মাওলানা মুহাম্মদ আনিসুর রহমান রিজভি
বর্তমান আমাদের দেশে বহু বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটেছে যা দেশীয় সংস্কৃতি চর্চার ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায়। এসব বিজাতিয় সংস্কৃতি আমাদের তরুণ-তরুণীদেরকে দারুণভাবে প্রভাবিত করছে। ইহুদি-খ্রিষ্টানদের এসব অপসংস্কৃতি লালনের মাধ্যমে সহজেই তরুণ সমাজ নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনার দিকে ধাবিত হচ্ছে। র্যাগ ডে মূলত পালিত হচ্ছে আমাদের দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেপরোয়া ও বিপথগামী তরুণ-তরুণী কর্তৃক। তাদের সমাপনী পরীক্ষার দিন বা তার পরের দিনকে উপলক্ষ করে। এতে নানা ধরনের বেহায়াপনা, উলঙ্গপনা ও গর্হিত অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়। এ দিবসকে কেন্দ্র করে তরুণ-তরুণীরা যা করে বা করছে তা বর্ণনাতীত, অত্যন্ত নিন্দিত ও গর্হিত। এসব নির্লজ্জতা ও বেহায়াপনাকে কোন সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী ব্যক্তি কখনো মেনে নিতে পারে না। র্যাগ ডে’র নাম দিয়ে তারা সেখানে সহপাঠীদের মধ্যে টি-শার্ট বিতরণ, গান-বাজনা, ঢোল-তবলা, রং মাখামাখি, অবৈধ মেলামেশা, উদ্ধত চলাফেরা, ইভটিজিং, ব্যভিচারসহ নানা অশ্লীল কর্মকা- করে থাকে যা ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণরূপে হারাম। সোশ্যাল মিডিয়াতে যা দেখেছি, তাতে সুশীল সমাজ খুবই মর্মাহত। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের থেকে দেখে বর্তমান মাধ্যমিক স্তরের স্কুলের উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীরা তাদের স্কুলের শেষ দিনে র্যাগ ডে নামের এই বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতাকে বেছে নিয়েছে, যা জাতির জন্য অশনি সংকেত। নিম্নে বিষয়টির আলোকে বিস্তারিত আলোকপাত করার প্রয়াস পাচ্ছি।
Rag Day-এর শাব্দিক অর্থ
‘Rag’গোলমাল’ বা ‘হৈহুল্লোড়’ আর ‘Day’ শব্দের অর্থ ‘দিন’ বা ‘দিবস’। সুতরাং, ‘Rag Day’ শব্দের অর্থ ”হৈহুল্লোড়ের দিন’ বা ‘গোলমাল দিবস’। একে ‘টেনা দিন’ও বলা হয়ে থাকে।A day on which university students do silly things for charity; often the culmination of rag week.
সংজ্ঞাঃ বছরের যে দিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বাৎসরিক ”হৈহুল্লোড়ের দিন’, তাকে টেনা দিন, গোলমাল দিবস বা “Rag Day” বলে।
ব্যাখ্যা: ‘Rag’ শব্দের অর্থ আর স্কুল কলেজের শেষ দিন এক নয়। স্কুল কলেজের শেষ দিন হল সমাপনী। আর র্যাগ ডে হলো-ইন্টারনেট ঘেঁটে যতদূর জানা যায়, এটি সম্ভবত গ্রীক কালচার। সপ্তম-অষ্টম শতকে খেলার মাঠে টিমে স্পিরিট নিয়ে আসার জন্য র্যাগিংয়ের প্রচলন শুরু হয়। র্যাগ শব্দটি মূলত ইংরেজি র্যাগিং থেকেই এসেছে। আর ইউরোপে প্রচলন ঘটে অষ্টম শতকের মাঝামাঝি। ১৮২৮-১৮৪৫ সালের দিকে র্যাগ সপ্তাহের প্রচলন ঘটে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। বিশেষ করে ছাত্র সংস্থা- পাই, আলফা, বিটা, কাপ্পা এ সপ্তাহটির প্রচলন ঘটাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিল।
আমাদের দেশে র্যাগ ডে’র প্রচলন
যদিও এ সংস্কৃতি আমাদের দেশের তথা বাঙালি সংস্কৃতি নয়, তথাপি আমাদের দেশে এ সংস্কৃতি অনুপ্রবেশ করতে মোটেই সময় লাগেনি। এ অপসংস্কৃতি আমাদের দেশে এখন খুব সহজেই সমাজের সকলের কাছে পরিচিত হয়ে উঠছে। তবে আরো মজার ব্যাপার হলো, ইউরোপ-আমেরিকায় এর যাত্রা হলেও বর্তমানে আমাদের এশিয়াতেই এর ব্যবহার সর্বাধিক পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের বাংলাদেশ এ গর্হিত কাজকে নিঃসংকোচে ও নির্লজ্জভাবে পালন করে আসছে।
র্যাগ ডে’র নামে ভয়াবহ অশ্লীলতা
র্যাগ ডে’র নাম দিয়ে এভাবে অশ্লীল কাজ ও বেহায়াপনায় মেতে ওঠা ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে মারাত্মক অপরাধ যা সম্পূর্ণরূপে হারাম। কোন অবস্থাতেই এসব কাজ কোন মুমিন (মুসলমান) কখনো করতে পারে না; এমন কি এসব কাজের সমর্থন করতে ও পারেন না। এসব অন্যায়, অশ্লীল, বেহায়াপনা ও গর্হিত কাজকে ইসলাম সমর্থন করে না বরং ইসলামের দৃষ্টিতে এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও মহাপাপ। এসব কাজ থেকে দূরে থাকা সকলের বাঞ্চনীয়। যারা এসব সংস্কৃতির সাথে মিশে যায় অথবা নিজেদের সংস্কৃতির সাথে এসব সংস্কৃতির মিশ্রণ ঘটায় তারা অপরাধী ও গুনাহগার হিসেবে সাব্যস্ত হবে। বিধর্মীদের সংস্কৃতিকে যে লালন করবে সেও ঐ দলের অন্তর্ভুক্ত হবে মর্মে হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।
আবু দাউদ শরীফের বর্ণিত হয়েছে,
عن عبد الله بن عمر رضى الله عنهما عن النبي صلى الله عليه وسلم قال من تشبه بقوم فهو منهم –
(سنن ابوداود: رقم : ৪০৩১)
অনুবাদ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের (সংস্কৃতি ও রীতিনীতিতে) সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ সম্পর্ক রাখে, সে ঐ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (সুনানু আবু দাউদ: হাদিস নাম্বার: ৪০৩১)
সুতরাং উপর্যুক্ত হাদিসের আলোকে আমরা বলতে পারি, যারা এ সমস্ত বিকৃত সংস্কৃতির আগ্রাসনের সাথে সম্পর্ক রাখে তারা ইহুদী-খ্রিস্টানদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে এবং জাহান্নামের উপযোগী হবে।
এ সংস্কৃতিগুলো লালন করা জঘন্যতম অপরাধ ও মারাত্মক গুনাহ। এসব ঘৃণিত ও অশ্লীল কাজ হতে যুবসমাজ তথা আমাদের উঠতি বয়সী তরুণ-তরুণীদেরকে সরাসরি বাধা দেয়ার মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে, তাদেরকে এর কুফল সম্পর্কে খুব ভালোভাবে বোঝাতে হবে। যে কোনভাবেই তাদেরকে কন্ট্রোল করার চষ্টা করতে হবে। অন্যথায় তারা এ সংস্কৃতি ধারণ করে পরবর্তীতে আমাদের যুব সমাজকে বিপথগামী করার চেষ্টা করবে। এসব অপসংস্কৃতির বিস্তারে যারা সাহায্য-সহায়তা করবে তারাও সমান অপরাধী। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমে বর্ণনা করেছেন।
وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُوا اللهَ
إِنَّ اللهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
অনুবাদ: তোমরা পরস্পর পাপ ও সীমালঙ্ঘনের কাজে একে অপরকে সহযোগিতা করো না এবং আল্লাহকে ভয় করো, নিশ্চয় আল্লাহ কঠিন শাস্তি প্রদানকারী। (সূরা মায়েদা: আয়াত: ০২)
র্যাগ ডে নামের বেহায়াপনা ইভটিজিং ও ব্যভিচারের অন্যতম কারণ
র্যাগ ডে’কে কেন্দ্র করে বর্তমানে আমাদের দেশে অনেক মেয়ে ইভটিজিং এর শিকার হচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েরা এক্ষেত্রে চরমভাবে অপমানিত ও অপদস্থ। এ ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষতিই বেশি হয়ে থাকে। তরুণরা অপরাধ করলেও তাদের কোন বিপদে পড়তে হয় না, যেমনিভাবে একজন তরুণীকে নির্যাতিত ও অপদস্থ হতে হয়। পশ্চিমা সংস্কৃতির এই নগ্ন আগ্রাসন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কলুষিত করেছে। অপরিপূর্ণ ড্রেস, উদ্যাম নৃত্য, অশুভনীয় স্লোগান, শিক্ষক, পথচারী সহ যাকে সামনে পাবে তাকে রং মারা, বিশ্রী অঙ্গভঙ্গী প্রাকাশ করাই র্যাগ ডে’র মূল কার্যক্রম। এ দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগ ডে নামক এ অপসংস্কৃতিটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করায় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই।
বিশ্রী ও অশ্লীল ভাষায় মন্তব্য
র্যাগ ডে’কে কেন্দ্র করে সচরাচর ছাত্র-ছাত্রীর সকলের জন্য টি-শার্ট এর ব্যবস্থা করা হয়। আর তাঁরা এসব টি-শার্ট পরিধান করে থাকেন। টি-শার্টে একজন অপরজন সম্পর্কে নানা মন্তব্য লিখে থাকেন। এসব মন্তব্যের ভাষা খুবই বিশ্রী ও অশ্লীল যা খুবই নিন্দিত ও বর্ণনাতীত। এমন সব শব্দ তারা সেখানে লিখে থাকেন, যা একজন সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী মানুষ উচ্চারণও করতে পারে না। এসব কথা থেকে যৌন আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ পায়। যা একজন তরুণ-তরুণীকে যেনা ব্যভিচারের দিকে ধাবিত করে।
শব্দ দূষণ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজে ব্যাহত সৃষ্টি করা
গান-বাজনা, নাচানাচি, উলঙ্গপনা ও উদ্যাম নাচানাচির মাধ্যমে তারা আশেপাশে পরিবেশকে নষ্ট করে থাকে। এ র্যাগ ডে টা নারী-পুরুষের অবৈধ মিলন মেলায় পরিণত হয়। সেখানে তারা একে অন্যের প্রতি যৌন অনুভূতি জাগে এমন বিশ্রী গান দিয়ে নাচানাচি ও রং মাখামাখিতে মেতে ওঠে, যা চরমভাবে ঘৃণিত ও অত্যন্ত গর্হিত। তরুণরা তরুণীদের গায়ে হাত থেকে, এমনকি একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ছবি তোলা ইত্যাদি জঘন্যতম কাজ করে। তারা এমন শব্দ দূষণ করে, যা অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাজে চরম ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়, এমনকি সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা দিতেও তাদেরকে হিমশিম খেতে হয়। সে সময় মানবিক দৃষ্টিকোণটাও তাদের নাচানাচি, ঢোল-তবলার মধ্যে থাকে না। এ সময় তাদেরকে কেউ বাধা দিলে, তার উপর সবাই ঝাপিয়ে পড়ে এবং তাকে হেনস্তা করে ছাড়ে ।
র্যাগ ডে বন্ধে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য
এই র্যাগ ডে’কে বন্ধ করা বর্তমান সময়ের অন্যতম একটি দাবি। এখনই যদি এই র্যাগ ডে নামক অপসংস্কৃতিকে বন্ধ করা না যায়, তাহলে ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীদের নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছু থাকবে না। র্যাগ ডে বন্ধে নিমোক্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।
র্যাগ ডে নামক অপসংস্কৃতি বন্ধ করা সময়ের দাবি
বর্তমান যুব সমাজের জন্য এক মারাত্মক জঘন্যতম কুসংস্কার ও সীমালঙ্ঘনের কাজ হলো র্যাগ ডে নামক এ অপসংস্কৃতি। এ অপসংস্কৃতি থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখতে না পারলে অতিসত্বর আমাদের যুব সমাজ অশ্লীল, গর্হিত, নির্লজ্জ, বেহায়াপনামূলক ও অপরাধমূলক কর্মকা-ে জড়াবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাই এ অপসংস্কৃতি থেকে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এখনই সচেতন ও সাবধান করতে হবে। সময়মতো সচেতন ও সাবধান করতে না পারলে সেটা আমাদের জন্য চরম অশনি সংকেত যা পুরো জাতিকে কৈফিয়ত দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নীতি-নৈতিকতা বলতে কিছুই থাকবে না।
অভিভাবকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য
