ইমাম আহমদ রেযা এক বিস্ময়কর প্রতিভা

0

অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ বদিউল আলম রিজভি

ইসলামের সূচনাকাল থেকে ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব ও অস্তিত্বকে নির্মূল করার লক্ষ্যে ইসলামের নামে সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন ভ্রান্ত দল উপদল। প্রচার হয়েছে ইসলামের নামে বিভিন্ন ভ্রান্ত আক্বীদা বিশ্বাসের। মহান আল্লাহ্র অনুগ্রহপ্রাপ্ত প্রিয়ভাজন বান্দাদের যুগোপযোগী কর্মসূচী সর্বপ্রকার বাতিল অপশক্তির বিরুদ্ধে তাঁদের আপোষহীন মানোভাব ইসলামের সঠিক রূপরেখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বীদা বিশ্বাস প্রচার-প্রসারের সাথে তাঁদের ক্ষুরধার লিখনী সত্য প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয়ে তাঁদের সংগ্রামী জীবনাদর্শ খোদাদ্রোহী, নবীদ্রোহী অপশক্তির মূলোৎপাটন ও স্বরূপ উম্মোচনে যুগান্তকারী ভূমিকা ও নানামূখী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে বিশ্বব্যাপী ইসলামের মূলধারা সুন্নীয়তের আদর্শ ও শিক্ষা বিস্তারে মুসলমানদের ঈমান আক্বীদা সংরক্ষণে যারা আগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তাঁদের মধ্যে চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হির ভূমিকা ও অবদান অবিস্মরণীয়।

শুভজন্ম
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ১০ শাওয়াল ১২৭২ হিজরি মোতাবিক ১৪ জুন ১৮৫৬ খ্রিষ্টাব্দে শনিবার জোহরের সময় ভারতের উত্তর প্রদেশের বেরেলী শহরে জসুলী মহল্লায় শুভাগমন করেন। তাঁর জন্মগত নাম ‘মুহাম্মদ’ ঐতিহাসিক নাম ‘আল-মুখতার’ বুজুর্গ পিতামহ মাওলানা রেযা আলী খান তাঁর নাম রাখলেন আহমদ রেযা।

আ’লা হযরতের বুজুর্গ পিতার স্বপ্ন
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা বেরলভী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি’র বুজুর্গ পিতা যুগশ্রেষ্ঠ আলিম মাওলানা শাহ্ নকী আলী খান রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি এক বিস্ময়কর স্বপ্ন দেখলেন এবং নিজ বুজুর্গ পিতা কুতবুল ওয়াক্ত আল্লামা রেযা আলী খান রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি’র নিকট স্বপ্নের বর্ণনা দিলেন, স্বপ্নের তাবীর বা ব্যাখ্যায় আল্লামা রেযা আলী খান রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি নিজ ছেলে আল্লামা নকী আলী খানকে মুবারকবাদ দিলেন সুসংবাদ দিলেন যে, আল্লাহ্ তা‘আলা তোমার ঔরশে এমন এক নেক্কার বুজুর্গ সন্তান প্রেরণ করবেন, যিনি ইলমের এক মহাসমুদ্র প্রবাহিত করবেন, প্রাচ্য থেকে পাশ্চত্য পর্যন্ত সর্বত্র তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়বে। যখনই আ’লা হযরতের শুভজন্ম হল, পিতামহ যুগের আধ্যাত্মিক কুতুব হযরত মাওলানা রেযা আলী খান রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি তাঁকে কোলে তুলে নিলেন, আদর করলেন, বললেন, আমার এ দৌহিত্র (সন্তান) একজন যুগ শ্রেষ্ঠ আলিম হবে তাঁর জ্ঞান প্রদীপের জ্যোতিতে বিশ্বময় উপকৃত হবে।
[হায়াতে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-২২]

আ’লা হযরতের ক্বোরআন শিক্ষা
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি চার বৎসর বয়সে ক্বোরআন মজীদ নাজেরা (দেখে দেখে পড়া) সম্পন্ন করেছেন।

ছয় বছর বয়সে জ্ঞানগর্ভ তকরীর
আ’লা হযরত ফাযেলে বেরলভী রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ছয় বৎসর বয়সে ১২ রবিউল আউয়াল শরীফের মুবারক মাসে এক বিশাল মাহফিলে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বিষয়ে সারগর্ভ তকরীর উপস্থাপন করেন।

শিক্ষা-দীক্ষা জ্ঞানার্জনে পূর্ণতা লাভ
আ’লা হযরত উর্দু-ফার্সী শাস্ত্রে জ্ঞানার্জনের পর বুজুর্গ ওস্তাদ হযরত মির্জা গোলাম কাদের বেগ এর নিকট থেকে মিজান ও মুনশায়িব ইত্যাদি জটিল বিষয়ে শিক্ষার্জন করেন। অতঃপর স্বীয় বুজুর্গ পিতা আল্লামা নকী আলী খান রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি’র সান্নিধ্যে একুশটি বিষয়ে জ্ঞান ও পান্ডিত্য অর্জন করেন।
[সাওয়ানেহে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-৯১] তের বৎসর দশমাস পাঁচদিন বয়সে চৌদ্দ শাবান ১২৮৬ হিজরি মুতাবিক ১৯ নভেম্বর ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দে ইসলামী শরীয়তের প্রতিটি বিষয়ে পূর্ণতা অর্জন করে শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন। [সাওয়ানেহে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-৯২]

অসাধারণ স্মৃতিশক্তি
মাওলানা এহসান হোসাইন সাহেব বর্ণনা করেন, আমি আরবি বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞানার্জন অবস্থায় আ’লা হযরতের সহপাঠি ছিলাম। আ’লা হযরতের খোদাপ্রদত্ত অসাধারণ স্মৃতিশক্তির অবস্থা এমন বিস্ময়কর ছিল যে, শিক্ষকের নিকট কোন কিতাব কখনো এক চতুর্থাংশের অধিক পড়তেন না। অবশিষ্ট পড়ার সবকুটু নিজেই পড়ে নিতেন এবং শিক্ষককে শুনাতেন। [সাওয়ানেহে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-৯৬]

শিশু অবস্থায় সালামের উত্তর দান
আ’লা হযরত বাল্যকালে যে শিক্ষকের নিকট পড়তেন একদিন শিশুরা ঐ ওস্তাদকে সালাম দিলেন, জবাবে ওস্তাদ বললেন, জিতে রহো! এতে আ’লা হযরত ওস্তাদজীকে বললেন, এটাতো সালামের জবাব হলো না। ওয়া আলায়কুমুস্ সালাম বলা উচিত। ওস্তাদজী শুনে অনেক আনন্দিত হলেন আ’লা হযরতের জন্য দু‘আ করলেন।
[সাওয়ানেহে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-১১০]

ছয় বৎসর বয়স থেকে বাগদাদ শরীফের প্রতি সম্মান প্রদর্শন
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ছয় বৎসর বয়সেই অবগত হলেন বাগদাদ শরীফ কোন দিকে? তখন থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত কখনো বাগদাদ শরফের দিকে নিজের পদযুগল প্রসার করেন নি। [সাওয়ানেহে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-১১০]

আ’লা হযরতের দরবারে আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যন্সেলর প্রফেসর স্যার ড. জিয়াউদ্দীন
আ’লা হযরত ছিলেন জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিশ্বকোষ, ইসলামী জ্ঞানের প্রতিটি শাখায় তাঁর প্রজ্ঞা পান্ডিত্য ছিল অসাধারণ বিস্ময়কর, পাশাপাশি আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি জটিল-কঠিন বিষয়ে তাঁর গভীর বুৎপত্তি ছিল। ‘ইলমে হিসাব’ পাটিগণিত অৎরঃযসবঃরপ বীজগণিত অষমবনৎধ ‘ইলমে তাওক্বীত কাল ও সময় নিরূপন বিদ্যা’ গড়ফবৎহ অংঃৎড়হড়সু ঈযৎড়হড়সবঃৎু ঈধষপঁষধঃরড়হ ড়ভ ঞরসরহমং ধহফ চৎধুবৎ ঝপযবফঁষবং. ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল বিষয়ে প্রাচীন ও আধুনিক বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় ইমাম আহমদ রেযা রাহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি’র সফল বিচরণ ছিল বিস্ময়কর। এককথায় তিনি ছিলেন এক বিরল প্রতিভা সম্পন্ন বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব। ১৩৩১ হিজরিতে আলীগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর স্যার ড. জিয়াউদ্দীন, গণিত শাস্ত্রের এক জটিল বিষয়ের সমাধানের জন্য আ’লা হযরতের সক্ষাতে বেরেলী শরীফ গমন করেন। বিষয়টি শুনার পর থেকে আ’লা হযরতের খলিফা ও ছাত্র হযরত মাওলানা সৈয়দ জুফর উদ্দীন বিহারী রাহমাতুল্লাহ্ িতা‘আলা আলায়হি’ সত্যতা জানার জন্য সরাসরি ভাইস চ্যান্সেলর সাহেবের সাথে সাক্ষাতের কৌতূহলী ছিলেন, অবশেষে আ’লা হযরতের ইন্তেকালের আট বৎসর পর ১৩৪৮ হিজরি, ১৯২৯ সালে মাওলানা জুফর উদ্দীন বিহারী শিমলা গিয়েছিলেন, সৌভাগ্যক্রমে ভিসি মহোদয়ও তখন শিমলা আসেন, মাওলানা সাহেব হোটেলে অবস্থানরত ভিসি সাহেবের সাথে বিশেষ সাক্ষাতে জানতে চাইলেন। ভিসি সাহেব জানতে পেরেছি- আপনি গণিত শাস্ত্রের জটিল বিষয়ে সমাধান জানতে আ’লা হযরতের দরবারে গিয়েছিলেন। আপনি আ’লা হযরতকে কেমন পেয়েছেন? ভাইস চ্যান্সেলর বললেন, তিনি অত্যন্ত ভদ্র-মার্জিত, বিনয়ী স্বভাবের লোক, গণিত শাস্ত্রে খুবই পারদর্শী, অথচ কারো নিকট থেকে তিনি তা অর্জন করেননি। আ’লা হযরতের ইলমে লুদুন্নী ছিল, আমার জিজ্ঞাসার জবাব খুবই জটিল ও কঠিন ছিল, তিনি তৎক্ষণাত সহজেই সমাধান করে দিলেন। এ বিষয়ে ভারতবর্ষে বর্তমানে তাঁর চেয়ে বড় কোন জ্ঞানী নেই। মাওলানা জুফর উদ্দীন বিহারী বললেন, ঘটনাটির বর্ণনা ভাইস চ্যান্সেলর সাহেবের কাছ থেকে সরাসরি নিজে শুনতে পেরে মাওলানা বিহারী আরো বর্ণনা করেন, ভাইস চ্যান্সেলর সাহেব যেসময়টুকু আ’লা হযরতের সান্নিধ্য পেয়েছেন তারই বরকতে তাঁর মধ্যে আমলগত পরিবর্তন সাধিত হলো, বেরেলী শরীফ থেকে ফিরে এসে ভিসি সাহেব মুখে দাঁড়ি রেখে ছিলেন এবং নামাযের প্রতি মনোযোগী ও যত্নবান হয়ে যান। [সাওয়ানেহে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-১০৬, হায়াতে আ’লা হযরত: পৃষ্ঠা-১৫৫, আনোয়ারুল বয়ান: খণ্ড-১ম, পৃষ্ঠা-৩৩৭]

মহাকাশ বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে আ’লা হযরতের চ্যালেঞ্জ সত্য প্রমাণিত হলো
আমেরিকান মহাকাশ বিজ্ঞানী প্রফেসর আলবাট এফ পোর্টা লিখিত মহাকাশ সংক্রান্ত একটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ ২৩ মুহররম ১৩৩৮ হিজরি, ১৮ অক্টোবর ১৯১৯ সনে ভারতের পাটনা থেকে প্রকাশিত ‘‘এক্সপ্রেস’’ নামক ইংরেজী পত্রিকায় একটি ভয়ংকর ভবিষ্যৎবাণী করা হয় যে, ১৯১৯ সনের ১৭ ডিসেম্বর পৃথিবীতে এক মহা ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। এদিন ছয়টি গ্রহ বুধ, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি ও নেপচুন গ্রহ সমূহ পরস্পর এক সারিতে একত্রিত হবে। এবং এ গ্রহগুলোর বিপরীত দিকে সূর্য অবস্থানে করবে। এ গ্রহগুলোর মধ্যাকর্ষণ শক্তি সূর্যের মধ্যে ছিদ্র সৃষ্টি করবে, সূর্যের এ দাগ ১৭ ডিসেম্বর প্রকাশ পাবে। যেটা সকলে খালি চোখে দেখতে পাবে। সূর্যের সেই দাগ বায়ুমন্ডলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে। ফলে ঝড় তুফান বিদ্যুৎ মুষলধারে বৃষ্টিপাত, ভয়াবহ ভূমিকম্পন সৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ মহাকাশ বিজ্ঞানীর এ বৈজ্ঞানিক তথ্য গোটা বিশ্বে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল, ভারতের এক্সপ্রেস পত্রিকায় এ তথ্য প্রকাশিত হওয়ার সাথে সাথে সর্বত্র হৈ চৈ ও অস্থিরতা শুরু হলো। তখন উদ্ভট তথ্যটি সম্পর্কে গবেষণা ও সত্যতা যাচাই করতে ইমাম রেরলভীর শিষ্য আল্লামা জুফর উদ্দীন বিহারী বিষয়টির ইসলামী ব্যাখ্যা ও ক্বোরআন-সুন্নাহ্র দৃষ্টিতে এর সঠিক সমাধান জানতে আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযার দ্বারস্থ হলেন। আ’লা হযরত গভীর জ্ঞান গবেষণার নিরিখে পাশ্চাত্যের নাস্তিক বিজ্ঞানীর ভবিষ্যতবাণী সম্পর্কে দেশবাসীকে অভয়বাণী শুনালেন, জানিয়ে দিলেন এ ভবিষ্যৎবাণী উদ্ভট, বাতিল ও ধারণাপ্রসূত, ক্বোরআন-সুন্নাহ্র দৃষ্টিতে এ ভবিষ্যৎবাণী পরিত্যাজ্য ও অগ্রহণযোগ্য। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ করেন-
الشَّمْسُ وَالْقَمَرُ بِحُسْبَان- সূর্য ও চন্দ্র নির্ধারিত হিসাবে নিয়মে আবর্তন করছে। [সূরা আর-রহমান: আয়াত-৫] পবিত্র ক্বোরআনে আরো এরশাদ হয়েছে- وَٱلشَّمْسُ تَجْرِى لِمُسْتَقَرٍّ لَّهَا ذٰلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ-
অর্থ: সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে ওটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ। [সূরা ইয়াসীন: আয়াত-৩৮]

আ’লা হযরত ইলমে যীজাত তথা জ্যোতি বিজ্ঞানের আলোকে প্রতিটি গ্রহ, রাশি, মনযিল, সময় ও মনযিলের দূরত্ব এবং ত্রিভূজ ও চতুর্ভূজ ইলমে মুসাল্লাসে মুসাত্তাহ্ ও ইলমে মুরাব্বাআত এর চিত্র অংকন করে প্রমাণ করলেন ১৭ ডিসেম্বর পৃথিবীর গতি ও অবস্থা স্বাভাবিক থাকবে, কোথাও ভয়ংকর কোন বিপর্যয় ঘটবে না। সকলেই সেই নির্দিষ্ট দিনের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে, বিশ্ব পরিমন্ডলে খ্যাতিমান একজন মহাকাশ বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে বেরেলীর একজন মাওলানার বিস্ময়কর চ্যালেঞ্জ, সেই প্রতীক্ষিত ১৭ ডিসেম্বর হাজির হলো, সর্বস্তরের সচেতন জনতা রাস্তায় নেমে পড়লো, মহাকাশ পানে সকলের দৃষ্টি ধাবমান। না কোথাও কোন অসংগতি, সংঘাত বিপর্যয়ের লক্ষণ পরিদৃষ্টি হয়নি। বেরেলীর তাজেদার ইমাম আ’লা হযরতের ঘোষণা অক্ষরে অক্ষরে সত্য প্রমাণিত হলো। নবী মোস্তফার প্রজ্জ্বলিত আলোয় উদ্ভাসিত বেরেলীর কলম সম্রাট চতুর্দশ শতাব্দীর মহান মুজাদ্দিদ সংস্কারক, যুগশ্রেষ্ঠ মুফাস্সির যুগের ইমাম বুখারী, শতাব্দীর বিস্ময়, ফিকহ্ হানফীর মহাকাশের সমুজ্জ্বল তারকা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের ৭০টির অধিক শাখায় সহস্রাধিক গ্রন্থাবলীর সফল প্রণেতা, কেবলমাত্র একজন বিশ্বখ্যাত আলেমেদ্বীন নন, একজন মুসলিম বিজ্ঞানীও বটে। এ মহান জ্ঞানাচার্য কালজয়ী ব্যক্তিত্ব ১৩৪০ হিজরির ২৫ সফর ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ২৮ অক্টোবর শুক্রবার ২টা ৩৮ মিনিটে তাঁর প্রেমাস্পদের সান্নিধ্যে গমন করেন। আল্লাহ্ তা‘আলা তাঁর প্রিয় হাবীবের ওসীলায় এ মহামনীষীর জীবনাদর্শ অনুসরণ করার তাওফিক দান করুন। আ-মী-ন।

লেখক: অধ্যক্ষ হালিশহর ইসলামিয়া সুন্নিয়া ফাযিল মাদরাসা, বন্দর, চট্টগ্রাম।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •