প্রকাশিত হযেছে- দা’ওয়াত-ই খায়র ইজতিমা’র ‘‘তোহ্ফা’’
প্রকাশনায় : আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট
[প্রচার-প্রকাশনা বিভাগ]
হাদিয়া : ২০/- (বিশ টাকা) মাত্র
এতে রয়েছে দৈনন্দিন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ
০১. ভূমিকা ০৪
০২. ইসলামের পাঁচ বুনিয়াদ ০৬
০৩. ঈমান ০৭
০৪. নামায ০৮
০৫. তাহারাত (পবিত্রতা) ০৯
০৬. গোসল ফরয হবার কারণসমূহ ১০
০৭. নারীদের রক্তক্ষরণের প্রকারভেদ ১০
০৮. গোসলবিহীন অবস্থায় কৃত কিছু কাজের বিধান ১০
০৯. জুনুবী ও মুহদিস ১১
১০. গোসলের সুন্নাতসম্মত নিয়ম ১১
১১. গোসলের ফরযসমূহ ১২
১২. ওযূর সুন্নাতসম্মত নিয়ম ১৩
১৩. তায়াম্মুম ১৫
১৪. তায়াম্মুম করার নিয়ম ১৫
১৫. ইস্তিঞ্জা (শৌচকর্ম) ১৬
১৬. ইস্তিঞ্জা করার পদ্ধতি ১৭
১৭. ইস্তিবরা (পবিত্র নিশ্চিতকরণ) ১৮
১৮. মসজিদের গুরুত্ব ও আদাব ১৯
১৯. আযান ও ইক্বামত ১৯
২০. আযানের জবাব ২০
২১. আযানের দো‘আ ২০
২২. নামায ২১
২৩. নামায পড়ার পদ্ধতি ২১
২৪. কতিপয় লক্ষণীয় বিষয় ২৪
২৫. মহিলার নামায ২৫
২৬. বিতরের নামায ২৫
২৭. দো‘আ-ই ক্বুনূত ২৬
২৮. সানী জমা‘আত ২৭
২৯. জমা‘আতে প্রথম কাতারের ফযীলত ২৭
৩০. কাতার সোজা পূর্ণ করার ফযীলত ২৭
৩১. সুতরাহ্ ২৭
৩২. আমল-ই কাসীর ও সগীর ২৮
৩৩. জুমু‘আহ্ ২৮
৩৪. তাহাজ্জুদের নামায ২৮
৩৫. জানাযার নামাযের নিয়ম ২৯
৩৬. দাফন ৩১
৩৭. তালক্বীন। ৩১
দাওয়াতে খায়র একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচী
‘দা’ওয়াত’ মানে আমন্ত্রণ, আহ্বান। ‘খায়র’ মানে উত্তম, কল্যাণ, কল্যাণকর, ইত্যাদি। ‘দা’ওয়াতে খায়র’ হলো ‘কল্যাণের দিকে আহ্বান’ বা কল্যাণকর কাজের দা’ওয়াত। এ দা’ওয়াতে খায়র মূলত একটি দ্বীনি শিক্ষা কার্যক্রম। সব বয়সের মুসলমানদের জন্য শরিয়তের অপরিহার্য জ্ঞান ও প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসা-ইল সম্পর্কে সহজ পদ্ধতিতে তা’লীম দেওয়ার এ কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে ‘দা’ওয়াতে খায়র’। এটি মূলত মসজিদ ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম। মসজিদের বাইরেও করা যাবে এ আয়োজন। তবে, সব আক্বীদার মুসলমানদের আগমন যেখানে, এ কর্মসূচি পালিত হবে মূলত সেখানে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীদের জন্যও এ কর্মসূচির পৃথক ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সবার জন্য ফরয জ্ঞান, শুদ্ধভাবে ক্বোরআন তেলাওয়াত, শরিয়তে যে সব বিষয় ফরয-যেমন নামায, রোযা ইত্যাদি সম্পর্কিত জরুরি মাসা-ইল শিক্ষা এবং ফাযায়েল সম্পর্কে জানানো হয় এখানে। মাত্র ৩০-৩৫ মিনিটের এ তা’লীমী মাহফিলের পাঠ্যক্রমে থাকে ক্বোরআন শরীফের দরস, হাদীস শরীফের দরস এবং মাসা-ইল শিক্ষা। বিশেষত মাসা-ইল শেখানো হয় যতদূর সম্ভব প্র্যাকটিক্যাল, হাতে-কলমে, পরস্পর প্রশ্ন ও উত্তর বিনিময়ের মাধ্যমে। কেউ যেন অপমান বোধ না করে, যেন কেউ লজ্জা না পায় এমনভাবেই কৌশলি প্রশ্নোত্তর বিনিময়ের মাধ্যমে শেখানোর চেষ্টা করা হয় এ মহতি কাজে। নামাযের প্রয়োজন মেটাতে সূরা ফাতিহার সাথে সহজ ও ছোট কয়েকটি সূরাও সহীহ্ করে মুখে মুখে শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। নামাযের অপরিহার্য সব দো‘আ-দুরূদও শেখানো হয়।
আজ আমাদের মুসলিম সমাজের শতকরা ৯৫% জন মানুষই জানেনা কীভাবে একজন মুসলমান মারা গেলে তাঁকে গোসল দিতে হয়, কাফন পরাতে হয়। জানাযা-দাফনের কাজও জানেনা অনেকেই। এসব জরুরি দ্বীনি শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে দা’ওয়াতে খায়র মজলিশে। স্থানীয় মসজিদে বা সর্বসাধারণের কোন লোকালয়ে বা প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে একদিন বা মাসে ২/৩দিন সুবিধাজনক সময়ে এ দাওয়াতের কাজ চলছে, যা সব মুসলিম নর-নারীর ফরয জ্ঞানার্জনের জন্য আয়োজিত হওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে যে, আল্লাহ্ পাক সব মুসলিম নর-নারীর জন্য জ্ঞানার্জনকে ফরয করে দিয়েছেন। সব ধরনের ইলম হাসিল করা ফরয-ই কেফায়া হলেও অতি প্রয়োজনীয় বিষয়াদির জ্ঞানার্জন করা ফরযে ‘আইন। যে সব জ্ঞান অর্জন প্রত্যেকের জন্য ফরয মূলত তা শেখানোর কর্মসূচিই হলো দাওয়াতে খায়র। অন্যান্য জরুরী বিষয়ে শিক্ষাদানও এ কর্মসূচি থেকে বাদ পড়ে না। আমাদের উপর তাগিদ এসেছে- ‘‘দোলনা থেকে কবরে যাওয়া পর্যন্ত ইলম হাসিল কর।’’ [হাদীস]
সুতরাং যে জ্ঞান অর্জন ফরয তা মৃত্যুর আগে যে কোন মূল্যে শিখে নিতে হবে। এ জন্য লজ্জাবোধ করা চলবেনা। মুসলমান হিসেবে জীবনযাপন এবং ঈমান নিয়ে মৃত্যুবরণে সহায়ক ফরয ইলম হাসিল করতে আমাদের দা’ওয়াতে খায়র কার্যক্রমে আপনিও আসুন, আপনার পরিবারবর্গকেও নিয়ে আসুন। এ কার্যক্রমে সব বয়সের নারী-পুরুষরা অংশ নিতে পারবেন। যেহেতু, ‘গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ’ এ কর্মসূচি পালনে বদ্ধপরিকর, তাই কোন্দিন কোথায় কোন্ সময়ে দা’ওয়াতে খায়র চলছে, তা আপনার নিকটস্থ গাউসিয়া কমিটির সাথে যোগাযোগ করে জেনে নিন এবং অংশগ্রহণ করে আল্লাহর নির্দেশ মত চলুন। আল্লাহর নির্দেশ হল, ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো এবং তোমাদের পরিবারবর্গকেও দোযখ থেকে বাঁচাও।’’ [আল ক্বোরআন] ক্বোরআন করীমের অন্যত্র এরশাদ হয়েছে, ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যেভাবে তাঁকে ভয় করা অপরিহার্য এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করোনা।’’ [সূরা আলে ইমরান : আয়াত-১০২]
আপনিও হোন দা’ওয়াতদাতা (দা‘ঈ)
আল্লাহর পথে কল্যাণের পথে, যিনি দা’ওয়াত দেন, তাঁকে বলা হয় ‘দা‘ঈ’ আর যিনি তা’লীম দেন তাঁকে বলে ‘মু‘আল্লিম’। আর সম্পূর্ণ কাজটির নাম ‘দা’ওয়াতে খায়র’। সূরা আলে ইমরানের ১০৪ নং আয়াত এবং ১১০ নং আয়াত শরীফ এমন দা’ওয়াতি কাজে দলবদ্ধভাবে বের হবার নির্দেশ এসেছে। এটা আমাদের উপর ফরযে কেফায়া। যদি আমাদের সমাজের কোন না কোন দল এ কাজে বের হই তবে অন্যদের পক্ষ থেকে এ ফরয আদায় হবে বটে; কিন্তু যদি কোন দল বের না হই, তখন সবাই হয়ে যাব গুনাহ্গার। তাই, এ দায়িত্ব সবার পক্ষে আমরা কাঁধে নিলাম। আপনারা আমাদের সহযোগিতায় থাকুন এ আবেদন করি। আপনারা আমাদের সাথে থেকে তা’লীম নিতে পারেন। মু‘আল্লিম হয়ে তা’লীম দিতেও পারবেন অর্থাৎ দা‘ঈ হয়ে মানুষকে ডাকার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। তবে মু‘আল্লিম হবার জন্য আপনাকে নিতে হবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ। কোন না কোনভাবে আপনি এ মহত কাজে আমাদের সাথে থাকুন।
ইজতিমা
‘দা’ওয়াতে খায়র’-এর বার্ষিক বৃহত্তর আয়োজনকে আমরা ‘দা’ওয়াতে খায়র ইজতিমা’ নাম দিয়েছি। এমন বৃহত্তর আয়োজন হবে বার্ষিক এবং জেলা পর্যায়ে। আর, সাপ্তাহিক ও মাসিক আয়োজনকে আমরা বলি ‘দা’ওয়াতে খায়র মাহফিল বা মজলিস’।
আলোচ্য বিষয়
অন্যদের সাথে আমাদের আলোচ্য বিষয়ের একটি দৃশ্যমান পার্থক্য হলো এ যে, অন্যসব দা’ওয়াতে মূলতঃ নিজস্ব নেসাব বা কিতাব থেকেই শুধু শিক্ষা দেয়া হয়, অথচ পবিত্র কালামে পাক ক্বোরআন শরীফ এবং হাদীস শরীফকে গুরুত্ব দেয়া হয় না, যা দুঃখজনক। তাই, আমরা আলোচনার সময়কে তিনভাগে ভাগ করে এক ভাগে ক্বোরআন করীম, দ্বিতীয় ভাগে হাদীস শরীফ সামনে রেখে দরস দেওয়ার ব্যবস্থা করি। আর তৃতীয় বা শেষভাগে ফিক্ব হ্ বা মাসআলা-মাসা-ইল ও ফাযায়েল বিষয়ে আলোকপাত করি।
‘দা’ওয়াত-ই খায়র ইজতিমা-২০১৯’ -এ যোগদান করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এখন থেকে দা‘ঈ কিংবা মু‘আল্লিম হয়ে দা’ওয়াতী কাজে আত্মনিয়োগ করুন। এতদুপলক্ষে আমাদের প্রকাশিত ও বিলিকৃত এ সংক্ষিপ্ত তোহফা, গাউসিয়া তরবিয়াতী নেসাব এবং সংশ্লিষ্ট কিতাবাদি, যেমন কানযুল ঈমান, ‘মিরআত শরহে মিশকাত’ ইত্যাদি সংগ্রহ করে ঘরে রাখুন আর সেগুলো পাঠ-পর্যালোচনা করে কল্যাণের পথে গণ-মানুষকে দা’ওয়াত দিন। দা’ওয়াত-ই খায়র কেন্দ্রীয় ও শাখা কমিটিগুলোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন।
ইজতিমায় যেসব বিষয়ে সারগর্ভ আলোচনা হয়েছে এবং যেসব বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, ওইগুলোর অনেক বিষয় এবং আরো কিছু জরুরী বিষয়ের সংক্ষিপ্ত অথচ সপ্রমাণ বর্ণনা এ ‘তোহফা’য় স্থান পেয়েছে। ‘আনজুমান রিসার্চ সেন্টারের মহাপরিচালক বিশিষ্ট আলিম-ই দ্বীন, লেখক ও গবেষক মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান সাহেব তোহ্ফাটি প্রণয়ণ করেছেন এবং আনজুমান-এ রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট সেটা প্রকাশ করেছে এবং অতি স্বল্প মূল্যে ও সূলভে প্রচারের ব্যবস্থা করেছে। তাই লেখক ও প্রকাশককে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং তোহফাটি সংগ্রহ করার জন্য উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
গাউসয়িা কমিটি বাংলাদেশ’র পক্ষে
এডভোকেট মোছাহেব উদ্দিন বখতেয়ার
যুগ্ম-মহাসচিব কেন্দ্রীয় পরিষদ