অভিভাবকের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো তাদের সন্তানদেরকে নৈতিক শিক্ষা ও চরিত্র গঠনে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করা। তারা সমাজে বিভিন্ন অমানবিক, অন্যায় আচরণ, অপরাধমূলক এবং বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার কাজ থেকে তাদেরকে বারণ করা এবং তাদেরকে ইসলাম ও নীতি-নৈতিকতার বিষয়ে মৌলিক শিক্ষা দেয়া এবং এসব গর্হিত কাজের কুফল সম্পর্কে তাদেরকে ভালোভাবে জানিয়ে দেয়া। তাদের সন্তান স্কুলে যাওয়ার নাম দিয়ে কোথায় যায়, কী করে, কার সাথে মিশে, সবকিছুর সুষ্ঠু তদারকি এবং খেয়াল রাখা। পড়াশোনার বিষয়ে সার্বিক খবরা-খবর নেয়া।
শিক্ষকসমাজের দায়িত্ব ও কর্তব্য
শিক্ষকগণ পাঠদানের পাশাপাশি ছাত্রদেরকে নৈতিকতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করবেন। যাতে কোন ছাত্র-ছাত্রী ক্যাম্পাসের ভিতরে বাইরে কোন রকম অন্যায়, অশ্লীল, বেহায়াপনা, গর্হিত কাজ ও অপরাধমূলক কাজে জড়াতে না পারে। সেদিকে লক্ষ্য রেখে তাদেরকে শিক্ষাদান ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদান করবেন। ছাত্র-ছাত্রীরা ক্যাম্পাসে এসে কি করছে, কার সাথে মিশছে, ছেলে ও মেয়ে একসাথে কোথাও যাচ্ছে কিনা ইত্যাদি বিষয়ে গভীরভাবে দৃষ্টি দেবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র্যাগ ডে নামক এ অপসংস্কৃতি যাতে অদূর ভবিষ্যতে কেউ করার সাহস না পায়, সে ব্যাপারে শিক্ষকগণকে জোরালো ভূমিকা ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
র্যাগ ডে’র পরিবর্তে দোয়া অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যবস্থা করা
একটা সময় ছিল স্কুল থেকে বিদায়লগ্নে ছাত্র ছাত্রীরা তাদের চোখের পানি ফেলত, কান্না করত। শিক্ষকদের কাছে তাদের ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করত। সহপাঠীরা একজন অপরজনের সাথে সংঘটিত বিভিন্ন ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা চাইত। আর এখন র্যাগ ডের নাম দিয়ে ছাত্র ছাত্রী একে অপরের সাথে হাসাহাসি, আনন্দ-ফুর্তি ও রং মাখামাখি করে বিশ্রী ও অশ্লীল ভাষায় একে অপরের মন্তব্য করছে, যা খুবই দুঃখজনক। এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদেরকে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ কর্তৃক র্যাগ ডে এর পরিবর্তে বিদায় অনুষ্ঠান ‘দোয়া ও মিলাদ মাহফিল’ নামে আয়োজনে ব্যবস্থা করতে হবে। আর এ অনুষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অনুষ্ঠিত হতে হবে, ছাত্রদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় করা যাবে না। প্রতিষ্ঠান প্রধান এবং শিক্ষকমন্ডলীর পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনার মাধ্যমে পরীক্ষার্থীগণ এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবে।
সুশীল সমাজ ও প্রশাসনের দায়িত্ব ও ভূমিকা
এ অপসংস্কৃতি শুরুতেই নির্মূল করার জন্য প্রশাসনকে গুরুত্বের সাথে বিষয়টির প্রতি নজর দিতে হবে। এ অপসংস্কৃতি এখন আমাদের মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজ পর্যায়ে চলে এসেছে, যা চরম উদ্বেগের কারণ। উঠতি বয়সের তরুণ-তরুণীরা এ অপসংস্কৃতিতে গা ভাসিয়ে দিয়ে তাদেরকে বেহায়াপনা ও নির্লজ্জতার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যা কোন সুস্থ মস্তিস্কের অধিকারী অভিভাবকের কখনো কাম্য হতে পারে না। এসব অপসংস্কৃতি উচ্চমাধ্যমিক, মাধ্যমিক লেভেলের স্কুলগুলোতে যাতে বিস্তার লাভ করতে না পারে সেজন্য শিক্ষক, প্রশাসন, সুশীল সমাজ ও অভিভাবকের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদেরকে জোরালো ভুমিকা রাখতে হবে।
লেখক: সহকারী মাওলানা, চরণদ্বীপ রজভীয়া ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রি) মাদরাসা, বোয়লখালী, চট্টগ্রাম।