মুহাম্মদ সালমান ফার্সি, নাজিরহাট, ফটিকছড়ি, ট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: জুমুআর নামাযের খুতবা স্ব-স্ব মাতৃভাষায় দিতে পারবে কিনা? যেহেতু সম্প্রতি আহলে হাদিস নামধারী মৌলভীরা দাবী করছে জুমার নামাযের খুতবা বাংলা ভাষায় দিতে পারবে। তাদের যুক্তি হলো- খুতবাহ্ দেওয়া হয় মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে, যদি আরবী ভাষায় খুতবাহ্ দেওয়া হয় তাহলে মুসল্লিগণ কি বোঝবে আর কি আমল করবে? তাই বাংলাদেশের মানুষদের জন্য বাংলা ভাষায় খুতবা দেওয়া প্রয়োজন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে সঠিক মাসআলা জানানোর অনুরোধ করছি।
উত্তর: জুমু‘আ শুদ্ধ হওয়ার জন্য যেসব শর্তের প্রয়োজন তন্মধ্যে ‘খুতবা’ অন্যতম। আর খুতবা আরবী ছাড়া অন্য কোন ভাষায় হওয়া মাকরূহে তাহরিমী বা গুনাহ্ এবং সুন্নাতে মুতাওয়ারিসার পরিপন্থী। [ফাতাওয়া-এ রজভীয়্যাহ্, ৩য় খন্ড, পৃ. ৭২০পৃ.]
তাছাড়া ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে খুতবা শুধুমাত্র নিছক কোন ওয়াজ নসিহত নয় বরং তা ذكرالله যিকরুল্লাহও্ একটি স্বতন্ত্র ইবাদত তথা নামাযের সম মর্যাদার অধিকারী। নামায যেমন আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় বৈধ নয়, তেমনি খুতবাও আরবী ভাষা ব্যতীত অন্য ভাষায় প্রদান করা মাকরূহে তাহরীমি ও নাজায়েয।
প্রিয়নবীর সাহাবায়ে কেরাম ইসলাম প্রচারের জন্য আরবের বাইরে অনেক দেশের বহু মুসলিম অঞ্চলে সফর ও সেখানে জুমার নামায আদায় করেছেন মর্মে হাদীসের কিতাব ও মুস্তানাদ ইতিহাসের কিতাবে প্রমাণ রয়েছে। এছাড়াও সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে অনেকে এমনও ছিলেন যে, যারা আরবী ছাড়াও আরো অনেক ভাষায় পারদর্শী ছিলেন কিন্তু কোন সাহাবী কোনী অনারবদেশে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা দিয়েছেন মর্মে নির্ভরযোগ্য কোন হাদিস ও ইতিহাসের কিতাবে কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না। নি¤েœ এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ
عَنْ عُمَرُ بْنِ الْخَطَّابِ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ اِنَّه قَالَ
جُعِلَتِ الْخُطْبَةُ مَكَانَ الرَّكْعَتَيْنِ
হযরত ফারুকে আজম রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বলেন, জুমার দুই খুতবাকে অন্যান্য দিনের দুই রাকাত জোহরের নামাযের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
[মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২/১২৮ পৃ.
ও মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক ৩/২৮৭পৃ.]
عَنْ سَعِيْدِ بْنِ جُبَيْرٍ قَالَ كَانَتِ الْجُمُعَةُ
اَرْبَعًا فَخْطِبَ رَكْعَتَانِ لِلْخُطْبَةِ
প্রখ্যাত তাবেঈ হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু বর্ণনা করেন যে, জুমার নামায চার রাকাত ফরজ হত কিন্তু খুত্ববাকে দুই রাকাতের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
[আল মুদাওয়ানাতুল কোবরা ১/৫৮পৃ.]
عَنْ اَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيهْ وَسَلَّمَ فَاِذَا خَرَجَ الْاِمَامُ طَوَوَا صُفُحَهُمْ وَيَسْتَمِعُوْنَ الذِّكْرَ
হযরত আবূ হোরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন- ইমাম যখন খুত্ববা দানের নিমিত্তে বের হন বা দাড়ান তখন ফেরেশতাগণ জুমার নামাযে আগমনকারীদের তালিকা তৈরী মুলতবী রেখে জিকির তথা খুতবা শুনার কাজে মনোনিবেশ করেন।
[বোখারী ১/১২৭পৃ. মুসলিম ১/১৮২পৃ.]
হানাফী মাযহাবের মূল কিতাব مبسوط للسرخسى তে আছে-
حَقِيْقَةُ الْخُطْبَةِ ذِكْرُ اللهِ لِاَنَّ اللهَ تَعَالى قَالَ اِذَا نُوْدِىَ لِلصَّلوةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا اِلى ذِكْرِ اللهِ اَلْمُرَادُ مِنْهُ اَلْخُطْبَةُ
খুত্ববার গুরুত্ব বা তত্ত্ব হচ্ছে আল্লাহরذكر ও ইবাদত যেহেতু পবিত্র কোরআনে আছে, জুমার যখন আজান দেওয়া হয় তোমরা আল্লাহর যিকিরের দিকে ধাবিত হও। এটা দ্বারা খুত্ববাই উদ্দেশ্য। [মবসূত ২/২২ পৃ.]
সুতরাং পবিত্র ক্বোরআনের আয়াতে পাকেও খুত্ববাকে শুধুমাত্র নসিহতের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি বরং এটাকে আল্লাহর যিকিরের মধ্যে গণ্য করে ইবাদতের মধ্যে শামিল করেছেন। তাই তাসবীহ্, তাকবীর, নমাযসহ অন্যান্য ইবাদতে প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের অনুসরন করা জরুরী।
قَالَ الرَّافِعِىُّ وَهَلْ يُشْتَرَطُ اَنْ يَّكُوْنَ الْخُطْبَةُ كُلُّهَا بِالْعَرَبِيَّةِ؟ فِيْهِ وَجْهَانِ اَلصَّحِيْحُ اِشْتِرَاطُه بِالْعَرَبِيَّةِ فَاِنْ لَمْ يَكُنْ فِيْهِمْ مَنْ يُحْسِنِ الْعَرَبِيَّةَ ـ خَطَبَ بِغَيْرِهَا وَيَجِبُ عَلَيْهِمْ التَّعْلِيْمُ وَاِلاَّ عَصَوْا وَلاَ جُمُعَةَ لَهُمْ
হযরত ইমাম রাফেঈ রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন যে, খুত্ববা পুরোটা আরবীতে হতে হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি মত প্রকাশ করেন যে, এতদ্বিষয়ে দুই মতের মধ্যে সঠিক মত হল পুরোটা আরবী হওয়া শর্ত ও ওয়াজিব। হ্যাঁ, কিন্তু যাদের মধ্যে আরবী জানার মত কোন লোক বিদ্যমান না থাকে তখনই অনারবীতে খুত্ববা দেওয়া যায়। তবে তাদের উপর আরবীতে খুত্ববা শিখে নেওয়া ওয়াজিব। অন্যথায় তারা সবাই গুনাহ্গার হবে এবং অনারবীতে খোত্ববা দেওয়ার নিয়ম চালু রাখার কারণে তাদের জুমা শুদ্ধ হবে না। [ইত্তেহাফুস্ সাআদাতিল মুত্তাক্বীন ৩/৩৬৮পৃ.]
শাহ্ অলিউল্লাহ্ মুহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহি আলায়হি তাঁর অভিমত প্রকাশ এভাবে করেন যে,
چوں خطب آنحضرت وخلفاۓ راشدين جرًّا ملاحظه كرديم عربي
بودن خطبه باوجود آنكه دربسيارےازآقاليم مخاطبان عجمى بودند
অর্থাৎ হযরত রসূল-ই করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম থেকে খোলাফায়ে রাশেদীনের পরে এ যাবৎকাল পর্যন্ত দৃষ্টি নিবদ্ধ করলে দেখা যায় যে, খুত্ববা আরবীতেই ছিল। অথচ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সমস্ত মুসল্লিদের মধ্যে অনেক মুসল্লি আজমী তথা অনারবী ছিল। অথচ খুত্ববা কেউই আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় দেননি। এতেই প্রতীয়মান হয় যে, খুত্ববা আরবী হওয়া আবশ্যকীয়। مسوى مصفى شرح مؤطًا مالك ১/১৫৪
অনুরূপ বিশ্বখ্যাত ইমাম আল্লামা নববী রহমাতুল্লাহি আলায়হি বলেন- وَيُشْتَرَطُ الْخُطْبَةُ بِالْعَرَبِيَّةِ জুমার খুত্ববা আরবী ভাষায় হওয়া শর্ত। অর্থাৎ অনারবীতে হলে খুত্ববাই হল না। [কিতাবুল আযকার: ১০৪, পৃ.]
ইমাম মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহি আলায়হি ও ইমাম আবু ইউসুফ রহমাতুল্লাহি আলায়হি যাঁরা ছিলেন স্বয়ং তাবে তাবেঈ যাদের অনুকরণ অনুসরণ করার জন্য রসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এভাবে নির্দেশ প্রদান করেছেন যে,
اِسْتَوْصُوْا مِنِّىْ بِاَصْحَابِىْ ثُمَّ الَّذِيْنَ
يَلُوْنَهُمْ ثُمَّ الَّذِيْنَ يَلُوْنَهُمْ
তোমরা আমার সাহাবা, তাবেঈ ও তাবে তাবেঈ থেকে অনুকরণ করার উপদেশ গ্রহণ কর। এ দুই প্রখ্যাত ইমামের অভিমত হল-
اَلْخُطْبَةُ بِالْعَرَبِيَّةِ حَيْثُ شَرَطَاهَا اِلاَّ عِنْدَ الْعِجْزِ
উভয় ইমাম আরবীতে খুত্ববা দেওয়া শর্ত বলেছেন। হ্যাঁ তবে আরবী পড়তে অপারগ হলে ভিন্ন কথা।
[রাদ্দুল মোহতার, ৬/১৪৭পৃ.]
মাওলানা আবদুল হাই লখনভী লিখেন যে,
لاَ شَكَّ فِىْ اَنَّ الْخُطْبَةَ بِغَيْرِ الْعَرَبِيَّةِ خِلاَفُ السُّنَّةِ الْمُتَوَارِثَةِ مِنَ النَّبِىِّ وَالصَّحَابَةِ فَيَكُوْنُ مَكْرُوْهَةً تَحْرِيْمَةً
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবায়ে কেরামের রীতি-নীতি বিরোধী কাজ হল অনারবীতে খুতবা প্রদান। সুতরাং তা মাকরূহে তাহরীমি। [ওমদাতুর রেয়ায়া, শরহে বেকায়ার পাদটিকা, পৃ. ১/২০০পৃ.]
সুতরাং প্রমাণিত হল জুমা ও দুই ঈদের খোতবা আরবীতে হতে হবে। হ্যাঁ জুমার খুতবার আজানের পূর্বে যে কোন ভাষায় খুতবার সারমর্ম বয়ান করতে কোন অসুবিধা নেই।
وكل ما حرم فى الصلاة حرم فيها ـ اى فى الخطبة [الدر المختار مع رد المحتار [৩৫-৩]
দুররে মোখতার ও রদ্দুল মোহতারে এসেছে- যা নামাযে হারাম তা জুমা ও ঈদের খুতবায়ও হারাম।
[৩য় খন্ড, পৃ. ৩৫]
الخطبة يوم الجمعة وفى العيد بغير اللسان العربى ـ اوترجمتها بالعجمى احدثوا ذلك بعد قرون الخير بلا اثارة من علم [مجموعة الفتاوى -ـ/২ ২৪৭
অর্থাৎ মাজমুয়ায়ে ফতোয়ায় মাওলানা আব্দুল হাই লখনভী বলেন- জুমা ও ঈদের খুতবা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় প্রদান করা অথবা খুতবার মাঝখানে অন্য ভাষায় অনুবাদ করা সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন ও তবে তাবেঈনের যুগের পর জাহেল ও অজ্ঞতা সৃষ্টি করেছে যা ভিত্তিহীন। [২য় খন্ড, পৃ. ২৪৭]
فانه لاشك فى ان الخطبة بغير العربية خلاف السنة المتاوارثة من النبى صلى الله عليه وسلم والصحابة ـ فيكون مكروها تحريما (عمدة الرعاية على هامش شرح الوقاية ـ باب احكام صلاة الجمعة ـ ১/২০০)
অর্থাৎ ওমদাতুর রেয়ায়া হাশিয়ায় শরহে বেকায়ায় মাওলানা আব্দুল হাই লকনবী বলেন- জুমা ও ঈদের খুতবা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় প্রদান করা সুন্নাতে মুতাওয়ারিসার-এর পরিপন্থী। যা শরীয়তের দৃষ্টিকোণে মাকরূহে তাহরিমী ও গুনাহ।
[জুমার নামায, অধ্যায় ১ম খন্ড, পৃ. ২০০]
ولاينبغى للامام ان يتكلم فى الخطبة بشيء من حديث الناس ـ لانه ذكر منظوم (مبسوط سرخسى ـ كتاب الصلاة ـ باب صلاة الجمعة ـ دار الكتب العلمية ـ ২/২৭)
অর্থাৎ ইমাম সরখসি মাবসুত কিতাবে লিপিবদ্ধ করেন, ইমামের জন্য খোতবায় নিজের পক্ষ হতে আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় অনুবাদ করা উচিত নয়।
[জুমা অধ্যায়: ২য় খন্ড, পৃ.২৭]
الكراهة انما هى لمخالفة السنة ـ لأن النبى صلى الله عليه وسلم واصحابه قد خطبوا دائما بالعربية …الى قوله : الخطبة بالفارسية وغيرها من اللغات العربية بدعة ـ وكل بدعة ضلالة ، والضلاة ادنى درجتها الكراهة ، فلا يخلوان الخطبة بغير العربية عن الكراهة ووجه كونه بدعة انه لم يكن فى القرون الثلاثة ـ (مجموعة رسائل اللكنوى ـ ৪/৩৭৬ رسالة اكام النفائس ـ ৪৪)
অর্থাৎ মাজমুয়ায়ে রসায়েলে মাওলানা আব্দুল হাই লকনবী বলেন, জুমা ও ঈদের খুতবা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় প্রদান করা মাকরূহ, যেহেতু অন্য ভাষায় জুমার ও ঈদের খুতবা প্রদান প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের সুন্নাতের পরিপন্থী। যেহেতু রাসূল এবং সাহাবায়ে কেরাম সদা-সর্বদা আরবীতে খুতবা প্রদান করেছেন। সুতরাং আরবী ছাড়া ফার্সী বা অন্য ভাষায় খুতবা দেয়া পথভ্রষ্টতা তা মন্দ বিদআত। আর মন্দ বিদআতের সর্বনিম্ন স্তর হল মাকরূহ। যেহেতু নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম ও নবী করীমের কোন সাহাবী কখনো আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা প্রদান করেন নি। [৪র্থ খন্ড, ৩৭৬ পৃ.]
الخطبة بالفارسية التى احدثوها واعتقدوا احسنها ليس الباعث اليها الا عدم فهم العجم اللغة العربية ـ وهذا الباعث قد كان موجودا فى عصر خير البرية ـ وان كانت فى اشتباه ـ فلا اشتباه فى عصر الصحابة والتابعين ومن تبعهم من الائمة المجتهدين ـ حيث فتحت الامصار الشاسعة, والديار الواسعة ـ واسلم اكثر الحبش والروم والعجم وغيرهم من الاعجام ـ وحضروا مجالس الجمع والاعياد وغيرها من شعائر الاسلام ـ وقد كان اكثرهم لا يعرفون اللغة العربيةـ ومع ذلك لم يخطب لهم احد منهم بغير العربية ولما ثبت وجود الباعث فى تلك الازمنة ـ وفقد ان المانع والتكاسل ونحوه معلوم بالقواعد المبرهنة لم يبق الا الكراهة التى هى ادنى درجات الضلالة (مجموع رسائل عبد الحى الكنوى ـ ৪/৩৭৮ـ৩৭৯ـ رسالة اكام النفائس ـ ৪৬ـ ৪৭)
অর্থাৎ জুমা ও ঈদের খুতবা আরবী ছাড়া অন্যভাষায় ফার্সী ইত্যাদিতে প্রদান করা মন্দ বিদআত। যেহেতু সাহাবায়ে কেরামের জমানায় অনেক দেশ-শহর ইসলামের ছায়া তলে এসেছে, তখন হাবশ, রুম ও অনেক অনারব দেশের অনেক লোক ইসলাম গ্রহণ করেছেন। অথচ তাঁরা জুমা ও ঈদের নামাযে অংশ গ্রহণ করেছেন। তাদের অধিকাংশ আরবী ভাষা না বুঝলেও কোন সাহাবী, কোন তাবেয়ী ও কোন তবে তাবেয়ী কেউ কখনো জুমা ও ঈদের খুতবা আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় প্রদান করেন নি। সুতরাং আরবী ছাড়া অন্য ভাষায় খুতবা প্রদান করা মাকরূহ হওয়া থেকে মুক্ত নয়।
[মাজমুয়ায়ে রসায়েল: কৃত. আব্দুল হাই লকনভী, ৪র্থ খন্ড, পৃ. ৩৭৮ ও ৩৭৯ এবং রেসালা আহকামুন নাফায়েস, কৃত. আবদুল হাই লকনভী, পৃ. ৪৬ ও ৪৭]
এ বিষয়ে পূর্বে তরজুমান প্রশ্নোত্তর বিভাগে ও আমার রচিত যুগ জিজ্ঞাসায় প্রামাণ্য আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং আহলে হাদিস নামধারী ভ- ও পথভ্রষ্ট মওলভীদের খপ্পরে পড়ে সুন্নাতে রসূল ও সাহাবায়ে কেরামের প্রবর্তিত সুন্নাতের বিপরীত পন্থা অবলম্বন করে পথভ্রষ্ট না হওয়ার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ রইল।
মুহাম্মদ সোলাইমান চৌধুরী জিসাত, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: চুল কাটা ও সেইভ করার পর গোসল না করে নামায পড়তে পারব কিনা? জানালে উপকৃত হব।
উত্তর: চুল কাঁটা বা সেইভ করার পর গোসল করতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। এ ছাড়া চুল কাটার পর মাথা ধুয়ে ফেললেই চলে। সুতরাং চুল কেটে গোসল না করলে কোন অসুবিধা নেই। তবে উত্তম হলো মাথা ও চেহারা ভালভাবে ধুয়ে ফেলা। তাছাড়া আমাদের দেশের অধিকাংশ নাপিত বিধর্মী ও অমুসলিম বিধায় গোসল করা উত্তম। [যুগ-জিজ্ঞাসা ও মাসিক তরজুমান ইত্যাদি]
প্রশ্ন: রান্নাকৃত ডেক্সির মধ্যে পিপড়া পড়লে রান্নাকৃত খাবার খাওয়া যাবে কিনা, জানালে উপকৃত
উত্তর: পিপঁড়া দৃশ্যমান হলে পিপঁড়াসহ উক্ত রান্নাকৃত খাবার ফেলে দিবে যে অংশে পিঁপড়া পড়েছে। কারণ পিপড়াসহ রান্নাকৃত খাবার গ্রহণ করলে ক্ষতি হতে পারে। সুতরাং খাবারের যে অংশে পিপড়া পড়েছে তৎসংলগ্ন কিছু ফেলে দিয়ে সন্দেহ মুক্ত বাকী খাবারগুলো খাওয়া জায়েয।
মুহাম্মদ আবদুল মাবুদ, স্ট্যাশন রোড, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: নামায পড়া, কোরআন পড়া, তসবিহ্ পড়া এবং অন্যান্য এবাদত করতে মুখে মাস্ক পড়ে করলে ভাল, না কি মাস্ক ছাড়া পড়লে ভাল। কেউ কেউ বলেন (মাস্ক পড়ে যদি এবাদত করা হয়) মাস্ক পড়া অবস্থায় হাশরের ময়দানে উত্তোলন করা হবে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী।
উত্তর: বিশেষ প্রয়োজন ও ওজর ব্যতীত নামাযাবস্থায় নাক মুখ ঢেকে রাখা অর্থাৎ কাপড় দ্বারা হোক বা মাস্ক দ্বারা হোক, এমনভাবে ঢেকে রাখা যাতে চেহারা বা নাক দেখা না যায় তা মাকরূহে তাহরীমী।
হাদীসে পাকে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম নামাযের সময় কাপড় ওপর থেকে নিচের দিকে ঝুলিয়ে দিতে ও মুখ ঢেকে রাখতে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আব দাউদ শরীফ, ৬৪৩নং হাদিস) তাছাড়া ফিক্বহের বিভিন্ন কিতাবে এ প্রসঙ্গে বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন- নুরুল ঈযাহ্ গ্রন্থে রয়েছে-
يكره للمصلى تغطية انفه وضع شيء
فى فمه يمنع القراة المستونة
অর্থাৎ নামাযী ও মুসল্লিদের জন্য নামায অবস্থায় নাক ও মুখ ঢেকে রাখা এবং মুখের মধ্যে এমন কিছু রাখা মাকরূহ যা সুন্নাত (মোতাবেক কেরাত পড়তে বাঁধা সৃষ্টি করে। [মাকরূহ অনুচ্ছেদ, নামায অধ্যায়।]
তবে বর্তমান মহামারী-পরিস্থিতিতে করোনা ভাইরাসের ভয়ে সতর্কতা স্বরূপ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে হালকা পাতলা মাস্ক মুখে পরে নামায আদায় করলে দুর্যোগময় বিশেষ পরিস্থিতির দরুন নামায আদায় হয়ে যাবে তবে সূরা, কেরাত ও সহি শুদ্ধভাবে উচ্চারণ করতে হবে। যেহেতু বিশেষ প্রয়োজনে অনেক নিষিদ্ধ বস্তু ও মুবাহ্ তথা হালাল হয়ে যায়, যেমন ভূখায় কাতর ব্যক্তি প্রাণ রক্ষার্থে প্রয়োজনে হারাম বস্তু ভক্ষণ করতে পারবে। আর প্রশ্নে উল্লেখিত মাস্ক পড়ে ইবাদত করলে হাশরের ময়দানে মাস্কসহ উত্তেলন করা হবে এমনটা বলা অমূলক ও ভিত্তিহীন। [নুরুল ইযাহ্ ইত্যাদি]
মুহাম্মদ আব্দুল হাই, পারদীঘুলিয়া, টাঙ্গাইল।
প্রশ্ন: কবরের উপর ঘর নির্মাণ করা সম্পর্কে শরীয়তের বিধান কি? বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর: কোন মুসলমানের কবর বা কবরস্থানের উপর যদিও তা পুরাতন হোক না কেন, ঘর-বাড়ি, মসজিদ-মাদরাসা, দোকান পাট, হাঁটা বা চলাচলের রাস্তা ইত্যাদি নির্মাণ করা নাজায়েয ও হারাম যা মারাত্মক গুনাহ্। এমনকি পুরাতন কবরস্থান যেখানে কোন নিশানা নাই বা কোন মৃত মুসলমানের কবরে হাড্ডির কোন অস্তিত্ব নাই তবুও সেখানে ঘর-বাড়ি, ক্ষেত-খামার, চলাচলের রাস্তা, মাদরাসা-মসজিদ, দোকান-পাট, ইত্যাদি তৈয়ার করা হারাম ও শরীয়ত সমর্থন করে না। কবরের ওপর এসব স্থাপনা করা মানে কবর বাসীকে কষ্ট দেয়া। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- اِن الميت يناذى مما يناذى منه الحى অর্থাৎ জীবিত ব্যক্তিরা যেসব কাজে কষ্ট পায় মৃতরাও ওই সব কাজের দরুন/ কারণে কষ্ট পায়।
সহীহ্ মুসলিম শরীফে প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহুর সূত্রে বর্ণিত আছে-
لان يجلس احدكم على جمرة فتحرق ثيابة فتخلص
الى جلده خيرمن ان يجلس على قبر [رواه مسلم]
অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে কেউ জ্বলন্ত আগুনের অঙ্গারে বসলো, অতঃপর ওই আগুন তার কাপড় জ্বালিয়ে চামড়া পর্যন্ত জ্বালিয়ে দেবে। এটা তার জন্য কবরের উপর বসা থেকে উত্তম।
[সহীহ্ মুসলিম শরীফ, ১৬১২ নং হাদীস ও
আবু দাউদ শরীফ, কিতাবুল জানাযেয-১০৪ নংপৃ.]
হানাফী মাযহাবের আলেমগণ ও মুফতিগণ কবরের উপরের ছাদকে মৃত ব্যক্তির অধিকার বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন- ফতোয়া-ই আলমগীরীর মধ্যে উল্লেখ আছে-
عن القنية قال علاء الدين الشرجمانى ياثم بوطى القبرور لان سقف القبر حق الميت
অর্থাৎ কুনিয়া নামক কিতাবে বর্ণিত আছে, প্রখ্যাত ফকীহ্ আল্লামা আ’লা উদ্দীন তরজুমানী বলেছেন, কবরের উপর দিয়ে চলাফেরা করা গুনাহ্। কেননা কবরের ছাদ মৃতের অধিকারভুক্ত।
হাদীসে পাকে আরো উল্লেখ রয়েছে কবরের উপর বসাও মৃতের জন্য কষ্টের যেমন হযরত আম্মার বিন হাজম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
رأنى رسول الله صلى الله عليه وسلم جالسا على قبر فقال يا صاحب القبر انزل لاتوذى صاحب القبر ولايوذيك
অর্থাৎ আল্লাহর প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম একটি কবরের উপর আমাকে বসা অবস্থায় দেখেন। তিনি বলেন, হে কবরে উপবিষ্ট ব্যক্তি। কবর থেকে নেমে যাও। কবরবাসীকে কষ্ট দিও না এবং সেও যেন তোমাকে কষ্ট না দেয়।
[আল মুসান্নাফ কৃত. ইবনে আবি শায়বাহ্, ৩য় খন্ড, পৃ. ৩৬৭]
সুতরাং যে কোন নতুন বা পুরাতন কবরস্থানের উপর ঘর-বাড়ি রাস্তা-ঘাট, চলাফেরার পথ, ক্ষেত-খামার এমনকি মসজিদ-মাদরাসা ইত্যাদি নির্মাণ করা নাজায়েয ও হারাম। কেউ নির্মাণ করলে তা ভেঙ্গে দেয়া সকল মুসলমানের উপর একান্ত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
[সহীহ্ মুসলিম শরীফ, কুনিয়া, আবু দাউদ শরীফ, মুহীত,
ফতোয়া-এ আলমগীরী ও আমার রচিত যুগ-জিজ্ঞাসা ইত্যাদি]
তবে প্রখ্যাত অলি-গাউস, কুতুব, আবদাল ও ওলামায়ে কেরাম এ মর্মে ফয়সালা প্রদান করেছেন যে, আউলিায়ে কেরাম ও প্রকৃত হক্কানী ও রব্বানীর কবর যিয়ারত, ক্বোরআন তিলাওয়াত ও ভক্ত-অনুরক্ত সবাই একত্রিত হয়ে জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ করা। তাদের কবরের উপর ঘর ও গম্বুজ নির্মাণ করা জায়েয ও মুস্তাহাব। যাতে তাদেরকে কেউ সাধারণ কবরবাসী মনে না করে। [মেরকাত শরহে মিশকাত ইত্যাদি]
প্রশ্ন: সালাতে আওয়াবীনের নামায সম্পর্কে বিস্তারিত জানালে ধন্য হবো।
উত্তর: নামায ইবাদতসমূহের মধ্যে সর্বোত্তম ইবাদত। ফরজ, ওয়াজিব, সুন্নাতের পাশাপাশি ইসলামী শরীয়ত নফল নামায আদায়ের ব্যাপারে অতি গুরুত্বারোপ করেছে। নফল নামায সমূহের মধ্যে ‘সালাতুল আওয়াবীন’ বা আওয়াবীনের নামায অন্যতম। যা মাগরিবের নামাযের ফরজ, সুন্নাত আদায়ের পর হতে এশার নামাযের আগ পর্যন্ত পড়া যায়। ২ রাকাত করে ছয় রাকাত নফল নামায আদায় করাকে সালাতুল আওয়াবীন বলা হয়।
হাদীসে পাকে এ নামায আদায়ের বিষয়ে প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। যেমন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন-
مَنْ صلى بعد المغرب ست ركعات غفرت له
ذنوبه وان كانت مثل زبد البحر [رواه الطبرانى]
অর্থাৎ যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাআত নফল নামায আদায় করবে তার সমস্ত গুনাহ্ ক্ষমা করে দেয়া হবে যদিও তার গুনাহের পরিমাণ সমুদ্রের ফেনার সমান হয়। [তাবরানী শরীফ]
অপর হাদীসে উল্লেখ রয়েছে-
من صلى بعد المغرب ست ركعات لم يتكلم فيما
بينهن بسوء عدلن له بعبادة ثنتى عشرة سنة
[رواه الترميذى ـ ابن ماجه ـ ابن خزيمه]
অর্থাৎ প্রখ্যাত সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন, প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাআত নামায আদায় করবে এবং এর মাঝে কোন খারাপ কথা বলবে না, তার এ নামাযের দ্বারা সে ১২ বছরের ইবাদতের সমান সাওয়াব লাভ করবে।
[তিরমিযী শরীফ, ইবনে মাযাহ্, ও ইবনে খুজাইমা ইত্যাদি]
সাধারণভাবে অন্যান্য সুন্নাত ও নফল নামাযের ন্যায় সূরা ফাতিহার পর যে কোন সূরা-কিরআত মিলিয়ে আওয়াবীন নামায পড়া যায়। তবে কাদেরিয়া তরীকার পীর-মাশায়েখ কেরাম এ নামাজে সূরা ফাতিহার পর প্রতি রাক্‘আতে তিনবার করে সূরা ইখলাস পড়ার নিয়মকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এর কারণ হল- হাদীসে পাকে উল্লেখ রয়েছে- যে ব্যক্তি তিনবার সূরা ইখলাস পাঠ করে তাক্ েএক খতম কুরআন পাঠের সাওয়াব দান করা হবে। সুতরাং প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহার সাথে তিনবার সূরা ইখলাস মিলিয়ে আওয়াবীনের নামায আদায় করা উত্তম তরিকা। কাদেরীয়া তরিকার মুরিদান ও অনুসারীগণ পীর-মুর্শিদের বাতানো নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক রাকাআতে সূরা ফাতেহার পর তিনবার সূরা ইখলাস পাঠ করবে।
[সাজরায়ে আলিয়া কাদেরিয়া, প্রকাশনায়- আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট, চট্টগ্রাম।]
মুহাম্মদ সৈয়দ নূর,
(শিক্ষার্থী-জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া)
বাঁশখালী, চট্টগ্রাম।
প্রশ্ন: বিয়ের আগের দিন রাতে যে বিয়েগুলোতে ব্যান্ড, প্যাকেজ অনুষ্ঠান, অশ্লীল গানবাজনা, নর্তকী দ্বারা নাচানাচি করা হয়, এ রকম বিয়েগুলো শরিয়তসম্মত বিয়ে হচ্ছে কিনা? কুরআন-হাদিসের আলোকে জানালে উপকৃত হবো।
উত্তর: ‘বিয়ে’ বা বিবাহ্ (নিকাহ্) ইসলামী শরীয়তে একটি সুন্দরতম বরকতমন্ডিত অনন্য সুন্নাত ইবাদত এবং সামর্থ্য ও অবস্থা ভেদে ইসলামী শরীয়তে বিয়ে করা ফরয, সুন্নাত, মুস্তাহাব ও হারাম ইত্যাদি। তবে স্বাভাবিক অবস্থায় সামর্থ্যবানদের উপর বিবাহ্ করা সুন্নাত। সুন্নাত পালন ও বংশ রক্ষা, বৃদ্ধি এবং অশ্লীল বেহায়াপনা ও ব্যভিচার ইত্যাদি হতে রক্ষার জন্য বিয়ের বিধান ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে নেহায়ত গুরুত্বপূর্ণ। বিবাহ্ আমাদের প্রিয়নবীসহ সকল নবীগণেরও সুন্নাত বটে।
হাদীস শরীফে এরশাদ হয়েছে-
النكاح من سنتى فمن رغب عن سنتى فليس منى
[الحديث]
অর্থাৎ বিবাহ হলো আমার সুন্নাত, আর (সামর্থ থাকার পরও) যে বিয়ে করলো না, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। [আল হাদিস]
সুতরাং নেকাহ্ বা বিয়ে একটি পূণ্যময় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। আর ইবাদত এবং পাপ, অশ্লীলতা একে অপরের বিপরীত। তাই বিয়ের আগের বা পরের রাতে যে কোন সময় হোক অশ্লীল ব্যান্ড, প্যাকেজ, অশ্লীলতা-বেহায়াপনা, অশ্লীল গান-বাজানা, নাচানাচি ইত্যাদি ইসলামী শরীয়তে সম্পূর্ণ হারাম, নাজায়েয ও গুনাহ্র কাজ। একটি সুন্নাতকে প্রতিষ্ঠা বা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে এ সমস্ত কু-কর্মকান্ড পরিচালনায় যারা জড়িত অর্থ দিয়ে হোক বা অংশগ্রহণ করে হোক সকলেই অবশ্যই গুনাহ্গার হবে এবং পারিবারিক জীবনে গজব নাজিল হবে। তবে আকদ বা বিবাহ্ ইজাব-কবুল ও স্বাক্ষীগণের উপস্থিতিতে সংগঠিত হলে নেকাহ্ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
[শরহে বেকায়া ও হেদায়া নেকাহ্ অধ্যায়]
দু’টির বেশি প্রশ্ন গৃহীত হবেনা একটি কাগজের পূর্ণপৃষ্ঠায় প্রশ্ন লিখে নিচে প্রশ্নকারীর নাম, ঠিকানা লিখতে হবে। প্রশ্নের উত্তর প্রকাশের জন্য উত্তরদাতার সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ বাঞ্ছনীয় নয়। প্রশ্ন পাঠানোর ঠিকানা: প্রশ্নোত্তর বিভাগ, মাসিক তরজুমান, ৩২১, দিদার মার্কেট (৩য় তলা), দেওয়ান বাজার, চট্টগ্রাম-৪০০০।