সূরা ফাতিহার ফযীলত ও বৈশিষ্ট

0
অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهَ قَالَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ ‏”‏ قَالَ اللهُ تَعَالَى قَسَمْتُ الصَّلاَةَ بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي نِصْفَيْنِ وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَنِىْ فَإِذَا قَالَ الْعَبْدُ ‏الْحَمْدُ لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ‏‏‏ قَالَ اللهُ تَعَالَى حَمِدَنِي عَبْدِي وَإِذَا قَالَ ‏‏الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ‏‏ قَالَ أَثْنَى عَلَىَّ عَبْدِي ‏‏ وَإِذَ قَالَ ‏ مَالِكِ يَوْمِ الدِّينِ‏‏ قَالَ اللهُ تَعَالى مَجَّدَنِي عَبْدِي وَإِذْ قَالَ ‏‏ إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ‏‏ قَالَ اللهُ تَعَالى هَذَا بَيْنِي وَبَيْنَ عَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ فَإِذَا قَالَ ‏اهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيمَ صِرَاطَ الَّذِينَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلاَ الضَّالِّينَ قَالَ هَذَا لِعَبْدِي وَلِعَبْدِي مَا سَأَلَ ‏”
অনুবাদ: প্রসিদ্ধ সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেছেন, নামায আমার ও আমার বান্দার মধ্যে অর্ধেক করে ভাগ করা হয়েছে, আমার বান্দার ভাগে তা-ই রয়েছে যা সে চায়। বান্দা যখন ‘আলহামদু লিল্লাহি রাব্বিল আলামী’ন বলে তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে, যখন বান্দা বলে ‘আর রাহমানির রাহীম’ তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার মহিমা বর্ণনা করেছে, যখন বান্দা ‘মালিকি ইয়াউমিদ্দীন’ বলে, আল্লাহ্ বলেন আমার বান্দা আমার মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছে, যখন বান্দা ‘ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্তাঈন’ বলে আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে পারস্পরিক ব্যাপার আমার বান্দা তা-ই পাবে যা সে চেয়েছে। এরপর বান্দা যখন ‘ইহদিনাস্ সিরাতাল মুস্তাকীম, সীরাতাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম গায়রীল মাগদ্বূবী আলায়হিম ওয়া লাদ্ব দ্বোয়াল্লী-ন পর্যন্ত বলে তখন আল্লাহ্ বলেন, এসব আমার বান্দার জন্য আমার বান্দা যা চায় তা-ই তাকে দেওয়া হবে।
[মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৩৯৫]

প্রাসঙ্গিক আলোচনা
বর্ণিত হাদীস শরীফে সূরা ফাতিহা শরীফের ফযীলত আলোকপাত হয়েছে। মহাগ্রন্থ আলকুরআনের ১১৪টি সূরার মধ্যে সূরা ফাতিহা একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা। এ সূরার গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে অসংখ্য হাদীস শরীফ ও তাফসীরের গ্রন্থসমূহে অনেক বর্ণনা পাওয়া যায়।

ফাতিহা নামকরণ
ইমাম রাগিব ইস্পাহানী রহমাতুল্লাহি আলায়হির মতে ফাতিহা শব্দটি আরবি ‘ফাতহুন’ শব্দ থেকে নির্গত। এর অর্থ – ازالة الاغلاق والشكال কোন আবদ্ধ জিনিষকে খুলে দেওয়া, বিপদাপদ ও প্রতিবন্ধকতা দূর করাকে ফাত্হ বলা হয়। [আল-মুফরদাত-, পৃ. ৩৭.] এ অর্থের আলোকে এমন বিষয়কে ফাতিহা বলা হয়, যা সমস্যা বিপদ ও প্রতিবন্ধকতা দূরীভূত করে। সম্পর্ক স্থাপনের পথ সুগম করে। সংক্ষেপে বলা যায় যে, ‘ফাতিহা’ অর্থ আরম্ভ করা, উদ্বোধন করা, উদঘাটন করা ও শুরু করা। এটাকে ফাতিহাতুল কুরআন’ বা কুরআনের শুরু বা সূচনা সূরা হিসেবে অভিহিত করা হয়। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামের উপর সর্বপ্রথম সূরা ‘আলাক’ এর প্রথম পাঁচটি আয়াত অবতীর্ণ হয়। তবে একটি পূর্ণাঙ্গ সূরা হিসেবে সূরা ফাতিহাই প্রথম অবতীর্ণ হয়। এ সূরা দ্বারা কুরআনের উদ্বোধন করা হয়।
এ সূরার আয়াত সংখ্যা- সাত, শব্দ সংখ্যা সাতাশ, বর্ণ, একশত চল্লিশ।
সূরা ফাতিহার অনুবাদ
আল্লাহ তা‘আলা এরশাদ করেছেন, ১. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি মালিক সমস্ত জগদ্ববাসীর। ২. পরম দয়ালু করুণাময়। প্রতিদান দিবসের মালিক, ৩. আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করি, ৫. আমাদেরকে সোজা পথে পরিচালিত করো, ৬. তাঁদেরই পথে যাঁদের পথে তুমি অনুগ্রহ করেছো ৭. তাদের পথে নয় যাদের উপর গযব নিপতিত হয়েছে এবং পথভ্রষ্টদের পথে নয়। [তরজমা কানযুল ঈমান: সূরা ফাতিহা, আয়াত-১-৭]
সূরা ফাতিহার বিশটি নাম: ফযীলত ও বৈশিষ্ট্য
১. ফাতিহা, এ নামটি সবচেয়ে প্রসিদ্ধ তেইশ বছর ব্যাপী কুরআন অবতরণকালে এটিই সর্বপ্রথম অবতীর্ণ সূরা।
২. ফাতিহাতুল কিতাব (কিতাবের সূচনা) এ নামের দ্বারা বুঝা যায় এ সূরার মাধ্যমে কুরআনের সূচনা হয়েছে। হযরত উবাদা ইবনে সামিত রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, لاَ صَلوةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَءَ بِفَاتِحَةِ الْكِتَابِ অর্থ: যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা পাঠ করেনি তার নামায হয়নি। [মুসনাদে আহমদ, খন্ড-৫, পৃ.-৪২২, তাফসীরে ইবনে কাসীর, খন্ড-১, পৃ. ১২] ৩. উম্মুল কুরআন (কুরআনের মূল) ৪. উম্মুল কিতাব (কিতাবের মূল), এ দু’টি নামও হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত। হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে- لاَ صَلوةَ لِمَنْ لَمْ يَقْرَ بِاُمِّ الْقُرْانِ যে ব্যক্তি স্বীয় নামাযে উম্মুল কুরআন পড়েনি, তার নামায হবে না। [মুসনাদে আহমদ, খন্ড-৫, পৃ. ৬২২] ৫. সূরাতুল কান্য (ভা-ার সূরা) আরবিতে ‘কানয’ অর্থ ভান্ডার, এ নাম করণের বহুবিধ তাৎপর্য রয়েছে, এ সুরা জাহেরী বাতেনী, ঈমান, হিদায়ত। আল্লাহর গুপ্ত রহস্যাবলীর ভান্ডার এ সূরা। আল্লাহর পক্ষ থেকে নবীজির উপর অবতীর্ণ এ সূরা এমন এক বিশেষ জ্ঞান ভান্ডার যা আল্লাহ্ তা‘আলা অন্য কোন নবীদেরকে দান করেননি।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল, ইমাম বুখারী, ইমাম মুসলিম, ইমাম তিরমিযী, ইমাম আবু দাউদ, ইমাম নাসাঈ, ইমাম ইবনে মাযাহ্, ইমাম মালিক, ইমাম ওয়াকিদি এবং অন্যান্য ইমামগণ কর্তৃক সহীহ্ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
সূরা ফাতিহার সাদৃশ্য অন্য কোন সূরা নাযিল হয়নি
হযরত উবাই ইবনে কাব ও হযরত আবূ সাঈদ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত হয়েছে হযরত উবাই ইবনে কা’ব বর্ণনা করেন, আমি নামাযরত ছিলাম, এমতাবস্থায় রাসূলূল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাকে আহ্বান করলেন। আমি কোনো সাড়া দেইনি, নবীজি পুনরায় আহ্বান করলেন, আমি দ্রুত নামায সমাপ্ত করে নবীজির খিদমতে উপস্থিত হলাম। সালাম আরজ করলাম, নবীজি বললেন, এতক্ষণ কিসের কাজে নিয়োজিত ছিলে? কেন সাড়া দাওনি? আরজ করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম নামাযে ছিলাম, নবীজি এরশাদ করলেন, তুমি কি আল্লাহর এ নির্দেশ শুননি?
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اسْتَجِیْبُوْا لِلّٰهِ وَ لِلرَّسُوْلِ اِذَا دَعَاكُمْ لِمَا یُحْیِیْكُمْۚ-
অর্থ: হে ঈমানদারগণ, আল্লাহ্ ও রাসূলের আহ্বানে হাজির হও, যখন রসূল তোমাদেরকে সে বস্তুর জন্য আহ্বান করেন, যা তোমাদেরকেও জীবন দান করবে। [সূরা: আনফাল: আয়াত-২৪] আরজ করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ভুল হয়ে গেল, আগামীতে এমনটি আর হবে না, অতঃপর নবীজি বললেন শুনোঃ
والذى نفسى بيده مانزلت فى التوراة ولافى الانجيل ولافى الزبور والافى القران مثلها [رواه الترمذىي] তোমাদেরকে এমন এক সূরা সম্পর্কে বলছি, আল্লাহর শপথ যার কুদরতী হস্ত মুবারকে আমার প্রাণ, আল্লাহ্ তা‘আলা এ সূরার সাদৃশ্য তাওরীত, ইঞ্জিল, যবুর এবং কুরআনেও অনুরূপ সূরা নাযিল করেননি।
[তিরমিযী, ২য় খন্ড, পৃ. ১১৫]
৬. সূরা নূর (জ্যোতি সূরা)
একদা এক ফিরিস্তা নবীজির দরবারে উপস্থিত হয়ে আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
ابشر بنورين قد اوتيتهما لم يوتهما بنى قبلك فاتى الكتاب وخواتيهم سورة البقرة [رواه مسلم] আপনাকে এমন দু’টি নূর দান করা হয়েছে, যা আপনার পূর্বের কোন নবীকে দান করা হয়নি। একটি সূরা ফাতিহা দ্বিতীয় সূরা বাক্বারার শেষের তিন আয়াত। [মুসলিম শরীফ, খন্ড-১ম, পৃ. ২৭১]
৭. সাবউল মাসানী
সাত আয়াত সম্বলিত বারবার পঠিত সূরা এ নাম প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে-
ولقد اتينك سبعا من المثانى والقران العظيم
অর্থ: এবং আমি নিশ্চয় আপনাকে সপ্ত আয়াত প্রদান করেছি, যেগুলো পুনঃপুন আবৃত হয় এবং শ্রেষ্ঠত্ব সম্পন্ন কোরআন। [সূরা হিজর, আয়াত-৮৭] সাত আয়াত সম্বলিত এ সূরা হিজরতের পূর্বে মক্কা মুকাররমায় এবং হিজরতের পরে মদীনা মুনাওয়ারায় দু’বার অবতীর্ণ হয়। এ কারণে এটিকে সাবউল মাসানী বলা হয়।
৮. সূরাতুল হামদ (প্রশংসার সূরা)
এ সূরার প্রারম্ভে ‘আলহামদু’ শব্দ রয়েছে, এ জন্যই সূরাতুল হামদ নামে অভিহিত করা হয়। আরবিতে ‘আলহামদুলিল্লাহ্’ লিখতে আটটি আরবি বর্ণ রয়েছে, বেহেস্তের দরজা আটটি। যে ব্যক্তি ইখলাসের সাথে সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করবে। সে জান্নাতের আটটি দরজা দিয়েই প্রবেশ করার অধিকারী হবেন। [তাফসীরে নাঈমী: খন্ড-১ম]
৯. সূরাতুস সালাত (নামাযের সূরা)
সূরা ফাতিহা নামাযে পড়া ওয়াজিব, তা পরিত্যাগ করলে নামায পরিপূর্ণ হবে না। অন্যসব সূরা ও আয়াতসমূহ একটির পরিবর্তে অন্যটি পড়া যাবে কিন্তু সূরা ফাতিহার পরিবর্তে অন্য কোনসূরা পড়া যাবে না। এটি নামাযের জন্য এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এটি ছাড়া নামাযই পরিপূর্ণ হয় না।
১০. সূরা ওয়াফিয়া
আরবিতে ওয়াফিয়া শব্দের অর্থ পূর্ণ করা। এ সূরার বিশেষত্ব হচ্ছে নামাযের প্রতিটি রাকাতে এ সূরাটি পুরোটা পাঠ করতে হবে। অর্ধেক পড়া জায়েয নেই।
যে সব সূরার আয়াত কমপক্ষে ছয় বা তদুর্ধ যেগুলো ভাগ করে দু’ রাক্‘আতে অর্ধেক অর্ধেক পড়া যাবে। কিন্তু সূরা ফাতিহার ক্ষেত্রে এটা জায়েজ নেই। এটি ইমাম ছালভীর অভিমত, ইমাম ফখরুদ্দীন রাজিও তাফসীরে কবীরেও এ মত বর্ণনা করেছেন।
১১. সূরাতুশ শিফা (শিফার সূরা)
এ সূরা সকল রোগের শিফা স্বরূপ। ইমাম বায়হাকী শুআবুল ঈমানে সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- فاتحة الكتاب شفاء من كل داءٍ
অর্থ: সূরা ফাতিহা প্রত্যেক রোগ থেকে শিফা দানকারী [তাফসীরে কবীরি, খন্ড-১ম, পৃ. ১৭৬]
১২. সূরা রুকইয়াহ্
রুক্ইয়া অর্থ রক্ষা পাওয়া ও নিরাপদে থাকা। হাদীস শরীফে হযরত আনাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-
اذا وضعت جنبك على الفرائش وقرات فاتحة الكتاب وقل هو الله احمد ـ فقد امنت كل شئٍ الا الموتة
যখন তোমরা বিচানায় শয়নকালে সূরা ফাতিহা ও সূরা ইখলাস পাঠ করবে, তখন মৃত্যু ব্যতীত সকল কিছু থেকে নিরাপদে থাকবে। [ইবনে কাসীর, খন্ড-১ম, পৃ. ১২] ১৩. সূরা কাফিয়াহ্ (প্রাচুর্য সম্পন্ন সূরা), ১৪. সূরা শাফিয়াহ্ (আরোগ্য দায়ক সূরা), ১৫. সূরাতুদ্ দো‘আ (প্রার্থনার সূরা), ১৬. তালীমুল মাসআলা (মাসআলা শিক্ষা), ১৭. সুরাতুল মুনাজাত (মুনাজাতের সূরা), ১৮. সূরাতুত্ তাফবিদ (আত্ম নিবেদনের সূরা), ১৯. সুরাতুস্ সাওয়াল (যাঞ্চার সূরা) এবং ২০. ফাতিহাতুল কুরআন (কুরআনের সূচনা)
মাসআলা
ইমাম ও একাকী নামায আদায়কারীর জন্য নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব। তবে ইমামের পিছনে মুক্তাদি চুপ থাকবে।
হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে- قِراةُ الْاِمامِ لَه قراةٌ ইমামের পাঠ করাই মুক্তাদির পাঠ।
পবিত্র কুরআনে মুক্তাদিকে নিরব থাকার ও ইমামের কিরআত শ্রবণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাসআলা
জানাযার নামাযে দোআ স্মরণ না থাকলে দোআর নিয়্যতে সূরা ফাতিহা পাঠ করা জায়েয। কিরআতের নিয়তে জায়েয নয়। [আলমগীরি, কানযুল ঈমান ও খাযাইনুল ইরফান]
এ সূরা বিষয়বস্তু
এতে মহান আল্লাহর প্রশংসা, তাঁর প্রতিপালকত্ব, দয়া, অনুগ্রহ, করুণা, বিচার দিবসে তাঁর মহত্ব, ইবাদতের একক সত্ত্বা, বান্দার প্রতি সঠিক পথের নির্দেশনা। ইবাদত তারই জন্য নির্দিষ্টকরণ, সাহায্য ও হিদায়ত প্রার্থনা, নিয়ামতপ্রাপ্ত বান্দাদের পথে চলার শিক্ষা, পথভ্রষ্ট ও অভিশপ্তদের পথ বর্জন করা ও ঘৃণা করার শিক্ষা, বিশেষিত হয়েছে। এক কথায় ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে বান্দার করণীয় ও বর্জনীয় নির্দেশনা এ সূরায় আলোকপাত হয়েছে।
হে আল্লাহ্ আমাদেরকে সঠিক পথের উপর ইস্তিকামত নসীব করুন। আমিন।
লেখক: অধ্যক্ষ- মাদ্রাসা-এ তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল (ডিগ্রী), হালিশহর, বন্দর, চট্টগ্রাম।
শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •