মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকী
মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেনيا ايها الناس قد جاءكم برهان من ربكم وانزلنا اليكم نورا مبينا অর্থাৎ হে মানব কুল নিশ্চয় তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের প্রতি উজ্জ্বল আলো অবতীর্ণ করেছি। (সুরা নিসা আয়াত নং-১৭৫)
অত্র আয়াতে برهان তথা সুস্পষ্ট প্রমাণ বলতে বিশ্ব কুল সরদার সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র সত্তা কে বুঝানো হয়েছে, যা সত্যতার পক্ষে মু‘যিজার সাক্ষ্য বহন করে, এবং কাফির মুনাফিকদের বিবেক বুদ্ধিকে হতভম্ভ করে দেয়। ইমাম কুরতুবী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- রাসুলুল্লাহ-এর পুর্নাঙ্গ প্রকাশ আমাদের কাছে হয় নাই।যদি হতো তাহলে আমাদের আঁখি যুগল তাঁকে পুরোপুরি অবলোকন করতে অসমর্থ হয়ে পড়তো।
(আল মাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যা ২য় খন্ড ১২৮ পৃঃ)
নির্ভরযোগ্য তথ্যাবলির মাধ্যমে শারীরিক গঠন মোবারকের বর্ণনা প্রকাশ করা হলো।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দৈহিক সৌন্দর্য
রাসুল কে মহান আল্লাহ তায়ালা অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী করে পাঠিয়েছেন, তাঁর দৈহিক সৌন্দর্য্য অতুলনীয়, যা বর্ণনা করে শেষ করা সত্যিই দুস্কর। হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনÑ كان النبي احسن الناس মহানবী ছিলেন অধিক সৌন্দয্যের অধিকারী। (বুখারী,হাদিস নং ৬০৩৩)
বারা ইবনে আযিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন ما رايت شيءا قط احسن منه আমি রসুলুল্লাহ হতে অধিক সুন্দর কখনো কোনো কিছুই দেখিনি। (বুখারী পৃঃ ৭২৯)
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- আমি এক চাঁদনী রজনীতে লাল ডোরাকাটা লুঙ্গী ও চাদর পরিহিত অবস্থায় রাসুলুল্লাহকে দেখলাম।আমি কখনো চাঁদের দিকে আবার কখনো রাসুল এর দিকে তাকাচ্ছিলাম, পরিশেষে সিদ্ধান্তে পৌছলাম যে, তিনি চাঁদের চেয়েও অধিক সুন্দর। (তিরমিযী হাদিস নং Ñ ২৮১৬)
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন
من رسول الله صلى الله عليه وسلم كانما الشمس تجرى فى وجهه احسن مارايت شيءا
আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চেয়ে বেশী সুন্দর কোন কিছু দেখেনি, তাহার ললাটে যেন সূর্য প্রবাহিত ছিল। (ইবনে হিব্বান ২য় খন্ড পৃঃ নং ৯৪৫)
হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনÑ لم ارى قبله ولا بعده مثله আমি রাসুলসাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর পূর্বে ও পরে তাঁহার ন্যায় সুন্দর কোন লোক দেখি নাই। (শামাইলে তিরমিযী)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সৌন্দর্যের বর্ণনা অনেক সাহাবায়ে কিরাম থেকে বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, এখানে কয়েকটি মাত্র তুলে ধরা হলো।
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মুখমন্ডল মোবারকের বর্ণনা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মুখমন্ডল এতই সুন্দর ছিলো যে সাহাবায়ে কেরাম তাঁর মুখমন্ডলকে চন্দ্র সুর্যের সাথে তুলনা করেছেন। বাস্তবিক পক্ষে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর চেহেরা মোবারক চন্দ্র সুর্যের চেয়ে বেশী উজ্জ্বল ও দ্বীপ্তিমান।
হযরত বারা ইবনে আযিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كان رسول الله صلى الله عليه وسلم احسن الناس وجها রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চেহেরা মোবারক ছিল সকল মানুষের চেয়ে সর্বাধিক সুন্দর। (বুখারী পৃঃ ৭২৯)
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চেহেরা কি তরবারির ন্যায় ছিল? উত্তরে তিনি বললেন-لا بل مثل الشمس والقمر وكان مستديرا না বরং চন্দ্র সুর্যের ন্যায় উজ্জল ও গোলাকার। (মুসলিম হাদিস নং ২৩৪৪)
হযরত আবু তুফাইল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে জিজ্ঞাসা করা হল ارايت رسول الله صلى الله عليه وسلم قال نعم كان ابيض ومليح الوجه আপনি কি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছেন তিনি বললেন, হ্যাঁ তিনি ছিলেন গৌর বর্ণের লাবণ্যময় চেহেরা বিশিষ্ট। (মুসলিম,হাদিস নং ২৩৪০)
হযরত কাব ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন كان اذا سرا ستنار وجهه كانه قطعة قمرরাসুলসাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন কোন কারণে উৎফুল্ল হতেন তখন তাঁর মুখমন্ডল উজ্জল্যের কারণে চমকাতে থাকতো। মনে হতো যেন চন্দ্রের একটি টুকরা। (সহীহ আল জামে আসসগীর ৪র্থ খন্ড পৃঃ ২২২)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মস্তক মোবারকের বর্ণনা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মস্তক মোবারকের আকার ছিল কিছুটা বড়। হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর মস্তক ছিল ضخم الراس (কিছুটা বড়)
(শামায়িল ইমাম তিরমিযী) হযরত হিন্দ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন كان عظيم الهامة রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম -এর পবিত্র মস্তক একটু বড় ছিল। (মুখতাসারুশ শামাইলিল পৃঃ ১৮ইমাম তিরমিযী শামায়েল পৃঃ ৮)
চুল মোবারকের বর্ণনা
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চুল মোবারক ছিল অত্যন্ত চমৎকার; অত্যধিক কুঞ্চিতও ছিল না, আবার একেবারে সোজাও ছিল না। হযরত কাতাদা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে জিজ্ঞাসা করলাম كيف كان شعر رسول الله صلى الله عليه وسلم قال كان شعرا رجلا ليس بالجعد ولا السبط بين اذنيه وعاتقه রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর চুল মোবারক কেমন ছিল? তাঁহার চুল মোবারক না খুব বক্র ছিল আর না খুব সরল।তাঁহার মাথার চুল দুই কানের মধ্য পর্যন্ত লম্বা ছিল। (মুসলিম হাঃ ৪৫০৯)
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর চুলের বণর্নায় বলেন Ñ شديد سواد الشعر তাঁর চুল ছিল খুবই কালো। (জামে আস সগীর ৪র্থ খন্ড ১৯৯পৃঃ হাদিস নং ৪৫০৯)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর তিন ধরনের চুল রাখার বণর্না হাদিস শরীফে পাওয়া যায়।
১.আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كان شعر رسول الله الى نصف اذنيه রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর কেশগুচ্ছ কানের অর্ধেক পযর্ন্ত প্রলম্বিত ছিল। (শামায়েল তিরমিযী পৃঃ ২৮)
২. হযরত বারা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- له شعر يبلغ شحمة اذنيه তাঁর চুল তাঁহার দুই কানের লতি পযর্ন্ত পৌছত। (বুখারী পৃঃ৭২৯ হাদিস নং৩৫৫১)
৩. হযরত বারা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন ان حمته لتصرب قريبا من منكبه তাঁহার মাথার চুল তাঁহার কাঁধ পযর্ন্ত পৌছত। (বুখারী,লিবাস ১২৬১ পৃঃ)
উল্লেখিত হাদিস থেকে বলা যায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর তিন ধরনের চুল ছিল, জুম্মাহ, লিম্মাহ, ও ওয়াফরাহ। মাথার চুল লম্বা হয়ে কাঁধ পযর্ন্ত পৌছালে জুম্মাহ বলা হয়, আর ঘাড়ের মধ্যেভাগ পযর্ন্ত পৌছালে ইহাকে লিম্মাহ বলা হয়, এবং কর্ণমূল বা কানের মধ্যভাগ পযর্ন্ত পৌছালে ওয়াফরাহ বলা হয়।
চুল আচঁড়ানো
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চুল মোবারক গুলো খুবই সুন্দরভাবে পরিপাটি ও আচঁড়িয়ে রাখতেন। হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন –
ان رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يسدل شعره وكان المشركون يفرقون رؤسهم فكان اهل الكتاب يسدلون رؤسهم وكان رسول الله صلى الله عليه وسلم يحب موافقه اهل الكتاب خيما لم يؤمى فيه بشيء ثم فرق رسول الله صلى الله عليه وسلم راسه
যে সব ব্যাপারে কোন ওহী নাযিল হয়নি, সে সব বিষয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আহলে কিতাবের সহিত সামঞ্জস্য রাখাকে পছন্দ করতেন।তৎকালে আহলে কিতাবগণ তাদের মাথার চুল সোজা ছাডিয়া রাখিত। আর মুশরিকরা সিঁতি কাটিয়ে চুলগুলোকে দুই ভাগ করতো। মহানবীসাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম সিথি না কেটে পিছনের দিকে ঝুলিয়ে রাখতেন। অবশ্য পরে তিনি সিঁথি কেটেছেন। (বুখারী মানাকিব পৃষ্টা ৭৩০হাদিস নং ৩৫৫৮)
হযরত আয়শা সিদ্দিকা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كنت ارجل راس رسول الله صلى الله عليه وسلم وانا حاءض আমি ঋতুবতী অবস্থায় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মাথা আঁচড়িয়ে দিতাম। (শামায়েলে তিরমিযী)
দাড়ি মোবারক
রাসুলসাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দাড়ি মোবারক অত্যন্ত ঘন ও কালো ছিল।তিনি দাড়িতে তেল ও চিরুনী ব্যবহার করতেন, বিশটির মতো চুল-দাড়ি সাদা হয়েছিলো। হযরত আনাস ইবনে মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনÑ وليس في راسه ولحيته عشرون شعرة بيضاءরাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন ইন্তেকাল করেন, তখন তাঁহার মাথায় ও দাড়িতে বিশটি চুল ও সাদা ছিলনা। (বুখারী মানাকিব পৃঃ ৭২৮ হাদিস নং ৩৫৪৭)
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু কে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চুলের শুভ্রতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনÑ كان اذا ادهن راسه لم يرمنه شيء واذا لم يدهن যখন তিনি তৈল ব্যবহার করতেন তখন কিছু দেখা যেত না , আর যখন তিনি তৈল ব্যবহার করতেন না তখন কিছু দেখা যেত।
(বুখারী পৃঃ ৭২৮ হাদিস নং ৩৫৪৫)
চুল ও দাড়িতে খেযাব লাগানো
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চুল ও দাড়িতে খেযাব লাগাতেন কিনা তা নিয়ে মত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়, কোন কোন বর্ণনায় মেহেদীর খেযাব করেছেন, আবার অন্য বর্ণনায় খেযাব ব্যবহার না করার বণর্না ও এসেছে। যেমন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাওহাব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনÑ دخلت على ام سلمة فاجرجت الينا شعرا من شعر النبي صلى الله عليه وسلم مخضوبا আমি হযরত উম্মে সালামাহ্ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর নিকট গমন করলে তিনি আমাদের কাছে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম খেযাবকৃত কিছু চুল বাহির করলেন।
(বুখারী পৃঃ ১২৪১ হাদিস নং ৫৮৯৭)
হযরত ইবনে সীরীন রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হযরত আনাস ইবনে মালেক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে জিজ্ঞাসা করেনÑ هل كان رسول الله صلى الله عليه وسلم حضب؟ فقال لم يبلغ الخضاب كان في لحيته كعشرات بيض রাসুলসাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম কি কলপ ব্যবহার করতেন? তার কলপ ব্যবহারের প্রয়জনই দেখা দেয়নি। কারণ, তার দাড়িতে প্রায় দশখানা কেশ সাদা ছিল। (মুসলিম শরীফ ২য় খন্ড পৃঃ ২৫৮)
এ বিষয়ে সহীহ হাদিস বিদ্যমান, কলেরব বৃদ্ধির আশংকায় অন্যান্য রেওয়ায়েত গুলো আনা হয়নি। তবে উভয় হাদিসের সামঞ্জস্য বিধানে বলা যায়, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যেই তেল ব্যবহার করতেন, তা খেযাবের মতো দেখাতো।
গোঁফ মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম গোফ মোবারক কেটে ছোট করে রাখতেন।হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كان النبي صلى الله عليه وسلم يقصب او ياخذ من شاربه মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাহার গোফ মোবারক কেটে ছোট করে রাখতেন। (তিরমিযী পৃঃ ৯৩ হাদিস ২৭৬০)
কপাল মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর কপাল মোবারক ছিল প্রশস্ত।হযরত হিন্দ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كان واسع الجبينরাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর কপাল মোবারক ছিল প্রশস্ত।
(শামায়েলে তিরমিযী)
হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كان اذا نزل الوحى عليه ثقل لذالك وتحدر جبينه عرقا كانه الحمان وان كان فى البرد যখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর উপর ওহী নাযিল হতো,তখন তিনি গম্ভীর হয়ে যেতেন, এবং তাহার কপাল হতে মুক্তার ন্যায় ঘাম ঝরে পড়তো, এমনকি শীতকালেও।
(সিললাতুল আহাদিস আসÑ সহীহ ৫ম খন্ড পৃষ্টা ১২৪)
ভ্রু মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ভ্রƒদ্বয় ছিল সরু, ঘন পৃথক পৃথক। হিন্দ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বণর্না করেনÑ ازج الحولجب سوابغ من غير قرن بينهما عرق يدره الغضب তাহার ভ্রƒদ্বয় ছিল সরু, ঘন ও পৃথক পৃথক।একত্রে মিলিত ছিলনা।ভ্রƒদ্বয়ের মধ্যে একটি রগছিল যাহা ক্রোধের সময় স্পষ্ট হয়ে উঠত। (শামায়েল তিরমিযী)
চক্ষু মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর চক্ষু মোবারকের মনি অত্যন্ত কালো,লাল ডোরাযুক্ত, দীর্ঘ ও কোমল ছিল।হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর মতে-তাঁহার চক্ষুদ্বয় ছিল – اسود الحدقة চক্ষুর মনি অত্যন্ত কালো।
(সহীহ আল জামে আস সগীর ৪র্থ খন্ড পৃঃ ১৯৭)
হযরত জাবির সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনা মতে তাহার চক্ষুদ্বয় ছিল اشكل العينলাল ডোরাযুক্ত অর্থাৎ চক্ষুদ্বয়ের সাদা অংশ লাল আভা মিশ্রিত ছিল।
(মুসলিম হাদিস নং ২৩৩৯)
হযরত আলী ইবনে আবু তালেব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বণর্না মতে তাহার চক্ষুর পাতা ছিল اهدف الشفار দীর্ঘ ও কোমল। (শামাইল)
নাসিকা মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নাক মোবারক অতিসুক্ষ ও দীর্ঘ ছিল। হিন্দ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর মতে Ñতাহার নাক ছিল افتى العرنين له نور يعلوه يحسبه من لم تامله اشم সামান্য উচু ও দীর্ঘ এবং উহাতে জ্যোতি জলমল করত। কেহ গভীরভাবে না দেখলে উহাকে উচু নাক বিশিষ্ট মনে হইত, কিন্তু ভালোভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যেত নুরের আতিশয্যে উহা উচু মনে হচ্ছে । ( ইমাম তিরমিযী শামায়েল পৃঃ ৯)
মুখ গহ্বর মোবারক
হিন্দ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর মতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মুখ গহ্বর ছিল ضليع الفم যথোপযুক্ত প্রশস্ত ও বৃহৎ ছিল। যা সুস্পষ্ট আলোচনার প্রতিক হিসেবে আরবে প্রশংসিত ছিল।
(ইমাম তিরমিযী, শামায়েল-পৃঃ ৯)
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন كان رسول الله صلى الله عليه ضلسع الفم রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ছিলেন যথোপযুক্ত প্রশস্ত মুখ গহ্বরের অধিকারী। (মুসলিম হাদিস নং২৩৩৯)
দন্ত মোবরক
তাঁহার দন্ত মোবারক ছিল চকচকে উজ্জল এবং সম্মুখের দাঁতে সামান্য ফাঁক ছিল-হযরত ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-كان رسول الله صلى الله عليه وسلم افلج الثنيتين اذا تكلم رؤي كالنور يخرج من بين ثناياه রাসুল صلى الله عليه وسلم এর সামনের দন্ত মোবারক প্রশস্ত ছিল।যখন কথা বলতেন তখন তার দন্ত মোবারক থেকে নূর বের হত। (মিশকাত ৫১৮ পৃঃ দারেমী)
হযরত আবু হুরাইরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন ان النبي صلى الله عليه وسلم اذا ضحك يتلالؤ فى الجدر রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন হাসতেন তখন দন্ত সমুহ থেকে নূরের কিরণ বের হতো যা থেকে দেওয়াল সমুহ আলোকিত হয়ে উঠতো। (খাসায়েসে কুবরা, খন্ড-১,পৃঃ-৮)
উভয় কাঁধ মোবারক
হযরত বারা ইবনে আযিব রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন- كان النبي صلى الله عليه وسلم مربوعا بعيد ما بين المنكبينরাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম মাঝারী গড়নের ছিলেন।তাঁহার উভয় কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান প্রশস্ত ছিল। (বুখারী পৃঃ ৭২৯ হাদিস নং৩৫৫১)
হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনা মতে جليل المشاش والكتد তাঁহার দুই কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান মোটা ও মাংসল ছিল। (ইমাম তিরমিযী,শামায়েল )
ঘাড় মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ঘাড় মোবারক ছিল খুবই সুন্দর। হিন্দ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন Ñ كان عنقه جيد دمية فى صفاء الفضة তাঁহার ঘাড় এমন সৌন্দর্যময় ছিল,যেমন মুর্তির ঘাড় পরিস্কার ভাবে খোদাই করা থাকে এবং উহা রৌপ্যবর্ণ,উজ্জল ও সৌন্দর্য্যময় ছিল । (ইমাম তিরমিযী শামায়েল পৃঃ -৯)
বক্ষ মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বক্ষ মোবারক ছিল সমতল ও চওড়া। হিনদ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন – سواءا لبطن والصدر عريض الصدر তাঁহার পেট ও বক্ষ সমতল ছিল। (শামায়েল ইমাম তিরমিযী)
পেট মোবারক
হিনদ ইবনে আবু হালা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর বনর্ণা মতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর পেট মোবারক ছিল سواء الطف সমতল। (ইমাম তিরমিযী,শামায়েল পৃঃ ৯)
মাসরুবা মোবারক
বক্ষদেশ হতে নাভি পযর্ন্ত কেশের সরু রেখাকে মাসরুবা বলা হয়।হযরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর طويل المسربة বক্ষ হতে নাভি পযর্ন্ত সরু কেশের দীর্ঘ রেখা সম্পন্ন ছিলেন।
(তিরমিযী, মানকীব ,হাদিস নং ৩৬৪৮)
পিঠ মোবারক
হযরত আবু হুরায়রা বলেনÑ كان اذا اوضع رداء عن منكبيه فكانه سبيطة فضة রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁহার উভয় কাঁধ হতে চাদর সরাতেন তখন মনে হতো যেন তাঁহার পিঠ রৌপ্য দ্বারা তৈরী।
(জামে আসসগীর)
হস্তদ্বয় মোবারক
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর উভয় হাত ছিল মাংসল ও লম্বা।হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন-كان النبي صلى الله عليه وسلم ضخم اليدين রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর উভয় হাত ছিল মাংসল ও লম্বা। (বুখারী শরীফ পৃঃ ১২৬২ হাদিস নং ৫৯০৭)
দুই হাতের তালু
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনÑ وكان بسط الكفين রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর দুই হাতের তালু ছিল চওড়া। (বুখারী শরীফ পৃঃ ১২৬২)
হাতের কোমলতা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর মুবারক হস্তদ্বয় কোমল ছিল। হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন – مامست حريرا ولا ديباجا الين من كف النبي الله صلى الله عليه وسلم কোন রেশম কিংবা কোন চাদরকে ও আমি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর হাতের তালু অপেক্ষা অধিকতর কোমল পাইনি। (বুখারী হাঃ ৩৫৬১)
শীতলতা ও সুগন্দ্বি
হযরত আবু জুহায়ফা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদা আমি মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর হাত ধরে আমার চেহারায় বুলাতে লাগলাম তখন আমার মনে হলো فاذا هي اجرد من الثلج واطيب راءحة من المسك তাঁহার হাত মোবারক বরফ অপেক্ষা অধিক শীতল এবং মেশক অপেক্ষা অধিক সুগন্ধি যুক্ত। (বুখারী হাদিস ৩৫৫৩)
বগলদ্বয় মোবারক
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর বগলদ্বয় খুবই শুভ্র ছিল। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মালিক ইবনে বুহায়না রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন -ان النبي الله صلى الله عليه وسلم كان اذا صلى فرج بين يديه حتى يبدو بياض ابطيه মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম যখন সিজদা করতেন, তখন উভয় হাতকে পার্শদেশ হতে ফাঁকা রাখতেন।ফলে তাঁহার উভয় বগলের শুভ্রতা দেখা যেত। (বুখারী শরীফ হাদিস নং ৩৯০)
পা মোবারক
হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন -كان النبي صلى الله عليه وسلم ضخم القدمين حسن الوجه لم ارا بعد مثله নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পা মোবারক ছিল মাংসল,চেহারা মোবারক ছিল সুন্দর। আমি তাঁহার পরে তাঁহার অনুরূপ কাউকেও দেখেনি। (বুখারী শরীফ হাদিস নং ৫৯০৯)
হযরত মায়মুনা বিনতে কারদাম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন -رايت رسول الله صلى الله عليه وسلم فما نسيت طويل اصبع قدميه السبابة على ساءر اصابعه আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি তাঁহার পাদ্বয়ের দ্বিতীয় আঙ্গুল সকল আঙ্গুলের মধ্যে লম্বাছিল,আমি ইহা ভুলিনি। (আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যা ২য় খন্ড,২৯২পৃঃ)
শরীরের রং মোবারক
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু এর বর্ণনা মতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ছিলেন ازهر اللون ليس بابيض امهق ولا ادم গোলাপী রংয়ের তাঁহার শরীরের রং না ছিল ধবধবে সাদা আবার না ছিল একবারে কড়া বাদামী
(বুখারী শরীফ হাদিস নং ৩৬৪৯)
হযরত আবুত তুফাইল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন Ñ كان ابيض مليحا مقصدا তাঁহার দেহের বর্ণ লাবণ্যময় ও কমনীয় ছিল। (শামায়েল তিরমীযি)
ঘাম মোবারক
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন Ñما شممت عنبرا قط ولا مسقا ولا شيءا اطيب من ريح رسول الله صلى الله عليه وسلم রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম -এর দেহের ঘাম হতে অধিক সুগন্ধিময় কোন সুগন্ধি আমি কখনো শুকি নাই। (মুসলিম,ফাদাইল Ñ হাদিস ২৩৩০)
হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন –
دخل علينا النبي صلى الله عليه وسلم فقال عندنا فعرق وجاءت امى بقارورة فجعلت تسلت العرق فيها فاستيقظ النبي صلى الله عليه وسلم فقال يا ام سليم ما هذا الذي تصنعين قالت هذا عرقك نجعله في طيبنا وهو من اطيب الطيب
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাদের ঘরে আসলেন এবং দুপুরের বিশ্রাম গ্রহন করলেন। অতপর তাঁহার শরীর হতে ঘাম নির্গত হচ্ছিল। আমার একটি শিশিতে নির্গত ঘাম জমা করতে লাগলেন।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন ,হে উম্মে সুলাইম! তুমি ইহা কী করিতেছ? তিনি বললেন হে আল্লাহর রাসুল!এগুলি আপনার ঘাম এগুলি আমি আমাদের সুগন্ধির সাথে মিশাবো,আর আপনার ঘাম হলো সেরা সুগন্ধি। (মুসলিম Ñহাদিস নং ২৩৩১)
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন Ñ
ان النبي صلى الله عليه وسلم لم يسلك طريقا او لا يسلك طريقا فيتبعه احد الا عرف انه قد سلكه من طيب عرقه او قال من ريح عرقه
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম কোনো রাস্তা দিয়ে গেলে এবং কেহ তাঁহার পিছনে বাহির হলে সে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ঘামের সুগদ্ধির কারণে সে বুঝতে পারতো তিনি এই রাস্তা দিয়ে গমন করেছেন। ইমাম দারমী। (আস সহীহ Ñ১ম খন্ড পৃঃ – ৯০)
শারীরিক উচ্চতা মোবারক
হযরত বারা (রদ্বি.) বলেন- كان النبي صلى الله عليه وسلم مربوعا নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম মধ্যম গড়নের ছিলেন। (বোখারী শরীফ,হাদিস নং-৩৫৫১)
হযরত আনাস (রদ্বি,) বলেন- كان ربعة من القوم ليس بالطويل ولا بالقصير মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মাঝারী গড়নের। বেশী লম্বা ছিলেন না বা বেঁটে ও ছিলেন না। (বোখারী শরিফ,হাদিস নং-৩৫৪৭)
শরীরের চামড়া মোবারক
হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনÑ اردفني رسول الله صلى الله عليه وسلم خلفه في سفر فما مسست شيءا قط من جلده এক সফরে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাকে বাহনের উপর তাঁহার পশ্চাতে বসালেন, তখন আমার মনে হলো তাঁহার চামড়া অপেক্ষা অধিক মোলায়েম কোন কিছু আমি কখন ও স্পর্শ করিনি। (আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যা ২য় খন্ড ২৮২ পৃঃ)
মাহরে নাবুওয়াত মোবারক
হযরত জাবির ইবনে সামুরা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন Ñ رايت الخاتم عند كتفه مثل بيضة الحمامة يشبه جسده আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম -এর দুই কাধের মধ্যখানে মাহরে নাবুওয়াত দেখেছি,তা ছিল কবুতরের ডিমের মতো লাল বর্ণের একটি মাংস পিন্ড। (মুসলিম Ñহাদিস নং ২৩৪৪)
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সারজিস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন
اتيت رسول الله صلى الله عليه وسلم وهو في ناس من اصحابه فدرت هكذا من خلفه فعرف الذي اريد فالقى الرداء عن ظهره فرايت موضع الحاتم على كتفيه مثل الجمع حولها خيلان كانها فاليل فرجعت حتى استقبلته আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আসলাম,তখন তিনি কতিপয় সাহাবীর সহীত বসা ছিলেন। আমি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর পেছনে এমনভাবে ঘুরতে লাগলাম যে, তিনি আমার মনোভার বুঝতে পেরে,নিজ পিঠ মোবারক হতে চাদরটি সরিয়ে দিলেন।তখন আমি তাঁহার দুই কাধের উপরে মাহরে নাবুওয়াত দেখতে পাই।ইহার আকৃতি ছিল মুষ্টিবদ্ধ আঙ্গুলির অনুরূপ এবং চতুস্পার্শে¦ ছিল কতগুলি এমন তিল যাহা আছিলের মতো মনে হতো। (তিরমীযি শামায়েল পৃঃ২৬)
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর নূরানী তনু মোবারক ছিল রাব্বুল আলামীনের কুদরতের এক মহা নিদর্শন, সত্য প্রকাশে এক প্রদীপ্ত সূর্য। সৃষ্টির অতুলনীয় এক মহা বিস্ময়।সকল শ্রেণির মানুষের জন্য এক মহা আদর্শ। মহান আল্লাহ তায়ালার মারেফাতের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
লেখক: প্রভাষক (আরবী), ফতেপুর মঞ্জুরুল ইসলাম সিনিয়র মাদ্রাসা, হাটহাজারী।