হুযূর-ই আকরাম শাফী‘উল মুযনিবীন (গুনাহগারদের পক্ষে সুপারিশকারী)

0
শানে রিসালত
মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল মান্নান
হুযূর-ই আকরাম শাফী‘উল মুযনিবীন [গুনাহগারদের পক্ষে সুপারিশকারী]
আল্লাহ্ তা’আলা ক্বোরআন মজীদে এরশাদ করেছেন-
مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَه اِلَّا بِاِذْنِه-
তরজমা: সে কে, যে তাঁর সম্মুখে সুপারিশ করবে, তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে? [সূরা বাক্বারা: আয়াত- ৫৫: কান্যুল ঈমান] ক্বিয়ামতের সঙ্কটপূর্ণ মুহূর্তে গুনাহগারগণ যখন আটকা পড়বে, তখন আল্লাহর দরবারে তাদের পক্ষে সুপারিশ করে দোযখের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি দেওয়া সম্ভবপর কিনা? সম্ভব হলেও কাদের পক্ষে কে সুপারিশ করবেন? শাফা‘আত বা সুপারিশ কত প্রকার ও কি কি? এসব প্রশ্ন যখন সামনে আসছে, তখন সেগুলোর জবাব পাবার কৌতুহল জাগা স্বাভাবিক। উপরে উল্লিখিত আয়াতাংশে এসব প্রশ্নের জবাব রয়েছে।
এটা আয়াতুল কুরসীর একাংশ। আয়াতুল কুরসীতে বিশেষত: কাফির ও বদ মাযহাবীদের খন্ডন রয়েছে; যেসব লোক মহান শ্রষ্টাকে অস্বীকার করতো, তাদের খন্ডন করা হয়েছে আয়াতটির প্রথম শব্দ ‘আল্লাহ্’ দ্বারা। যারা একাধিক ¯্রষ্টা আছে বলে ভ্রান্ত বিশ্বাসের শিকার, তাদের খন্ডন করা হয়েছে ‘লা-ইলা-হা ইল্লা-হুয়া’ (তিনি ব্যতীত কোন মা’বূদ নেই) দ্বারা। যারা আল্লাহর গুনাবলীকে অস্বীকার করে, তাদের খন্ডন করা হয়েছে ‘আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম’ ইত্যাদি দ্বারা। এভাবে গোটা আয়াতটি বিশেষত: কাফিরদের খণ্ডন করে। কাফিরগণ তাদের বোতগুলো সম্পর্কে দু’টি মারাত্মক ভ্রান্ত আক্বীদা পোষণ করতো: এক. সেগুলোর মধ্যে ‘উলুহিয়াৎ’ (খোদাত্ব) অনুপ্রেবেশ করেছে; যেমন ফুলের মধ্যে খুশ্বু। এজন্য তারা বোতগুলোকে ইলাহ্ও মানে, আবার সেগুলোর শরীকগণ রয়েছে বলেও বিশ্বাস করে। তবে খোদাকে ইলাহ্-ই আকবার বলতো। দুই. এ মূর্তিগুলো ছোট খোদা। আর এগুলো বড় খোদার নিকট সুপারিশ করবে। এমনকি এগুলো বড় খোদাকে ধওঁস বা দাপট দেখিয়ে সুপারিশগুলো মেনে নিতে বাধ্য করবে। না‘ঊযুবিল্লাহ্! এ আয়াতে তাদের এ দু’ভ্রান্ত বিশ্বাসের খণ্ডন করা হয়েছে। এ আয়াতাংশে আল্লাহ্ তা‘আলা এরশাদ ফরমায়েছেন- আল্লাহর অনুমতি ব্যতীত কারো মুখ খোলার সাহসই হবে না। সুতরাং তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে শাফা‘আত কিভাবে করবে? যেন এরশাদ হয়েছে- শাফা‘আত শুধু তিনিই করবেন, যাঁকে অনুমতি দেওয়া হবে। আর বোত-প্রেতগুলো অনুমতি পাবার যোগ্যই নয়। বাকী রইলো দাপট (ধওঁস) দেখিয়ে সুপারিশ মানানো। বস্তুত! আল্লাহ্ তা‘আলার উপর কারো দাপট চলতেই পারে না।
দ্বিতীয়ত: এ আয়াতে আল্লাহ্র অনুমতিক্রমে সুপারিশের পক্ষে অকাট্য প্রমাণ রয়েছে। সুতরাং আয়াতটি শাফা‘আতকে অস্বীকার করার জন্য নয়, বরং তা শাফা‘আতের পক্ষে প্রমাণ বহন করে।
তাছাড়া, শাফা‘আত যদি না-জায়েয কিংবা অসম্ভব হতো, তবে নামাযে জানাযাহ্, যিয়ারতে ক্বুবূর এবং জীবিত মুসলমানদের দো‘আ মৃত মুসলমানদের জন্য অকেজো হয়ে যেতো। কারণ, এগুলো তো সুপারিশই। না-বালেগ শিশুদের জানাযায় তো পরিষ্কার ভাষায় বলা হয়- وَاجْعَلْهُ لَنَا شَافِعًا ومشفعًا (এবং হে আল্লাহ্! তাকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী কারো।) বড়দের জন্য আমরা সুপারিশকারী (দো‘আকারী) হই আর ছোটদেরকে আমাদের জন্য সুপারিশকারী বানাই।
হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুমা তাঁর সন্তানের জানাযার জন্য চল্লিশজন নামাযী ব্যক্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিলেন। কারণ, যেখানে চল্লিশজন নেক্কার মুসলমান একত্রিত হন, সেখানে কেউ অবশ্যই ওলী থাকেন। [মিরক্বাত] সুতরাং যদি জানাযার নামাযে চল্লিশজন মুসলমান একত্রিত হন, তবে তাঁদের মধ্যে কোন একজন ওলী থাকেন, ওলীর সুপারিশ আল্লাহ্ তা‘আলার দরবারে কবূল হয়।
সুপারিশ করবেন সম্মানিত নবীগণ, ওলীগণ, আলিমগণ হক্বক্বানী পীর-মাশাইখ, হাজর-ই আসওয়াদ, ক্বোরআন মজীদ, খানা-ই কা’বা, রমযানুল মুবারক ও ছোট শিশুরা। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, রমযান তো বলবে, ‘‘হে খোদা! আমি অমুক বান্দাকে ক্ষুধার্ত-পিপাসার্ত রেখেছি। আজ তার পক্ষে আমার সুপারিশ কবূল করো।’’ আর ক্বোরআন বলবে, ‘‘হে খোদা! আমি তাকে রাতে আরাম করতে দেইনি। তার পক্ষে আমার সুপারিশ কবূল করো।’’ সুতরাং এ দু’টির সুপারিশ ক্ববূল হবে। মৌং আবদুল হাই সাহেব ‘হিদায়ার মুক্বাদ্দামাহ্’ (ভূমিকা)য় হাকিমের বর্ণনার বরাতে লিখেছেন, যখন ফারূক্ব-ই আ’যম হাজরে আস্ওয়াদকে বলেছিলেন, ‘‘তুমি নিছক একটি পাথর। তুমি কারো না অপকার করতে পারো, না উপকার। যদি আমি হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লøাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে তোমাকে চুম্বন করতে না দেখতাম, তবে আমি কখনো তোমাকে চুম্বন করতাম না।’’ তখন মাওলা আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বললেন, হযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম এরশাদ করেছেন, ‘‘ক্বিয়ামতে সেটার চোখ ও মুখ হবে এবং হাজীদের পক্ষে সুপারিশ করবে। অঙ্গিকার দিবসে রূহগুলো থেকে যেই অঙ্গিকার নেওয়া হয়েছে, সমস্ত সাক্ষ্য সহকারে তা তাতে সংরক্ষিত রয়েছে। সেটা আল্লাহর আমানতদার এবং মুসলমানদের পক্ষে সাক্ষী। অনুরূপ হুযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘‘যে নারীর তিনটি ছোট শিশু মারা যাবে, তারা তার পক্ষে সাক্ষী হবে, যদি দু’টি মারা যায়, তবে ওই দু’জনই সাক্ষী হবে, আর যদি একটি মারা যায়, তবে ওই একজনই সাক্ষী হবে। আর যদি কেউ মারা না যায়, তবে আমি তার পক্ষে সাক্ষী।’’ বুঝা গেলো যে, ছোট শিশুরাও মাতা-পিতার পক্ষে সাক্ষী হবে।
হুযূর-ই আকরাম শফী‘ঊল মুয্নেবীন
ক্বিয়ামত দিবসে দু’টি অবস্থা হবে- প্রাথমিক পর্যায়ের অবস্থা এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের অবস্থা। প্রাথমিক পর্যায়ের অবস্থা হবে আল্লাহ্ তা‘আলার ন্যায় বিচারের। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের অবস্থা হবে তাঁর অনুগ্রহের। দ্বিতীয় অবস্থায় সবাই সুপারিশ করবে; কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় শাফা‘আত তো দূরের কথা আল্লাহর দরবারে মুখ খোলারও কেউ সাহস করবে না, হযরত আদম থেকে হযরত ঈসা (আলায়হিমাস্ সালাম)পর্যন্ত সবাই বলবেন, نَفْسِىْ نَفْسِىْ اِذْهَبُوْا اِلى غَيْرِىْ অর্থাৎ ‘‘আজ এখন এ সুপারিশের জন্য আমি নই, তোমরা আমি ব্যতীত অন্য কারো নিকট যাও!’’ কবলেন-
خليل و نجى مسيح وصفى سبى سے كهى كهيں نه بنى
يه بے خبرى كه خلق پرবى كهاں سے كهاں تمهارے لئے
অর্থ: হযরত ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ্, হযরত নূহ নাজীউল্লাহ্, হযরত ঈসা মসীহ্, হযরত আদম সফী উল্লাহ্, ক্বিয়ামতবাসী সবাইকে সুপারিশ করতে বলবা। কিন্তু কেউ রাজ হয়নি। এমতাবস্থায় গোটা সৃষ্টি এখান থেকে ওখানে ঘুরে বেড়াবে। এয়া রসূলাল্লাহ্! তাঁরা তো আপনারই তালাশে গোটা হাশরের ময়দানে প্রদক্ষিণ করবা।
দুনিয়ায় তো সবারই জানা আছে যে, হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম গুনাহ্গারদের জন্য সুপারিশকারী (শফী‘ই ‘আ-সিয়াঁ), কিন্তু সেখানে পৌঁছে ইমাম বোখারী ও মুসলিমই নন, বরং সম্মানিত নবীগণ আলায়হিমুস্ সালামের স্মরণেও থাকবে না আজ সুপারিশকারী কে? অবশ্য হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালাম বলবেন, ‘‘আমিই হলামও শুকতারা, যে দুনিয়ায়ও তাঁর শুভাগমনের সুসংবাদ দিয়েছি, আজকেও বলছি- হযূর-ই আকরাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এ মুহূর্তে সুপারিশকারী অতঃপর পাপীদের জন্যই সুপারিশকারী।’’ এটা এজন্য ছিলো যে, হয়তো কেউ বলতো, ‘‘এ সুপারিশে হুযূর-ই আকরামের কি-ই বা বৈশিষ্ট্য? এমন সুপারিশ তো অন্য কারো কাছে গিয়ে বললেও হয়ে যেতো!’’ আজ দেখিয়ে দেওয়া হবে যে, অন্য কারো দ্বারা এমন সুপারিশ করা সম্ভবপর নয়। এখন মাহবূব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামই এমন সুপারিশের উপযোগী। প্রত্যেক যায়গায় গিয়ে ধর্ণা দিয়ে দেখো! হুযূর মোস্তফার দরজা ব্যতীত অন্য কোথাও তোমাদের ভিক্ষার ঝুলি পূর্ণ হতে পারে না।
শাফা‘আত (সুপারিশ) তিন প্রকার হবে
১. মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য, ২. গুনাহ্ মাফ করানোর জন্য এবং ৩. হাশরের ময়দান থেকে নাজাত দেওয়ার জন্য। এ তৃতীয় প্রকারের সুপারিশের ফলে কাফিররাও উপকৃত হবে। কিন্তু দ্বিতীয় প্রকারের সুপারিশ শুধু মু’মিনদের জন্য প্রযোজ্য হবে। আর প্রথম প্রকারের সুপারিশ থেকে সুন্নাত বর্জনকারীরা বঞ্চিত থাকবে। ফাতাওয়া-ই শামীতে এমনটি বর্ণিত হয়েছে।
যখন জাহান্নাম থেকে ওইসব লোককেও বের করে আনা হবে, যাদের হৃদয়ে সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান রয়েছে, তখন মহান রব এরশাদ ফরমাবেন, ‘‘এখন আমার পালা।’’ তিনি আপন কুদরতের অঞ্জলী ভরে কতগুলো জাহান্নামী লোকদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। এরা ওইসব লোক হবে, যারা আল্লাহর দরবারে মু’মিন, কিন্তু শরীয়তের দৃষ্টিতে মু’মিন ছিলো না। অর্থাৎ যাদের হৃদয়ে স্বীকারুক্তি এসে গিয়েছিলো। কিন্তু মুখে তা স্বীকার করার সুযোগ পায়নি। অথবা যাদের নিকট নুবূয়তের প্রচারণা পৌঁছেনি। বিবেক দ্বারা আল্লাহর একত্ববাদী হয়েছে, না কাফির ছিলো, না শরীয়ত সম্মত মু’মিন হয়েছে। (দেখুন তাফসীর-ই রূহুল বয়ান, এ স্থানে) কাফিরের জন্য মাগফিরাতের দো‘আ করা হারাম। কারণ এটাও সুপারিশ। এজন্য বালেগ মৃত মুসলমানের জন্য বলা হয়- اَللَّهُمَّ اغْفِرْلِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا অর্থাৎ- ‘হে আল্লাহ্! ক্ষমা করো আমাদের জীবিতকে এবং আমাদের মৃতকে। ’’ যদি এ মৃত মুসলমান হয়, তবে সে দো‘আর অন্তর্ভুক্ত হবে। আর যদি ঈমানের উপর তার শেষ নিঃশ্বাস বের না হয়, তবে এ দো‘আ বহির্ভুত থাকবে। তবে না-বালেগ মৃত এর ব্যক্তিক্রম, সে নিশ্চিত মু’মিন। এজন্য কবরস্থানে গিয়ে বলা হয় دَادَ قَوْمٍ مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ (মুসলামনদের অঙ্গিনার লোকদেরকে সালাম)।
আয়াতুল কুরসীর এ অংশে مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ اِلَّا بِاِذْنِه থেকে বুঝা যায় যে, বৃহত্তম শাফা‘আত আল্লাহর অনুমতি প্রাপ্ত খাস বান্দাগণ ব্যতীত কেউ করতে পারবে না। ওই ‘বান্দা-ই খাস’-এর গুণও এযে, তিনি লোকজনের পার্থিব ও পরকালীন অবস্থাদি সম্পর্কে জানেন। কিন্তু অন্য লোকেরা যতটুকু ওই মাহবূব চান ততটুকু ইলমই আয়ত্ব করতে পারবে। [রূহুল বয়ান]
বুঝা গেল যে, হুযূর মোস্তফার দান সবার জন্য সমান, তবে সংগ্রহকারী পাত্র অনুসারে সংগ্রহ করে। যেমন সমুদ্র থেকে কেউ মশক ভর্তি পানি নেয়, কেউ কলসী ভরে নেয়, কেউ অঞ্জলী ভর্তি করে নেয়, কেউ নেয় পেয়ালা ভর্তি করে। যেমনি এখানে কেউ ‘সিদ্দীক্ব’ হয়েছেন, কেউ ‘ফারূক্ব’ ইত্যাদি। আর কোন কোন হতভাগা হয়েছে আবূ জাহল। বাগানে ফুলও থাকে, আবার কাঁটাও। সূর্য-সমানভাবে আলো ছড়ায়; কিন্তু আলোকিত হয় ভিন্ন ভিন্নভাবে। নুবূয়তের জলওয়াও সমানভাবে ছড়ায়, কিন্তু সিদ্দীক্বী ও আবূ জাহলী চোখ পরস্পর ভিন্ন। কবি বলেন-
مصطفے را ديد بوجهل وبگفت – زشت نقشے كز بنى ھاشم شفت
ديد صديقش بگفت اے افتاب – نے ز شرقى نے ز غربى خوش تباب
অর্থ: হযরত মুহাম্মদ মোস্তফাকে আবূ জাহ্ল দেখলো আর বললো, ‘‘বনী হাশেম (গোত্র)-এর এ কেমন অসুন্দর সন্তান!’’ (না‘ঊযুবিল্লাহ্) পক্ষান্তরে তাঁকে হযরত আবূ বকর সিদ্দীক দেখছেন আর বলেছেন, ‘‘ওহে এমন অপূর্ব সূর্য! যা না প্রাচ্যের, না পাশ্চাত্যের। এ কেমন সুন্দর চেহারা!
সুপারিশকারী যার জন্য সুপারিশ করবেন তাকে চেনা জরুরী, যাতে কোন অনুপযুক্ত লোকের জন্য সুপারিশ করা না হয়। আর কোন উপযোগী লোকও যেন সুপারিশ থেকে বঞ্চিত না হয়ে যায়। যেমনিভাবে চিকিৎসকের কোন রোগী চিকিৎসার উপযোগী, কোন রোগীর চিকিৎসা ফলদায়ক নয়- তা জানা দরকার। এজন্য হুযূর-ই আকরাম সাহাবা-ই কেরামকে দু’টি কিতাব (দপ্তর) দেখিয়েছিলেন- যে দু’টিতে জান্নাতী ও দোযখীদের নাম যোগফল সহকারে লিপিবদ্ধ ছিলো। আরেকজন সম্পর্কে যে জিহাদ খুব নিপুণতার সাথে লড়ছিলো, বলেছিলেন, ‘‘এ লোক জাহান্নামী।’’ শেষ পর্যন্ত সে আত্মহত্যা করেছিলো, যা দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, হুযূর আলায়হিস্ সালাতু ওয়াস্ সালাম সৌভাগ্যবান ও হতভাগা- উভয়টি সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। হাউজে কাউসারের নিকট রুখে দেওয়া লোকদেরকে ‘এরা আমার সাহাবী’ বলা তাদেরকে অপমানিত করার জন্যই। অর্থাৎ তারা আমার সাক্ষাৎ পেয়েও আজ হতভাগা। হুযূর-ই আকরাম দুনিয়াতে যেমন জানেন কে জান্নাতী কে জাহান্নামী, আখিরাতেও জানবেন কে শাফা‘আতের উপযোগী আর কে নয়।

লেখক: মহাপরিচালক- আনজুমান রিসার্চ সেন্টার, চট্টগ্রাম।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •