সম্পাদকীয়

0

সিয়াম সাধনা বা রমাদ্বান সম্পর্কে আল্লাহ্ জাল্লাশানুহু পবিত্র ক্বোরআন মজিদে ইরশাদ করেন, ‘‘ হে মু’মীনগণ তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেয়া হলো, যেমন বিধান দেয়া হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর, যাতে তোমরা পরহেজগার (তাক্বওয়া) অর্জন করতে পার।’’ [সূরা বাক্বারা: আয়াত-১৮৩]

মাহে রমাদ্বান প্রশিক্ষণের মাস, সংযত ও আত্মশুদ্ধি অর্জনের মাস, সত্য ও ন্যায়ের অনুশীলনের মাস। দায়িত্ববোধ, কর্তব্যবোধ, সহমর্মিতা, সমবেদনা ও সহানুভূতির, মহা প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত হবার মাস মাহে রমাদ্বান। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত লাভের মাস। এ মাসে অনেক বিত্তশালী মুসলিম পার্শ্ববর্তী অভাবগ্রস্ত, আত্মীয়-স্বজনকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী দান করে থাকে। পাশাপাশি দেখা যায় একশ্রেণির অতি মুনাফা লোভি অসৎ ব্যবসায়ী নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি করে দেয়, যা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক কাজ। যারা অহেতুক দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে সিয়াম পালনকারীর দুর্দশা বৃদ্ধি করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।

আল্লাহর অবারিত রহমতের শুভসংবাদ নিয়ে আগত রমাদ্বানুল মোবারক। যারা রমাদ্বানের সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে না তারা নির্বোধ, নিকৃষ্ঠ। প্রিয় নবী ইরশাদ ফরমান, ‘যে ব্যক্তি মিথ্যা এবং তদনুযায়ী আমল করা ত্যাগ করলোনা তার এই পানাহার ত্যাগ (সিয়াম) করার কোন প্রয়োজন নেই। [সহীহ বুখারী শরীফ] প্রখ্যাত সাহাবী হযরত সালমান ফারসী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু থেকে বর্ণিত, শা’বান মাসের আখেরী দিনে হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে প্রদত্ত খুতবায় বলেন, হে মানুষ, তোমাদের ছায়া দিতে আবর্তিত হতে যাচ্ছে মহান মুবারক মাস, এ মাসে রয়েছে হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রজনী। এ মাসের সিয়ামকে আল্লাহ্ ফরজ করে দিয়েছেন। এ মাসের রাতে দন্ডায়মান হওয়াতে (তারাবীহ নামায) রয়েছে সাওয়াব। যে ব্যক্তি আল্লাহ্র নৈকট্য লাভের জন্য একটি ফরজ কাজ আদায় করবে, সে অন্য মাসের ৭০টি ফরয আদায়ের সাওয়াব পাবে। এটা ধৈর্যের মাস। ধৈর্যের প্রতিদান হচ্ছে ‘জান্নাত’, এ মাস পরস্পরের মধ্যে সদ্ব্যবহার করার ও সহমর্মিতার। এ মাসে মু’মীনদের রিযিক বৃদ্ধি করা হয়। মহান রাব্বুল আলামীন হাদীসে কুদসীতে ইরশাদ করেন, ‘‘ রোযা আমারই জন্য আর আমি নিজেই তার প্রতিদান দেব।’’

এ মাসের শেষ দশকের বিজোড় রাত্রিতে ‘লাইলাতুল ক্বদর’ রাত্রি ঘোষণা করেছেন আল্লাহ্ আমাদের জন্য। হাজার মাসের চেয়েও উত্তম এ রজনীতে ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে তাওবা করে গুনাহ্ ক্ষমা চাওয়া যাবতীয় নেক মকসুদ পুরণ হওয়া এবং একজন ঈমানদার বান্দা হিসেবে পরিগণিত হবার লক্ষ্য নিয়ে আল্লাহর নিকট চাইতে হবে। তাহলে রমাদ্বানের রহমত-বরকত-মাগফিরাত আমাদের নসীব হবে ইনশা-আল্লাহ্। আল্লাহ্ আমাদের পিতা-মাতাদের, আত্মীয়-প্রতিবেশীসহ মুসলিম মিল্লাতকে ক্ষমা করুন। শরীয়ত সম্মত জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আল্লাহ্র সাহায্য কামনা করছি- আ-মী-ন।

১মে আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস বিশ্বের মেহনতী মানুষের প্রতি রইলো শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা। প্রিয় নবী রাহমাতুল্লিল আলামীন’র প্রদর্শিত পথে যেন আমরা শ্রমজীবি মানুষের মূল্যায়ন করতে শিখি এ হোক আমাদের প্রত্যাশা। প্রিয় নবী ইরশাদ করেছেন শ্রমিকের ঘাম শুকিয়ে যাবার পূর্বেই তার পারিশ্রমিক পরিশোধ কর। তোমার পরিচ্ছেদ আহার সবই যেন অধীনস্থদের মধ্যে কোন বৈষম্য সৃষ্টি না করে।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •