প্রশ্ন করেছেন মুহাম্মদ জামশেদ -দুবাই প্রবাসী
প্রশ্ন: জুম‘আর ২য় আযানের জবাব দেয়া এবং আযানের পর দো’আ পড়া যাবে কিনা? শুনেছি উক্ত সময়ে কোন কথাবার্তা এমনকি আযানের জবাব এবং মুনাজাতও করা যাবে না। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়ে ধন্য করবেন।
উত্তর: জুম‘আ দিবসে মিম্বরে উপবিষ্ট খতিবের সম্মুখে যে আযান দেয়া হয় এর জবাব দু’ভাবে দেয়া যায়। ১. মৌখিক উচ্চারণ করে, ২. মৌখিক উচ্চারণ ছাড়া-চুপে চুপে অন্তরের মাধ্যমে। মৌখিক বড় আওয়াজে উচ্চারণ করে খুতবার আযানের জবাব দেয়াকে মাকরূহ বলা হয়েছে। যেমন রদ্দুল মুহতারে উল্লেখ আছে- اجابة الاذان حينئذ مكروهة- অর্থাৎ- আযানের জবাব (খুতবার আযানের) ওই সময়ে মাকরূহ। দুররুল মুখতারে উল্লেখ আছে- ينبغى ان لايجيب بلسانه اتفاقا فى الاذان بين يدى الخطيب-
অর্থাৎ- এর উপর ঐক্যমত্য যে, খতিবের সামনে দেয়া আযানের জবাব মৌখিক ভাবে দিবেন না। উল্লিখিত আলোচনা দ্বারা প্রতীয়মান যে, খতিবের সম্মুখে যে আযান দেয়া হয়, তার জবাব ও দু‘আ মৌখিকভাবে শব্দ করে দেবে না। তবে খুতবার আযানের জবাব ও দু‘আ মৌখিকভাবে না হয়ে অর্থাৎ শব্দ না করে চুপি চুপি মনে মনে হলে কোন অসুবিধা নেই।
বরং অনেকেই জায়েয বলেছেন। যেমন মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রাহমাতুল্লাহি আলায়হির বর্ণনা ও হানাফী মাযহাবের ফিক্বহের কিতাব সমূহের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে বুঝা যায়। তদুপরি সাহেবাইন তথা ইমাম আবু ইউসুফ ও ইমাম মুহাম্মদ রাহমাতুল্লাহি আলায়হির মতে ইমাম/খতিব খুতবা প্রদানের জন্য মিম্বরে আরোহনের পর খুতবা শুরু করার পূর্বে দ্বীনি কথা-তথা তাসবীহ-তাহলীল দু‘আ-দুরুদ পড়া মাকরূহ নয়। যদিও কেউ কেউ মাকরূহ বলেছেন। তবে বিশুদ্ধ মত হল মাকরূহ নয়। সুতরাং আওয়াজ না করে বা চুপে চুপে খুতবার আযানের জবাব দেওয়া ও খুতবা শুরু করার পূর্বে দু‘আ-মুনাজাত করাতে অসুবিধা নেই। বরং হযরত আমীর-এ মু‘আবিয়া রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর আমল দ্বারা জায়েয প্রমাণিত। সহীহ বুখারী শরীফ এবং আল বিদায়া ওয়ান নেহায়া গ্রন্থে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। সুতরাং দুররুল মুখতার ও রদ্দুল মুহতারে জুমুআর ২য় আযানের জবাব দেয়া ও দু‘আ-মুনাজাত করাকে মাকরূহ বলার অর্থ হবে উচ্চস্বরে জবাব দেয়া ও দু‘আ করা। চুপেচুপে বা নিম্নস্বরে শব্দ/আওয়াজ না করে খুতবার আযানের জবাব দেয়া ও দু‘আ করতে অসুবিধা নেই। [হেদায়া গ্রন্থের (আরবী) হাশিয়া: পৃষ্ঠা ২৫৪]