প্রবন্ধআমলসংবাদ মুসলমান ঈমানদারের দুনিয়াবী জীবন প্রণালী ও আখিরাত প্রকাশ করেছেন admin - Mon 13 Safar 1443AH 20-9-2021AD 0 মুসলমান ঈমানদারের দুনিয়াবী জীবন প্রণালী ও আখিরাত সৈয়দ মুহাম্মদ মনছুরুর রহমান হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি আমল ছাড়া কবরে গেল সে ঐ ব্যক্তির ন্যায় যে সুমদ্র পথে রওয়ানা দিল জাহাজ ছাড়া। হযরত ওমর ফারুক রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, দুনিয়াতে ইজ্জত সম্মান ও মর্যাদা লাভের মাধ্যম হচ্ছে সম্পদ। আখেরাতের ইজ্জত সম্মান ও মর্যাদা লাভের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে আমলে সালেহ তথা ভাল কাজ। হযরত ওসমান যিন্নুরাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, দুনিয়াবী চিন্তা ও ব্যস্ততা অন্তরে অন্ধকার সৃষ্টি করে, পক্ষান্তরে পরকালের চিন্তা-যিকির অন্তরকে আলোকিত করে। হযরত আলী মারতাদ্বা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি দ্বীনি জ্ঞান অর্জনে ব্যস্ত থাকে, বেহেশত তাকে স্বাগত জানানোর জন্য ফুলের মালা নিয়ে অপেক্ষা করে। যে ব্যক্তি পাপ কাজের পেছনে লেগে থাকে, জাহান্নাম তাকে গ্রাস করার জন্য অপেক্ষা করে। হযরত ইয়াহ্ইয়া বিন মা‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, ভদ্র মানুষের পক্ষ থেকে কখনো নাফরমানি বা অবাধ্যতা প্রকাশ পায় না এবং জ্ঞানী মানুষ কখনো আখিরাতের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দেয় না। হযরত আ‘মাশ রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, যে ব্যক্তির মৌলিক সম্পদ হয় পরহেযগারী ও খোদাভীরুতা, তার দ্বীনি উন্নতি ও লাভের আলোচনা করে শেষ করা যবানের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি দুনিয়াকে তার মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেছে তার দ্বীনি ক্ষতির কথা বর্ণনা করে শেষ করাও যবানের পক্ষে সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি গুনাহর কাজ করেও হাসে, আল্লাহ্ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন কান্নাকাটি করা অবস্থায় বা কান্নাকাটি করতে থাকবে। যে ব্যক্তি নেক (ভাল) কাজ করার পরও কান্নাকাটি করবে, আল্লাহ্ তা‘আলা তাকে হাসতে থাকা অবস্থায় বেহেস্তে প্রবেশ করাবে। ছোট ছোট গুনাহ্ (অর্থাৎ সগীরা গুনাহ্) সাধারণ ও মামুলী ব্যাপার মনে করবে না। কেননা, সগীরা গুনাহ্ করতে থাকলে এই সগীরা গুনাহ্ একদিন কবীরা গুনাহ্ করার ক্ষেত্রে ভয় হবে না, অর্থাৎ সগীরা গুনাহ্ করলে কবীরা গুনাহ্ করতে মনে ভয় থাকবে না। কাশ্ফ কারামত ওয়ালা আরেফ বিল্লাহ্গণের তাওয়াজ্জুহ হচ্ছে আল্লাহ্ তা‘আলার প্রশংসার প্রতি, যাহেদগণের উদ্যেশ্য হচ্ছে বেশী বেশী দু’আ করা। আরেফ বিল্লাহ্দের মূল লক্ষ্য হচ্ছে স্বয়ং আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন, যাহেদগণের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তার নফস, অর্থাৎ তার নফস জাহান্নামের আযাব থেকে বেচে থেকে জান্নাতের নেয়ামতরাজী লাভের আশা। কুপ্রবৃত্তির তাড়নায় বাদশাহ্দেরকে গোলামে পরিণত করে, পক্ষান্তরে ধৈর্য গোলামদেরকেও বাদশাহীর আসনে সমাসীন করে। যেমন হযরত ইউসুফ আলায়হিস্ সালাম ও যুলাইখা। আলিমদের জীবনে কোথাও কোন অপরিচিতি নেই। কারণ তারা যেখানেই যাবেন লোকেরা তাদের জ্ঞান ও শ্রেষ্ঠত্বের কারণেই তাদেরকে সম্মান ও মর্যাদা দান করবে, আর জাহেলদের কোন ঠিকানা নেই, তারা মূর্খতার দায়ে সর্বত্র অপরিচিত থাকে। শরীর ও দেহের নড়াচড়া করা যেমন জীবনের অস্তিত্বের প্রমাণ, অনুরূপ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের আনুগত্যে ও ইবাদতে মগ্ন থাকা- আল্লাহর মা‘রেফতের উজ্জ্বল প্রমাণ। রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন সব ধরনের গুনাহের মূলে দুনিয়ার মহব্বত। ইহসান বা নেয়ামতের প্রতি অসম্মান করা তিরস্কারযোগ্য, অনুরূপ আহমকের সঙ্গলাভ করাটাও কুলক্ষণ। [সূত্র: আল্লামা ইবনে হাজর আসকালানী (রাহ.)] শেয়ার