শাওয়াল মাসে ছয় রোযা কেন? ছয় রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব

0
মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন
রাউজান, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: একমাস ফরজ রোযা পালনের পর শাওয়াল মাসে ছয় রোযা কেন? ছয় রোজার ফজিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।
উত্তর: পবিত্র মাহে রমজানের দীর্ঘ এক মাস বরকতময় সিয়াম সাধনার পর মুমিন বান্দাগণ যে তাকওয়া ও আত্মশুদ্ধি অর্জন করেছেন তা ধরে রাখা মুমিন নর-নারীর একান্ত ঈমানী দায়িত্ব। তাই শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে নিজেকে রক্ষা এবং দীর্ঘ একমাস রমযান শরীফে তাকওয়া পরহেযগারী ও ইবাদতের প্রতি মনোযোগ ও আকর্ষণকে ধরে রাখতে রমযানের পরের মাসে মাহে শাওয়ালে ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নাত ইবাদতের সাথে সাথে কিছু নফল ইবাদত ও নফল রোযা অত্যন্ত গুরুত্ববহ ও ফজিলতপূর্ণ। তন্মধ্যে শাওয়াল মাসের ছয় রোযা (নফল) অন্যতম ফজিলত মন্ডিত ইবাদত, তদুপরি রমযান শরীফের ফরয রোযার আদায়ে যা ত্রুটি বিচ্যুতি হয়ে থাকে শাওয়ালের ছয়টি নফল রোযা মাধ্যমে তা আল্লাহর রহমতে মাফ হয়ে যায়। পবিত্র মাহে শাওয়ালের ছয়টি নফল রোযা পালনের গুরুত্ব, ফজিলত ও মর্যাদা সম্পর্কে হুযূর পূরনূর রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-
عن ثوبان رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى
الله عليه وسلم من صام ستة ايام بعد الفطر كان تمام السنة من جاء بالحسنة فله عشر امثالها [رواه ابن ماجه ـ جلد ـ ১, صفحه ـ ১২৪
অর্থাৎ জলীলুল কদর সাহাবী এবং প্রিয়নবীর অন্যতম খাদেম হযরত সাওবান রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত রাসূলে মাকবুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি ঈদুল ফিতরের পর (শাওয়াল মাসে) ছয়টি (নফল) রোযা পালন করে, তার জন্য সারা বছরের রোযা পালন হয়ে যাবে। যে একটি ইবাদত করে তার জন্য দশগুণ সাওয়াব রয়েছে। [ইবনে মাযাহ, ১ম খন্ড, পৃ. ১২৪] সহীহ্ মুসলিম শরীফে উল্লেখ রয়েছে, হযরত আবূ আইয়ূব আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন, যে ব্যক্তি রমযানের রোযা রাখে অতঃপর (রমযানের রোযার) অনুস্মরণে শাওয়াল মাসে ছয়টি নফল রোযা রাখে। তার জন্য সর্বদা রোযা রাখার সওয়াব হবে। [সহীহ্ মুসলিম শরীফ:১ম খন্ড, পৃ.৩৬৯, মিশকাত শরীফ] রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের ফজিলত সমৃদ্ধ মাহে রমজানের বিদায়লগ্নে শাওয়াল মাসের শুরুতেই পাপাচারের আশঙ্কা থাকে প্রবল। এ মাসে নিজের নফসকে মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখা কঠিন। তাই শাওয়ালের ছয় রোযা পালনের মধ্য দিয়ে আল্লাহ্- রাসূলকে রাজী করতে পারলেই সফলতা অর্জিত হবে। মাহে রমযানের একমাস ফরয রোযা পালনের পর শাওয়ালের নফল রোযা রাখলে সারা বছর রোযা রাখার সওয়াব পাওয়া যায়।
[সুনানে ইবনে মাজাহ ও ছহি মুসলিম ইত্যাদি]
শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •