প্রশ্ন: একটি কিতাবে দেখেছি আ’লা হযরত শাহ্ আহমদ রেযা ফাযেলে বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি পঞ্চান্ন প্রকারের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। আমার প্রশ্ন হল উক্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানগুলো কি কি ছিলো, জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।

0

 তাজমিন সুলতানা
চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ
চট্টগ্রাম
 প্রশ্ন: একটি কিতাবে দেখেছি আ’লা হযরত শাহ্ আহমদ রেযা ফাযেলে বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি পঞ্চান্ন প্রকারের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। আমার প্রশ্ন হল উক্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানগুলো কি কি ছিলো, জানিয়ে কৃতজ্ঞ করবেন।
 উত্তর: আ’লা হযরত ফকিহে আযম, মুহাদ্দিসে দাওরাঁ ইমামে আহলে সুন্নাত রহমাতুল্লাহি আলায়হি বিভিন্ন ওস্তাদ এবং আপন প্রকৃতিগত প্রতিভার মাধ্যমে যে সব বিষয় ও বিদ্যায় পারদর্শিতা লাভ করেছিলেন তার সংখ্যা পঞ্চান্নটি। তিনি নিজেই এসব বিষয় এর একটি তালিকা তৈরি করে ১৩২৪ হিজরীতে মক্কা শরীফের মুফতী খলিল মক্কী রহমাতুল্লাহি আলায়হির কাছে পেশ করেছিলেন। নিম্নে তাঁর অর্জিত জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিষয়সমূহের বিবরণী উল্লেখ করা হলঃ
১. ইলমূল ক্বোরআন ২. ইলমূল হাদীস, ৩. ইলমে তাফসীর, ৪. ইলমে উসূলে হাদিস, ৫. ইলমে আসমাউর রিজাল, ৬. ইলমে ফিকহ, ৭. ইলমে উসূলে ফিকহ, ৮. ইলমে আকাঈদ ওয়াল কালাম, ৯. ইলমে ফরায়েয, ১০. ইলমে নাহু, ১১. ইলমে সরফ, ১২. ইলমে মাআনী, ১৩. ইলমে বয়ান, ১৪. ইলমে বদী, ১৫. ইলমে আরূজ, ১৬. ইলমে মোনাযারা, ১৭. ইলমে মানতিক, ১৮. ইলমূল আদব, ১৯. ইলমে ফিকহে হানাফী, ২০. ইলমে জদল মহাযযব, ২১. ইলমে ফলসাফা, ২২. ইলমে হিসাব, ২৩. ইলমে হাইয়াত, ২৪. ইলমে হানদাসা, ২৫. ইলমে কেরাত, ২৬. ইলমে তাজবিদ, ২৭. ইলমে তাসাউফ, ২৮. ইলমে সুলুক, ২৯. ইলমে আখলাক, ৩০. ইলমে সিয়ার, ৩১. ইলমে তারিখ, ৩২. ইলমূল লুগাত, ৩৩. এরিস মাতীকি, ৩৪. যবর ও মোকাবালাহ, ৩৫. হিসাবে সিত্তানী, ৩৬. লগারিথম, ৩৭. ইলমে তাওকিত, ৩৮. মুনাযারা ও মারাযাহ্, ৩৯. ইলমূল আকর, ৪০. যীযাত, ৪১. মুছাল্লাছে কুরভী, ৪২. মুছাল্লাছে মোসাত্তারাহ্, ৪৩. হাইয়াতে জাদীদা, ৪৪. মুরারাত, ৪৫. ইলমে জফর, ৪৬. ইলমে যায়েরজাহ্, ৪৭. আরবী পদ্য, ৪৮. ফার্সী পদ্য, ৪৯. হিন্দি পদ্য, ৫০. আরবী গদ্য, ৫১. ফার্সী গদ্য, ৫২. হিন্দি গদ্য, ৫৩. কেতাবাত, ৫৪. খত্তে নাস তালিক পদ্ধতির লিখন, ৫৫. তাজুবাদসহ কেরাত।
বস্তুতঃ ইমাম আ’লা হযরত রহমাতুল্লাহি আলায়হি ছিলেন ইলম ও জ্ঞান রাজ্যের ইনসাইক্লোপিডিয়া বা বিশ্বকোষ। তাঁর শুভ জন্মের কয়েকশত বছর আগ হতে এ পর্যন্ত তাঁর মত জ্ঞান সম্রাট পৃথিবীর ইতিহাসে খুজে বের করা মুশকিল। উপরোক্ত বিষয়সমূহে তিনি দেড় হাজারের মত মূল্যবান জ্ঞানসমৃদ্ধ কিতাব রচনা করে বিশ্ববাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। মনিষীদের কেউ কেউ ফিক্হ শাস্ত্রে তাঁকে বলেছেন যুগের ইমাম আবু হানিফা, হাদিস শাস্ত্রে বলেছেন যুগের ইমাম বোখারী, তাফসির শাস্ত্রে যুগে ইমাম ফখরুদ্দিন রাযী ও তাসাওফ শাস্ত্রে যুগের ইমাম মুহাম্মদ গাজ্জালী, তাঁর জ্ঞান সমুদ্র দ্বারা বর্তমান মুসলিম বিশ্ব যেন ধন্য হতে পারে পরম করুণাময় আল্লাহ্ তা‘আলার আলীশান দরগাহে সে ফরিয়াদ রইল। [ইরফানে শরীয়ত কৃত. আলা হযরত
শাহ্ আহমদ রেযা বেরলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি।
অনুবাদ- অধ্যক্ষ হাফেজ মুহাম্মদ আবদুল জলিল রহমাতুল্লাহি আলায়হি]

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •