌۙ-وَّ مُصَدِّقًا لِّمَا بَیْنَ یَدَیْهِ مِنَ التَّوْرٰىةِ وَ هُدًى وَّ مَوْعِظَةً لِّلْمُتَّقِیْنَؕ
অর্থ: ‘‘মরিয়ম তনয় ঈসাকে তাঁর পূর্বে অবতীর্ণ তাওরাতের সমর্থকরূপে ওদের পশ্চাতে প্রেরণ করেছিলাম এবং তার পূর্বে অবতীর্ণ তাওরাতের সমর্থকরূপে এবং মুত্তাকীদের জন্য পথ নির্দেশ ও উপদেশরূপে তাকে ইনজীল দিয়েছিলাম। তাতে ছিলো পথের নির্দেশ ও আলো।
[সূরা মায়িদা: আয়াত-৪৬] বর্ণিত প্রসিদ্ধ চারটি কিতাব ব্যতীত পবিত্র কুরআনে হযরত ইব্রাহীম্ আলায়হিস্ সালাম ও হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামের সহীফার কথা উল্লেখ হয়েছে।
এরশাদ হয়েছে- اِنَّ هذَا لَفِى الصُّحُفِ الْاولى صحف ابراهيم وموسى অর্থ: এতো আছে, পূর্ববর্তী গ্রন্থে ইবরাহীম ও মুসার গ্রন্থে-
[সূরা গাশিয়া, আয়াত-১৮-১৯] এতে বুঝা যায় হযরত মুসা আলায়হিস্ সালামের উপর তাওরাত ছাড়াও কিছু সহীফা অবতীর্ণ হয়েছিল।
এভাবে নবী ও রসূলগণের উপর যে আসমানী কিতাব ও সহীফাসমূহ নাযিল হয়েছিল এর কতিপয়ের বর্ণনা কুরআনে উল্লেখ হয়েছে।
আরো অনেক সহীফা রয়েছে যেগুলোর বর্ণনা আল্লাহ্ তা‘আলা কুরআনে দেননি, তাওরাত, যাবুর, ইঞ্জিল, এসব কিতাব বর্তমান পৃথিবীতে বিদ্যমান থাকলেও এগুলো পৃথিবীর কোথাও অবিকৃতরূপে নেই। ইয়াহুদী খৃস্টানগণ এতে মনগড়া সংযোজন বিয়োজন করে বহু বিকৃতি করেছে। একমাত্র আমাদের নবী, সমগ্র সৃষ্টিকুলের নবী, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের উপর অবতীর্ণ সর্বশেষ আসমানী কিতাব মহাগ্রন্থ আল কুরআন করীম অবিকৃত রয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত থাকবে।
আসমানী কিতাব ১০৪টি, প্রসিদ্ধ কিতাব চারটি ১০০টি হলো সহীফা, যথা আদম আলায়হিস্ সালামের উপর অবতীর্ণ ১০টি, হযরত শীষ আলায়হিস্ সালামের উপর ৫০টি, হযরত ইদ্রিস আলায়হিস্ সালামের উপর ৩০টি, হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালামের উপর ১০টি।
যুগে যুগে ইয়াহুদী খৃস্টানগণ সংযোজন বিয়োজন পরিবর্তন পরিমার্জন করে কিতাবের মূল অস্তিত্বকে ক্ষত বিক্ষত করেছে। একমাত্র মহাগ্রন্থ আল কুরআনই অবিকৃত ঐশীগ্রন্থ হিসেবে যেমনটি নাযিল হয়েছিল তেমনি চিরকালই থাকবে। এর প্রতিটি আয়াত ও সূরা লক্ষ লক্ষ হাফিজে কুরআনের বক্ষে কিয়ামত অবধি সংরক্ষিত থাকবে। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন- اِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْر وَاِنَّا لَه لَحَافِظُوْنَ
অর্থ: নিশ্চয়ই এ কুরআন আমিই নাযিল করেছি আর আমিই এর সংরক্ষণকারী। [সূরা হিজর: আয়াত-১৪] আল্লাহর কুরআন ও প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের সুন্নাহ্ তথা আল হাদীস বিশ্ব মানব জাতির জন্য এক অসীম অফূরন্ত জ্ঞান ভান্ডার। ইসলামের নবী বিশ্বমানবতার মুক্তির লক্ষ্যে কুরআনের প্রতিটি বিধান তাঁর পবিত্র জীবনে বাস্তবায়ন ও কার্যকর করে দেখিয়ে গেছেন। তাঁর অনুসৃত জীবনাদর্শই আমাদের সার্বিক সুখ শান্তি, সমৃদ্ধি কল্যাণ সাফল্য ও মুক্তির পাথেয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর হিদায়ত নসীব করুন। আমিন।
লেখক: অধ্যক্ষ- মাদ্রাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), হালিশহর, বন্দর, চট্টগ্রাম।
শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •