প্রতিনিয়ত শার্ট প্যান্টের ভিতরে বা ইন (In) করে, প্যান্টের নিচের অংশ ভাজ করে দিয়ে নামায আদায় করলে শুদ্ধ হবে কিনা?

0

নিয়মিত উত্তর দিচ্ছেন: অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অছিয়ার রহমান। সাবেক-অধ্যক্ষ জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া, চট্টগ্রাম।

 তছলিমা, পটিয়া, চট্টগ্রাম

প্রশ্ন: শুনেছি পুরুষগণের শার্ট প্যান্টের ভিতরে বা ইন (In) করে নামায পড়লে শুদ্ধ হবে না। আমার স্বামী প্রায় অফিসে অবস্থানকালে এভাবে নামায পড়েন। তাই এ বিষয়ে জানালে উপকৃত হব। এছাড়াও প্যান্টের নিচের অংশ বেশী লম্বা হলে কয়েক বটা দেয়। এতে নামাজ হবে কিনা? জানালে কৃতজ্ঞ থাকব।
উত্তর: নামাজ হলো বান্দা আর মহান আল্লাহর সাথে মিলন সেতু। তাই বান্দার জন্য আল্লাহর সামনে নিজকে অনুনয় ও অত্যন্ত বিনয়ভাব নিয়ে পেশ করা জরুরী। তাই পুরুষের জামা (শার্ট-টি-শার্ট) প্যান্টের ভিতরে ঢুকিয়ে বা ইন (In) করে নামায আদায় করা আদবের পরিপন্থী ও অপছন্দনীয়। যদিও এতে নামাজ হয়ে যাবে। (In) করে নামাজ পড়লে নামায হয়ে যাবে বলে ইন (In) করা অবস্থায় নামাজ আদায়ে অভ্যাস গড়ে তোলা অনুচিত। আবার ইন (In) করা অবস্থায় নামায আদায় করা অনুচিত বিধায় নামাজ যথাসময়ে আদায় করবে না এটাও ঠিক না।

অপর বিষয়টি হলো প্যান্ট, পায়জামা ইত্যাদি ঝুলিয়ে দিয়ে টাখনুর নিচে পরিধান করাকে আরবীতে ‘ইসবাল’ বলে। যদি ইসবাল অহংকারবশতঃ হয় তবে তা শক্ত হারাম ও এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান পবিত্র হাদীসে বর্ণিত রয়েছে। তবে নামাজের সময় কারো পায়জামা, প্যান্ট টাখনুর নীচে পড়লে তখন সম্ভব হলে কোমরের দিকে গুটিয়ে/ভাজ করে টাখনুর উপরে তোলে নামায আদায় করবে আর সম্ভব না হলে সে অবস্থায় নামায আদায় করে নিবে; কিন্তু টাখনুর নীচে ঝুলানো অংশ ভাজ করবে না কারণ নামাযে এভাবে ভাজ করে দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও খেলাফে মুতাদ্ তথা স্বাভাবিকের পরিপন্থী। বর্তমানে শরীয়তের বিধি-বিধান ও মাসআলার বিষয়ে সাধারণ মুসলমান বেশির ভাগ উদাসীন, এই কারণে বহু মুসল্লী ‘মাকরূহে তানযিহী হতে বাঁচতে ‘মাকরূহে’ তাহরীমী করে বসে অর্থাৎ টাখনুর নীচে থাকা অংশ মুড়িয়ে/ভাজ করে নামাজ আদায় করে থাকে যা মাকরূহে তাহরীমী ও গুনাহ্। সুতরাং লুঙ্গি, পায়জামা, প্যান্ট এমনভাবে পড়বে যাতে টাখনুর নীচে না যায় এবং টাখনু খোলা রাখা সুন্নাত। তদ্রুপ হাতের আস্তিন বা কাপড় উপরের দিকে ভাজ/মুড়াবে না বরং (পাঞ্জাবী, শার্ট ও জুব্বা) এসব পোষাকের আস্তিন হাতের কব্জি পর্যন্ত ছেড়ে স্বাভাবিক নিয়মে নামাজ আদায় করবে এটাই শিষ্টাচার ও নামাযের আদাব। এ মাসয়ালা তরজুমান প্রশ্নোত্তর বিভাগে বহুবার আলোচনা করা হয়েছে। তারপরেও অনেক মুসল্লি গাফেল ও বেখবর।
[বাহারে শরীয়ত, ৩য় খন্ড, ১৭০পৃ, ফতোয়ায়ে রজভীয়া, ৩য় খন্ড, ৪০৭পৃ, মুমিন কি নামাজ ইত্যাদি]

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •