নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র মর্যাদা

0

আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ সোলায়মান আনসারী

আল্লাহ্ তা‘আলা সমস্ত নবী রসূলকে সাধারণ মানুষের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। কোন নবীকে কালীমুল্লাহ্ উপাধি দান করেছেন, যেমন হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম। হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস সালামকে খলীলুল্লাহ্ উপাধিতে ভূষিত করেছেন। হযরত আদম আলায়হিস সালামকে ছফীউল্লাহ্, হযরত নূহ্ আলায়হিস্ সালামকে নযীউল্লাহ্ উপাধি দানে শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। হযরত ইসমাঈল আলায়হিস্ সালামকে যবীহুল্লাহ্, হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালামকে রূহুল্লাহ্-এর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আমাদের প্রাণ প্রিয় নবী, দ্বীন-দুনিয়া উভয় জগতের কান্ডারী মুক্তির দিশারী রাহমাতুল্লিল আলামীন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে افضل الرسل তথা হাবীবুল্লাহ্ উপাধিতে ভূষিত করেছেন।
আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস সমগ্র জগতের ওলী-আবদাল, আত্বকিয়া, ছুলাহা, উলামা, গাউস, কুতুব, আওতাদ, নকীব-নুকাবা সবার মান-সম্মান এক পাল্লায় একত্রিত করা হলেও কোন একজন সাহাবীর মান-সম্মান পর্যন্ত পৌঁছবে না। আর হুযূর করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র সকল সাহাবীদের মান-মর্যাদা একসাথে মিলালেও কোন নবীর সমান হবে না। সমস্ত নবী রাসূল’র মান-মর্যাদা, ইজ্জত-সম্মান একত্রিত করা হলেও আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র মান-মর্যাদার সমতুল্য ও সমপর্যায়েরও হবে না। গোটা মুসলিম মিল্লাতের বিশ্বাস ও আক্বীদা হলো সৃষ্টিজগতের মধ্যে যেমন এক খোদা ছাড়া দ্বিতীয় কোন খোদা নেই, অনুরূপভাবে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম হলেন অদ্বিতীয়, অতুলনীয় দৃষ্টান্তহীন। সৃষ্টিকর্তা হিসেবে যেমন আল্লাহ্র কোন দৃষ্টান্ত নেই, অনুরূপ সৃষ্টিজীবের সাথে হায়াতুন্নবীরও নজীর নেই। তিরমিযী শরীফের তাফসীর অধ্যায়ে এবং তাফসীরে মুজাহেরীর সূরা বাক্বারা শরীফের তৃতীয় পারার- تِلْكَ الرُّسُلُ فَضَّلْنَا بَعْضَهُمْ عَلَى بَعْضٍ الخ–এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হুযূর নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র শ্রেষ্ঠত্বের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন- একদা নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরাম’র একটি মজলিশে উপবিষ্ট ছিলেন, তারা পারস্পরিক বিভিন্ন নবীদের বৈশিষ্টাবলী প্রসঙ্গে আলোকপাত করছিলেন। আলোচনার মাঝখানে একজন বললেন, আল্লাহ্ তা‘আলা হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালামকে খলীলুল্লাহ্ নামে ভূষিত করেছেন। আরেকজন বললেন- হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে কলীমুল্লাহ্র স্থান দিয়েছেন। কেউ কেউ বললেন, হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালামকে রূহুল্লাহ্, হযরত আদম আলায়হিস্ সালামকে ছফীউল্লাহ্, হযরত ইসমাঈল আলায়হিস্ সালামকে যবীহুল্লাহ্র স্থান দিয়েছেন। হঠাৎ নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং সাহাবীদের পারস্পরিক আলোচনা শুনছিলেন। তখন তিনি সাহাবাদেরকে সম্বোধন করে বললেন, তোমাদের সবকথা আমার কানে এসেছে। তোমরা বলেছ, ‘যে হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালামকে খলীলুল্লাহ্, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে কলীমুল্লাহ্, হযরত ঈসা আলায়হিস্ সালামকে রূহুল্লাহ্, হযরত আদম আলায়হিস্ সালামকে ছফীউল্লাহ্, হযরত ইসমাঈল আলায়হিস্ সালামকে যবীহুল্লাহ্ ইত্যাদি ইত্যাদি। আর জেনে রাখ আমি হলাম হাবীবুল্লাহ্। যেমন তিনি বলেন-
الا وانا حبيب الله ولافخر وانا حامل لواء الحمد يوم القيامة تحته ادم ودونه ولا فخر-
অর্থ: জেনে রাখ, আমি আল্লাহর মাহবুব প্রিয় বন্ধু, এটা কোন আহমিকার বিষয় নয়, কিয়ামত দিবসে লিওয়ায়ি হামদ আমিই বহনকারী হব। হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম ও অন্যান্য নবী আমার পতাকার নিচে অবস্থান করবেন। এটাও অহংকার এবং গৌরবের বিষয় নয়। এ কারণে আমি আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ।
[মিশকাত শরীফ: পৃষ্ঠা-৫৫] প্রিয় পাঠকগণ! কিছু জ্ঞানপাপী, বদ-আক্বীদার মানুষ, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের অনুসারীদেরকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলে থাকে যে, আমরা নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ’র মান-মর্যাদা বাড়াতে গিয়ে আল্লাহর সাথে অংশীদারিত্ব করে মুশরিকদের দলে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছি। তাদের নিকট আমাদের বিনীত আবেদন, আমরা মুশরিক নই ও নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে আল্লাহ্র সমকক্ষের দাবীদারও নই। বরং তাঁকে আল্লাহ্র প্রিয় বন্ধু ও হাবীবুল্লাহ্ হিসেবে জানি। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি, যদি কোন এক বিঘা জমিনের দুই ভাই অর্ধেক অর্ধেক হিসেবে অংশীদার হয়, তাদেরকে শরীকদার বলা হয়। কিন্তু নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর অংশীদার নন। কারণ অংশীদার তো অর্ধেক অর্ধেকের উত্তরাধিকারী হয়। আল্লাহ্র প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র মান-মর্যাদা অনেক উর্ধে। প্রেমিক আল্লাহ্ তা‘আলা প্রেমাস্পদ মাহবুব হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে বলেন, আমি আপনার, আপনি আমার, আমার সবকিছু আপনার জন্য। ইমাম আ’লা হযরত চমৎকার বলেছেন-
ميں تو مالك هى كهوں غاكه مالك كه حبيب يعنى محبوب و محب مي نهيں ميرا تيرا-
অর্থাৎ- আমাদের আক্বা মওলা প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ্’র হাবীব বা প্রিয় বন্ধু, তাঁর কোন দৃষ্টান্ত নেই। যিনি অনুপম চরিত্রের অধিকারী, উত্তম আদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম নবীদের নবী
মহান আল্লাহ্ তা‘আলা কোন নবীকে ‘আদ’ গোত্রের জন্য, কোন নবীকে ‘সামুদ’ গোত্রের জন্যে প্রেরণ করেছেন। আবার কোন কোন নবীকে কেন্দ্র, এলাকা, গোত্র ভিত্তিক নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন। আবার কোন কোন নবী নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এসেছেন। আর আমাদের প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন-
وما ارسلناك الا كافة للناس بشيرا ونذيرا-
অর্থাৎ- আমি আপনাকে সমগ্র জগতের শুভ সংবাদ দাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী হিসেবে পাঠিয়েছি। আল্লাহ্ আরো বলেন, (হে হাবীব আপনি বলুন) – انى رسول الله اليكم جميعا হে লোকসকল! আমি তোমাদের সকলের কাছে রাসূল হিসেবে প্রেরিত।
পূর্ববর্তী নবীগণ এলাকা ভিত্তিক ছিলেন। আর আমাদের প্রিয় রসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সকল জগৎবাসীর জন্য। তিনি ভূমন্ডলের, নভোমন্ডলের জন্য, উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম, চন্দ্র-সূর্য, জীব, জড়, মানব, দানব, বৃক্ষ, তরুলতা, ফেরেশতা, কীট-পতঙ্গ, এক কথায় সকলের নবী।
আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আপাদ-মস্তক পরিপূর্ণ মুযিজারূপে তাশরীফ এনেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা কোন নবীকে একটি, আবার কোন নবীকে তিনটি মুযিজা দিয়েছেন। হযরত আদম আলায়হিস্ সালাম, হযরত ইব্রাহীম আলায়হিস্ সালাম, হযরত ইসমাঈল আলায়হিস্ সালাম, হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম সহ সকল নবী মুযিজা নিয়ে এসেছেন। তবে আমাদের প্রিয় নবী হযরত সৈয়্যদে আলম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আপাদ-মস্তক মুযিজা হিসেবে তাশরীফ এনেছেন। তাঁর দেখা মুযিজা, শ্রবণ মুযিজা, পবিত্র বাণী মুযিজা, হাত মোবারক, পা মোবারক, গর্দান, লেবাস মোবারক, মাথার চুল মোবারক, ভ্রু মোবারক, জুলফি মোবারক সবকিছু মুযিজা। উঠা-বসা, খানা-পিনা, জাগ্রত-নিন্দ্রা মুযিজা। আরশের অবস্থান, ক্বোরআন তেলাওয়াত, পবিত্র জিন্দেগী মুযিজা, তাঁর পুরো সত্তায় মুযিজাতে পরিপূর্ণ। এককথায় তিনি সৃষ্টির সেরা, সবদিক দিয়ে অতুলনীয়।
আল্লাহ্ তা‘আলা নবীগণকে মুযিজা দান করেছেন। তাঁদের মুযিজা সমূহ জীবদ্দশা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। যেমন- হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে পবিত্র লাঠির মুযিজা দান করেছেন। লাঠির আঘাতে পাথর হতে পানির ঝর্ণা প্রবাহিত হওয়া। এমনকি তাঁর লাঠির প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে ফেরাঊনের যাদুকরেরা মাথা নত করতে বাধ্য হয়েছিল। বর্তমান হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম’র অনুসারীরা সে মুযিজা দেখাতে পারবে না। কারণ সেটা হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম’র জীবদ্দশা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। আর আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র মুযিজা এখনো বিদ্যমান। ক্বোরআন মজিদ হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র অদ্বিতীয় মুযিজা বর্তমান দীপ্য প্রমাণ। প্রলয় দিবস পর্যন্ত ক্বোরআন শরীফের প্রতিটি হরফ, শব্দ হুযূর সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র শ্রেষ্ঠত্বের উপর সাক্ষ্য রয়েছে।
হযরত মূসা আলায়হিস্ সালামকে তূর পাহাড়ে আহ্বান করলেন, আবার কাউকে আসমানে উঠিয়েছেন, কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে মি’রাজ রজনীতে লা-মকানে নিয়ে গেছেন। একথা দিবালোকের মত প্রতিপাদ্য যে, এসব ব্যক্তিদের আলোচনা বর্ণনা করেছে, তা তাঁদের জীবদ্দশার ফলে অর্থাৎ ঐতিহাসিক ব্যক্তি সত্তার অস্তিত্ব আগে তাঁর ইতিহাস রচিত হয় পরে। কিন্তু আমাদের প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র ইতিহাস, জীবন-চরিত আগে আর ব্যক্তি সত্তার অস্তিত্ব পরে। এ বিষয়ে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
انا سيد ولد ادم يوم القيامة واول من ينشق عنه القبر واول شافع واول مشفع-
অর্থাৎ- আমি হলাম কিয়ামতের ময়দানে আদম সন্তানের সরদার এবং আমিই প্রথম কবর হতে বের হব। আর আমিই প্রথম সুপারিশকারী, আর প্রথমেই আমার সুপারিশ গৃহীত হবে।

ময়দানে হাশরের পরিস্থিতি ও শাফায়াতের বর্ণনা
ইমাম আ’লা হযরত রাহমাতুল্লাহি আলায়হি’র ছোট ভাই হযরত হাসান রেজা খাঁ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি শাফায়াতের বিবরণ দিতে গিয়ে একটি অতীব সুক্ষ্ম তাত্বিক কথা বলেছেন। আল্লাহ্ তা‘আলা কিয়ামত দিবসের এ অনুষ্ঠান আয়োজন করার কারণ কি? যদি উত্তরে বলা হয় যে, লোকদের কাছ হতে হিসাব নেওয়ার জন্য; নেক্কার লোকদেরকে জান্নাতে এবং বদকারদেরকে জাহান্নামে পাঠাবেন। কিন্তু আল্লাহ্ তা‘আলা তো عليم بذات الصدور তিনি লোকদের যারা নেক্কার তাদেরকে চিনেন এবং যারা বদকার তাদেরকেও চিনেন। কে জান্নাতি আবার কে জাহান্নামী তিনি সবকিছু জানেন। তাঁর চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের সামনে কারো আঙ্গুল তুলে প্রশ্ন করার অবকাশ নেই। হাসান রেজা খাঁ রাহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন-
فقط اتنا سبب هے انعقاد بذم محشر كا
كه ان كى شان محبوبى دكهائى جائى والى هيں-
হাশরের ময়দানে সমস্ত লোককে সমবেত করার একমাত্র কারণ হল এই যে, যে সকল সৃষ্টি জীবকে একত্রিত করা হবে আর রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র শান-মান তুলে ধরার জন্য ময়দানে মাহশরের মধ্যে লোকদেরকে একত্রিত করা হবে।
রাসূলে পাক সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে আরো কিছু আলোকপাত করা হল। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন- وكلم الله موسى تكليما অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা বাস্তবেই হযরত মূসা আলায়হিস্ সালাম’র সাথে কথা বলেছেন। তবে সেটা পর্দার অন্তরালে। আর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র সাথে সরাসরি কথা বলেছেন।
কলীমুল্লাহ্ তাঁকে বলা হয়, যিনি রব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি চান। আর হাবীবুল্লাহ্ বলা হয় আল্লাহ্ তা‘আলা যার সন্তুষ্টি চান। কলীম খোদায়ী কিতাব তাওরাত শরীফ আনার জন্য তূর পাহাড়ে গিয়েছিলেন। আর হাবীব হলেন তিনি যার কাছে যেখানে থাকেন সেখানে ক্বোরআন মজিদ নাযিল হয়। অতএব, মক্কায় অবস্থান কালে নাযিলকৃত আয়াতকে মক্কী, আর মদীনা শরীফে অবস্থানকালে নাযিলকৃত আয়াতকে মদানী আয়াত বলা হয়।
কলীমুল্লাহ্ বক্ষ বিদারণের জন্য রব্বুল আলামীনের কাছে প্রার্থনা করেছেন, কিন্তু হাবীবুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম প্রার্থনা করা ছাড়া তাঁর বক্ষ বিদারণ করে দিয়েছেন। যেমন আল্লাহ্ বলেন- الم نشرح لك صدرك হে প্রিয় রাসূল সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম আমি কি আপনার জন্য সিনা মুবারক বিদীর্ণ করিনি। অর্থাৎ আপনার আবেদন নিবেদন ছাড়াই আমি স্বয়ং দয়া-পরবশ হয়ে আপনার সিনা মুবারকে সৃষ্টি জগতের সমস্ত জ্ঞান-বিজ্ঞান খুলে দিয়েছি। সৃষ্টির শুরু হতে প্রলয় দিবস পর্যন্ত এমনকি কে জান্নাতি কে জাহান্নামী হবে সব বিষয়ের জ্ঞান আপনাকে প্রদান করেছি।

লেখক: শায়খুল হাদীস, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া কামিল মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •