‘নূন’ ও ‘ক্বলম’ হুযূর-ই আকরামের নাম শরীফ

0

শানে রিসালত : মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান

‘নূন’ ও ‘ক্বলম’ হুযূর-ই আকরামের নাম শরীফ
আল্লাহ্ তা‘আলা ক্বোরআন-ই মজীদে এরশাদ করেন-
نٓ وَالْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُوْنَঙ مَآاَنْتَ بِنِعْمَةِ رَبِّكَ بِمَجْنُوْنَঙ وَاِنَّ لَكَ لَاَجْرًا مَمْنُوْنٍঙ
তরজমা:
১. নূন, কলম ও তাদের লিখার শপথ। ২. আপনি আপনার প্রতিপালকের অনুগ্রহে উম্মাদ নন; ৩. এবং অবশ্যই আপনার জন্য অশেষ পুরস্কার রয়েছে;
[কান্যুল ঈমান: সূরা ক্বলম, আয়াত- ১-৩] সূরা কলমের এ ১ম থেকে ১৬টি আয়াত না’তে মোস্তফা আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর না’ত প্রশংসার ভান্ডার এবং আল্লাহ্র মাহবূব আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর মহত্বের খাযীনাহ্। এ আয়াতগুলোর প্রতিটি হরফ (বর্ণ)-এর মধ্যে না’ত শরীফের পুষ্প ফুটে রয়েছে। এ আয়াতগুলোর নি¤œলিখিত বিষয়গুলো সবিশেষ লক্ষণীয়-
১. আয়াতগুলো কেন এসেছে? ২. নূন ও ক্বলম মানে কি? ৩. এগুলো থেকে কত ধরনের না’ত প্রকাশ পায়? প্রত্যেক বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা নিম্বরূপ:
এক. মক্কার মুশরিকগণ, বিশেষত: ওয়ালীদ ইবনে মুগীরাহ্ হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালামকে ‘মাজুনূন’ অর্থাৎ উম্মাদ বলতো। আর হুযূর মোস্তফা আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর পবিত্র হৃদয়ে উক্ত অভিশপ্তের ব্যবহৃত শব্দটির কারণে কষ্ট পেতেন। মহান রব একাধিক শপথ করে হুযূর-ই আকরামের ফযীলতসমূহ এবং অশালীন মন্তব্যকারীদের দোষগুলো বর্ণনা করেছেন, যাতে মাহবূব আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর পবিত্র হৃদয়ে শান্তি পান। সুতরাং তিনি এরশাদ ফরমালেন, ‘নূন’-এর শপথ, কলমের শপথ, এবং তাদের লিখনীগুলোর শপথ! হে আমার প্রিয়! আপনি উম্মাদ নন, বরং আপনার শানে অশালীন মন্তব্যকারীরাই অপবিত্র- অর্থাৎ, বে-ঈমান, বদ-বাত্বিন, চোগলখোর, হারামের বাচ্চা (জারজ) ইত্যাদি।
দুই. ‘নূন’ শব্দের মর্মার্থের কয়েকটা অভিমত আছে- ১. এটা সূরার নাম, ২. এটা আল্লাহ্ তা‘আলার নাম, ৩. এটা ‘নূর’ ও ‘নাসির’ (যথাক্রমে আলো ও সাহায্যকারী)’র প্রথম বর্ণ। আর আল্লাহ্ তা’আলার নাম, ৪. حم والر ও ن মিলে الرحمن শব্দটি গঠিত হয়। সুতরাং এটা আল্লাহর সুন্দর নামের অংশ হলো। এমতাবস্থায় মহান রব নিজের শপথ করেছেন, ৫. ‘নূন’ হুযূর-ই আকরামের নাম শরীফ, ৬. এটা ‘নূর’ (نور) শব্দের পথম অক্ষর। আর ‘নূর’ হচ্ছে হুযূর-ই আকরামের নাম শরীফ। যেমন এরশাদ হয়েছে- قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللهِ نُوْرٌ (নিশ্চয় তোমাদের নিকট ‘নূর’ এসেছেন)। এমতাবস্থায় হুযূর-ই আকরামের নামের শপথ হলো, ৭. অথবা ‘নূন’ মানে মাছ। আরবীতে মাছকে ‘নূন’ বলা হয় এটা দ্বারা ওই মাছের কথা বুঝানো হয়েছে- যে মাছের পেটে হযরত ইউনুস আলায়হিস্ সালাম অবস্থান করেছিলেন। অথবা ওই মাছ, যা জান্নাতীদের প্রথম খাদ্য, অথবা ওই মাছ বুঝানো হয়েছে, যার উপর এ পৃথিবী কায়েম রয়েছে। [সূত্র: রহুল বয়ান ও তাফসীর-ই আযীযী] وَالْقَلَمِ : ১. এখানে কলম মানে হয়তো আম (সাধারণ অর্থে) কলম, যেহেতু এ কলম দ্বারা লিখা হয়, সেহেতু সেটার এমন সম্মান হলো এবং সেটার শপথ করা হলো।
২. অথবা ওই কলম বুঝানো হয়েছে, যা ‘লওহে মাহফূয’-এর উপর সমস্ত ঘটনা লিপিবদ্ধ করেছে। ৩. অথবা ওই কলম, যা দ্বারা ফেরেশতা মায়ের গর্ভে (গর্ভস্থ) শিশুর তাক্বদীর (দৃষ্ট) লিপিবদ্ধ করেন। ৪. অথবা ওই কলম, যা দ্বারা ফেরেশতাগণ মানুষের ‘আমল-নামা’ লিখেন। কিন্তু এসব অবস্থায় ‘নূন’ ও ‘ক্বলম’-এর মধ্যেকার কোন সামঞ্জস্য বুঝা যায় না। এ কারণে কোন তাফসীরকারক বলেছেন, ‘কলম’ ও হুযূর-ই আকরামের নাম। কেননা, একটি হাদীস শরীফে আছে- اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ الْقَلَمَ , অন্য হাদীসে এসেছে- اَوَّلُ مَا خَلَقَ اللهُ نُوْرِىْ (অর্থাৎ যথাক্রমে, ‘আল্লাহ্র প্রথম সৃষ্টি কলম’ এবং ‘আল্লাহ্ সর্বপ্রথম আমার নূরকে সৃষ্টি করেছেন)। হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালামকে এ জন্য ‘কলম’ বলা হয়েছে যে, যেভাবে আল্লাহর কলমের লিপি কেউ বদলাতে পারে না, সেভাবে হুযূর-ই আকরামের ফরমান (বাণী)-কে দুনিয়ায় কেউ বদলাতে পারে না, হুযূর-ই আকরাম যেন আল্লাহর কলম।
কেউ কেউ বলেছেন, ‘নূন’ মানে হুযূর মোস্তফার পবিত্র ওষ্ঠ, আর কলম মানে পবিত্র রসনা। যেভাবে কলম- দোয়াতের সাহায্যে লিখে, তেমনি হুযূর-ই আকরামের রসনা শরীফ ওষ্ঠ মুবারকের সাহায্যে কথা বলে। কারণ, কোন কোন হরফ জিহ্বা দ্বারা উচ্চারিত হয়, আর কোন কোন হরফ উচ্চারিত হয় ওষ্ঠ দু’টি দ্বারা। কিন্তু তাঁর প্রতিটি হরফ আল্লাহর ওহী, আর এ জিহ্বা ও মুখ শরীফ ‘কুন’-এর ‘কুন্জী’ বা চাবি। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমান- وَمَا يَنْطِقُ عَنِ الْهَوٰى اِنْ هُوَ اِلَّاوَحْىُ يُوْحىٰ (তিনি প্রবৃত্তি থেকে কিছুই বলেন না, তিনি যা বলেন তা তো ওহীই, যা তাঁর প্রতি ওহী করা হয়েছে।
প্রকাশ থাকে যে, ‘নূন’, মানুষের ওষ্ঠ এবং দোয়াত- তিনটিরই আকৃতি এক। সুতরাং হুযূর-ই আকরামের মুখ-গহ্বর শরীফ হলো- রাহমান (পরম করুণাময়)-এর দোয়াত, হুযূর-ই আকরামের জিহ্বা শরীফ হলো উভয় জাহানের ¯্রষ্টার কলম, আর হুযূর-ই আকরামের কালাম (বাণী) শরীফ হলো- মহান রবের ফরমান। [রূহুল বয়ান] وَمَا يَسْطُرُوْنَ অর্থাৎ সেটারই শপথ, যা তারা লিখে, কে লিখে? সে সম্পর্কে কয়েকটা অভিমত আছে- ১. হয়তো তারা হলো আম লোক, যারা দ্বীনী ইল্ম লিখে। অর্থাৎ হে প্রিয়! আপনার জিহ্বার শপথ, আপনার মুখের শপথ! আর আপনার ওই প্রিয় কালামের শপথ, যা দ্বারা মুসলমানগণ ক্বিয়ামত পর্যন্ত লিখতে ও পড়তে থাকবে। ওই কালামের প্রতি ক্বোরবান হই!
বাদশাহ্গণ নিজের নাম স্বর্ণ ও রৌপ্য মূদ্রার উপর লিখিয়েছেন, কিন্তু তা বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু ওই শাহানশাহ্্র কেমন শান ও মর্যাদাবান! যিনি আরবের মরুভূমিতে কিছু মিষ্ট কথা শুনাতে থাকেন, কিন্তু ওই বাণীকে না বাতাস উড়িযে নিয়ে যেতে পেরেছে, না যমানা (দীর্ঘকাল) নিশ্চিহ্ন করতে পেরেছে, না কোন পার্থিব শক্তি বদলাতে পেরেছে। তাঁর পবিত্র নামকে তো সমস্ত জগতের রসনাগুলোতে, মগজগুলোতে, লিপিগুলোতেও পাথর সমূহের এমন খোদাই করা হয়েছে যে, না সেটা নিশ্চিহ্ন হয়েছে, না বিলীন হবে।
অথবা وَمَا يَسْطُرُوْنَ দ্বারা ফেরেশতাদের লিপিগুলো, বুঝানো হয়েছে। কারণ, তারা হুযূর-ই আকরামের কলেমা (শব্দ)গুলো এবং তাঁর কর্মশরীফগুলো লিপিবদ্ধ করেন। মোটকথা, এ কলেমাত্রয় হুযূর-ই আকরামের না’ত শরীফ হলো।
সামনে এরশাদ হচ্ছে- হে মাহবূব! আপনি আপনার রবের অনুগ্রহক্রমে ‘মাজনূন’ নন। ‘মাজনূন’ মানে হয়তো উম্মাদ, অথবা পর্দাবৃত (মাসতূর)। প্রথম অর্থটি বেশী স্পষ্ট। কারণ, আপনারে মধ্যে উম্মাদনা কখনো আসতে পারে না। কেননা, নবীগণ আক্বল (বিবেক) সমগ্র বিশ্ব অপেক্ষা বেশী। আর হুযূর-ই আকরামের আক্বল শরীফ তো সমস্ত নবীগণ অপেক্ষা উচুঁ বা উত্তম। যদি বাদশাহ্র উজির উম্মাদ হয়ে যান, তবে তো রাজ্যের ব্যবস্থাপনা বিগড়ে যায়। সুতরাং যদি আল্লাহর নবীর মধ্যে এমন অবস্থা এসে যায়, তবে এ বিশ্ব কিভাবে কায়েম থাকবে? হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম-এর সাথে তো মহান রবও কথা বলেন, তাঁর ফেরেশতাগণও, জিন এবং ইনসানও আবেদন-নিবেদন পেশ করে; আর পশু-প্রাণী এবং পাথর-কঙ্করও কথা বলে। তিনি হলেন পৃথিবীবাসীদের ফরিয়াদ শ্রবণকারী, আরশবাসীদের আশা-ভরসার স্থান; সৃষ্টি তাঁর চেহারা মুবারকের দিকে তাকিয়ে থাকে, মহান ¯্রষ্টার দৃষ্টি তাঁর দিকে নিবদ্ধ, তিনি ¯্রষ্টার দরবারে আরয করেন। যেই পবিত্র সত্তার উপর এতগুলো দায়িত্ব থাকে, তিনি কিভাবে উম্মাদ হতে পারেন?
আর যদি ‘মাজনূন’ মানে ‘মাসতূর’ হয়, তবে সেটার অর্থ এ হবে যে, হে মাহ্বূব! আপনি গুপ্ত আবৃত নন, অর্থাৎ আপনার নিকট থেকে কোন কিছু গোপন রাখা হয়নি, পূর্ব ও পরবর্তী ঘটনাবলী এমনকি বিশ্বের অনু-পরমাণু পর্যন্ত কিছুই আপনার নিকট গুপ্ত নয়। [সূত্র: রূহুল বয়ান] অথবা অর্থ এযে, মহান রবও তাঁর নিকট থেকে গোপন নন। অথবা এ অর্থ যে, আপনি বিশ্ব থেকে গোপন নন। আপনাকে মুসলমানগণ জানে, কাফিরগণ চিনে; বরং চন্দ্র, সূর্য, গাছ, পাথর, দুনিয়াবাসী, আরশবাসী সবাই আপনাকে জানে ও মানে।
وَاِنَّ لَكَ لَاَجْرًا غَيْرَ مَمْنُوْن; এখানেاَجْر ও ممنون -এর মর্মার্থের ক্ষেত্রে কয়েকটা অভিমত আছে- ১. হয়তো اَجْر মানে শাফা‘আত ممنون মানে বন্ধ নি:শেষ হয় এমন।
[রূহুল বায়ন] অর্থাৎ আপনার সুপারিশ কখনো খতম হবে না। অনাদি থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত আপনারই ওসীলায় সবার মুসীবৎ সমূহ দূরীভূত হয়েছে ও হবে। হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম-এর তাওবা আপনার ওসীলায় কবুল হয়েছে, আপনার ওসীলায় হযরত নূহ আলায়হিস্ সালাম-এর নৌযান তীরে এসে ভিড়েছে, আপনার বরকতে হযরত ইব্রাহীম খলীল আলায়হিস্ সালাম-এর উপর আগুন বাগানে পরিণত হয়েছে, রক্ষা পেয়েছে। এখনও আপনার ওসীলায় দুনিয়ার উপর রহমত রাজি আসছে, বিপদাপদ দূরীভূত হচ্ছে। আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমান-
وَمَا كَانَ اللهُ لِيُعَذِّبَهُمُ فِيْهِمْ-
আল্লাহ্র এ শান নয় যে, আপনি থাকাবস্থায় তাদেরকে শাস্তি দেবেন। মৃত্যু যন্ত্রণার সময় আপনি উপকারে আসেন, কবরে আপনার পরিচয়ের উপর মৃতের কৃতকার্যতা নির্ভর করে, দোযখেও আপনার কারণে গুনাহগার মুসলমানদের আযাব থেমে যায়। মোটকথা, দুলহা হলেন আপনি, আর বরযাত্রী হলো সমগ্র দুনিয়া। আল্লাহ্ আমাদের সরদার হযরত মুহাম্মদ মোস্তফার উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং তাঁর আওলাদ ও আসহাবের উপরও। আর তিনি বরকত ও শান্তি বর্ষণ করুন।
অথবা اَجْر মানে সাওয়াব আর ممنون মানে রুখে দেওয়া হয়েছে এমন। অর্থাৎ হে মাহবূব; আপনার সাওয়াব কখনো বন্ধ হবে না। কেননা ক্বিয়ামত পর্যন্ত আপনার উম্মত থাকবে, তাদের নেক কাজগুলো থাকবে, যেগুলোর সাওয়াব বহুগুণ বৃদ্ধি হবে এবং আপনি পেতে থাকবেন।
অথবা اَجْر মানে সাওয়াব এবং ممنون মানে খোঁটা দেওয়া হয়েছে এমন। অর্থাৎ হে মাহবূব, আপনার সাওয়াবের মধ্যে আপনার উপর কোন বান্দার ইহসান নেই। কেননা, অন্যদেরকে ইলম, ঈমান, রিযক্ব, সম্মান ও সন্তান-সন্ততি ইত্যাদি অন্য কারো সাহায্যে পাওয়া যায়। আর এগুলো যারা পায়, তারা যাদের থেকে পেয়ে থাকে তাদের কারো না কারো নিকট ঋণী হয়ে থাকে। কিন্তু হে আমার প্রিয় গোটা বিশ্বে শুধু আপনারই একটা মাত্র সত্তা আছে, যার বদৌলতে (মাধ্যমে) সবাই খোদা তা‘আলার দৌলত পায়, সবাই আপনার মুখাপেক্ষী। আর আপনি আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কারো মুখাপেক্ষী নন। সবার উপর আপনার ইহসান, আপনার উপর কারো ইহসান নেই।
লোকেরা বলে, বিবি হালীমা হুযূর-ই আকরামকে লালন-পালন করেছেন, কিন্তু হুযূর-ই আকরামের রবের শপথ! হালীমা ধাত্রীকে হুযূর-ই আকরামই লালন করেছেন। কারণ, তিনি তাঁর ঘরে যাওয়ার পর তাঁর ভাগ্য পরিবর্তিত হয়েছে। কবি বলেন-
بنى سعد كا دشت رشك جمن هے – گل ها شمى چن كے لائى حليم
অর্থ: হযরত হালীমা যখন হাশেমী বংশের বাগান থেকে একটি ফুল নিয়ে এসেছেন, তখন থেকে বনী সা’দের ধুধু, বালুকাময় ময়দানের প্রতি ওই বাগান ঈর্ষান্বিত হয়ে গেছে।
কিছু সংখ্যক সূফী বলেছেন হুযূর-ই আকরামের ‘আজর’ বা প্রতিদান হলেন খোদ্ মহান রবের যাতে পাক।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •