আধ্যাত্মিক সাধক ও বিশিষ্টজনদের দৃষ্টিতে আ’লা হযরত
অধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ আবু তৈয়ব চৌধুরী…
আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খাঁন রহমাতুল্লাহি তা‘আলা আলায়হি ত্রয়োদশ শতাব্দীর সমাপ্তিভাগে ১২৭২ হিজরি থেকে চতুর্দশ শতাব্দীর মধ্যভাগ ১৩৪০ হিজরি পর্যন্ত ৫৫ বছর দ্বীনি সংস্কারের অনন্য কর্ম সম্পাদন করে যান। সে সময়ে তিনি সব বাতিল দলের বিরুদ্ধে লেখনি ও মোনাযারার জিহাদে অবতীর্ণ হয়ে বাতিলদের উপস্থাপিত প্রমাণাদির দাঁতভাঙ্গা দিয়েছেন এবং তাদের ভ্রান্ত মতবাদ ও আক্বিদাকে চিিহ্নত করেছেন। তাঁর বিস্ময়কর প্রতিভা, জ্ঞান ও প্রজ্ঞা নিয়ে বিশিষ্ট বরেণ্য ব্যক্তিরা উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেনঃ
রাহবরে শরিয়ত, মুর্শেদের বরহক হাদীয়ে দ্বীনো মিল্লাত হযরতুলহাজ্ব আল্লামা হাফেজ ক্বারী সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ
বাতিল ফেরকা সম্প্রদায়ের বিভ্রান্তিকর আক্বিদা, নবী আক্রাম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম- এর শানে আপত্তিকর আচরণ যখন ঘুর্ণিঝড় বা সাইক্লোনের মত মারাত্মক আকার ধারণ করেছিল, ঠিক ওই মুহূর্তে হযরত নূহ্ আলায়হিস্ সালাম আর কিস্তিতুল্য আ’লা হযরতের ক্ষুরধার লিখনী উম্মতে মুহাম্মদীকে স্বীয় বক্ষে উঠিয়ে নিয়েছে। রাহমাতুল্লিল আলামীন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম তাঁকে রহমতের বিশাল সমুদ্র হতে সুধা পান করিয়ে পরিতৃপ্ত করেছেন। আ’লা হযরতের মসলক ঈমানদারদের রূহানী খোরাক। চিন্তার বিষয় হলো, মহান ব্যক্তির পবিত্র মুখে এ জাতীয় কাব্য প্রবহমান, তাঁর অন্তরের অবস্থানই বা কোথায়? নিঃসন্দেহে বলা যায়, তিনি ফানা ফির রাসূলের মর্যাদাপ্রাপ্ত। [পয়গামাতে ইমামে রেযা, লাহোর, পৃ. ৩১]
প্রখ্যাত দার্শনিক, প্রথিতযশা লেখক ও গবেষক, আশেকে রসূল ড. আল্লামা ইকবাল
আ’লা হযরতের ফাতাওয়াসমূহ পড়ে আমি এ অভিমত ব্যক্ত করলাম যে, ভারতবর্ষে শেষ যুগে আ’লা হযরতের মত বিজ্ঞ ও মেধাসম্পন্ন ফক্বীহ্ জন্মগ্রহণ করেননি। তাঁর প্রতিভা, বুদ্ধিমত্তা, উন্নত স্বভাব, জ্ঞানের গভীরতা, দ্বীনি বিষয়াদিতে জ্ঞানসমূদ্রের ন্যায় গভীর। আ’লা হযরত একবার যেই মত প্রতিষ্ঠা করে নেন সেটির উপর তিনি অটল থাকেন। তবে তিনি নিঃসন্দেহে তাঁর মতের বহিঃপ্রকাশ ঘটান অতি গভীর চিন্তা ভাবনা করেই। তাঁর কৃত শরিয়তের কোন ফয়সালা বা তাঁর প্রদত্ত কোন ফাতাওয়া তাঁকে কোনদিন বাতিল বা পরিবর্তন করতে হতোনা। জ্ঞানগত দিক দিয়ে আ’লা হযরত হলেন ‘যুগের ইমাম দ্বিতীয় আবু হানিফা’
[মক্বালাতে ইমামে রেযা, ৩য় খন্ড, লাহোর, এপ্রিল ১৯৭১]
আল্লামা আতা মোহাম্মদ বন্দিয়ালভী, সারগোদা, পাকিস্তান
ইমাম আহমদ রেযা সহ¯্রাধিক কিতাব লিখেছেন; কিন্তু তাঁর সার্বক্ষণিক উজ্জ্বল কর্ম হলো ক্বোরআন করীমের অনুবাদ ও ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থ ‘কান্যুল ঈমান’, যার তুলনা নেই। এ অসাধারণ ও অনন্য মহা কর্মের সঠিক মূল্যায়ন শুধু ওই সকল জ্ঞান বিশারদই করতে পারবেন, যাদের উর্দু ভাষায় লিখিত অন্যান্য উন্নতমানের অনুবাদ ও ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থের তুলনামূলক গভীর জ্ঞান বিদ্যমান।
[পয়গামাতে ইয়াওমে রেযা, পৃ. ৪৭]
ড. স্যার যিয়াউদ্দীন, সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর, আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
আমরা নিজ দেশে (ভারতে) আহমদ রেযার মত এতবড় বিজ্ঞ পন্ডিত ব্যক্তিত্ব থাকা সত্ত্বেও উচ্চ শিক্ষার জন্য শুধুমাত্র ইউরোপ গিয়ে দুঃখজনকভাবে অযথা সময় অপচয় করেছি।
১৯৮১ সালে লাহোর হতে প্রকাশিত মোহাম্মদ বোরহানুল হক রচিত ‘একরামে ইমামে আহমদ রেযা’-এর ৫৯-৬০ পৃষ্ঠায় ড. স্যার যিয়াউদ্দিন আরো বলেন, শিষ্ঠাচার ও উন্নত নৈতিকতা সমৃদ্ধ কোন ব্যক্তি যখন কোন শিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষিত না হয়েই গণিত শাস্ত্রে গভীর অন্তর্দৃষ্টি ধারন করেন, তখন তা আল্লাহ্ প্রদত্ত জন্মগত বৈশিষ্ট্যই বটে। আর আমার গবেষণা ছিল একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধান সম্পর্কে; কিন্তু ইমাম সাহেবের পদ্ধতি ও ব্যাখ্যাবলী ছিল স্বতঃস্ফূর্ত যেন বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর সুগভীর গবেষণা রয়েছে। আমার দৃষ্টিতে ভারত জুড়ে তাঁর মত এত উঁচু মাপের প্রসিদ্ধ জ্ঞানী ব্যক্তি অপরজন নেই। মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর মাঝে এমন জ্ঞান গচ্ছিত রেখেছেন, যা সত্যি বিস্ময়কর। গণিত, ইউক্লিড, আলজেবরা ও সময় নির্ণয় ইত্যাদির ক্ষেত্রে তাঁর সূক্ষ্ম দৃষ্টি অত্যন্ত চমৎকার ও বিস্ময়কর। একদিন গাণিতিক একটি সমস্যা, যা আমি বহুবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই, তা ওই জ্ঞানী ব্যক্তি অল্পক্ষণের মধ্যে সেটার সঠিক ব্যাখ্যা করে দেন।
আল্লামা হেদায়েতুল্লাহ্ সিন্ধী মোহাজিরে মাদানী
আ’লা হযরত একজন প্রতিাভাধর নেতৃত্বদানকারী আলেম, তাঁর সময়কার প্রখ্যাত আইনবিদ এবং তিনি প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামের মান মর্যাদা রক্ষায় সর্বশক্তি দ্বারা আত্মনিয়োগ করেছিলেন, যাতে শরিয়তের হিফাযত করা যায়।
আল্লাহ্ পাকের দ্বীনের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তাঁর সাথে দ্বিমত পোষণকারীদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের প্রতি তিনি ভ্রুক্ষেপও করেননি। তিনি পার্থিব জীবনের মোহসমূহের পেছনে কখনো ছুটেননি; বরং রাসূলে আক্রাম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শানে কালাম রচনা করাকেই বেশী পছন্দ করেছিলেন। তিনি প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর ভাবনায় সর্বদা লিপ্ত ছিলেন বলেই প্রতীয়মান হয়। সাহিত্যিক সৌন্দর্যমন্ডিত ও প্রেম-ভক্তিতে ভরপুর তাঁর না’তিয়া কালামের মান যাচাই করা কখনোই সম্ভব নয়। ইহকাল ও পরকালে তাঁর পুরস্কার ধারণাতীত।
মাওলানা আব্দুল মোস্তফা শায়খ আহমদ রেযা খাঁন সাহেব ‘হানাফী, কাদেরী ও পান্ডিত্যের’ সর্বশ্রেষ্ঠ খেতাব পাওয়ার যোগ্য। [১৯৮৬ সালে প্রদত্ত বক্তব্য, মা আরিফে রেযা, করাচী, পৃ. ১০২]
ড. মালিকযাদা মনযুর, অধ্যাপক লক্ষেèৗ বিশ্ববিদ্যালয়
ইসলামের সংস্কারক মাওলানা আহমদ রেযা খাঁন একদিকে যেমন জ্ঞানের সমূদ্র, অন্যদিকে ছিলেন খোদাভীতি ও রূহানী অলৌকিক শক্তির মাপকাঠি। তেমনিভাবে তিনি ছিলেন রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি অতুলনীয় প্রেম ও ভালোবাসার মূর্ত প্রতীক।
মোহাম্মদ করম শাহ্ বেরুবী, রিসার্চ স্কলার, আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়, মিশর
আ’লা হযতের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই যিক্রে খোদা ও ইশক্বে মোস্তফায় ভরপুর। প্রিয় নবী প্রদর্শিত ইসলামের প্রচার-প্রসারে এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শান মান প্রচারে তিনি গোটা জীবন উৎসর্গ করেছেন।
প্রফেসর মুখতার উদ্দীন আহমেদ, সাবেক ডীন, ফ্যাকাল্টি অব আর্টস, আলীগড় মুসলিম ভার্সিটি
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে আ’লা হযরতের প্রেম-ভালোবাসার যুগ এক ঐতিহাসিক যোগসূত্র। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং তাঁকে রওযা আকদাসে সাক্ষাৎ দিয়েছেন।
আল্লামা আলা উদ্দীন সিদ্দিকী, সাবেক উপাচার্য, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়, লাহোর, পাকিস্তান
বিভিন্ন ধর্মের মধ্যে দ্বীন ইসলাম যেমন স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমন্ডিত, ঠিক তেমনি মুসলিম চিন্তাবিদদের বিভিন্ন ধারায় আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর। যখনই নাজুক পরিস্থিতিতে ধর্মীয় মূল্যবোধগুলো অবহেলিত ও উপেক্ষিত হচ্ছিল, ঠিক সেই সংকটাপন্ন মুহূর্তে ইমাম আহমদ রেযা খাঁনের আগমন। তিনি সংগ্রাম করে সেগুলোকে স্বমর্যাদায় পুণঃ প্রতিষ্ঠিত করেন।
আ’লা হযরত ছিলেন প্রকৃত ইমামে আহলে সুন্নাত। প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য তাঁর শিক্ষা অনুসরণ করা।
[আব্দুন্নবী কাওকাব প্রণীত মাক্বালাতে ইয়াওমে রেযা, ১১তম খন্ড, ১৯৬৮ লাহোর, পৃ. ১৮]
সৈয়দ আল্লামা গাযী আজিজুল হক শেরে বাংলা (রহ.)
আধ্যাত্মিক সাধক, গাযীয়ে দ্বীনো মিল্লাত সৈয়দ আজিজুল হক শেরে বাংলা তাঁর দিওয়ানে আজিজে আ’লা হযরতের মহান ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন স্বরূপ নি¤েœাক্ত কাব্য রচনা করেছেনঃ
মারহাবা ছদ মারহাবা ছদ মারহাবা ছদ মারহাবা
আয বরায়ে ফখরে হিন্দ আহমদ রেযা খাঁন মারহাবা
অর্থাৎ শত সহ¯্র অভিবাদন, শত সহ¯্র মোবারক বাদ, শত শত মারহাবা, ভারতবর্ষের গর্ব আহমদ রেযার প্রতি মারহাবা।
মোক্তাদায়ে আহলে সুন্নাত আঁ রাশকে যমাঁ,
সাহেবে তা’লীফ ওয়া তাসনীফাত আহমদ রেযা
অর্থাৎ তিনি ছিলেন আহলে সুন্নাতের আদর্শ (অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব), যুগের ঈর্ষণীয় পুরুষ, নিঃসন্দেহে তিনি ছিলেন অসংখ্য গ্রন্থের রচয়িতা ও প্রণেতা।
দাফে‘ই কুফর ওয়া দ্বালালত রাহবারে রাহে হুদা,
আহদে হাজের রা মুজাদ্দেদ আঁ ইমামে বা সফা
অর্থাৎ তিনি ছিলেন গোমরাহী ও ভ্রষ্টতার প্রতিরোধকারী, সঠিক পথের প্রদর্শক ও বর্তমান যুগের মুজাদ্দিদ বা সংস্কারক।
গর নবুদে জাতে পাকশ আন্দর আঁ হিন্দুস্তাঁ,
দুশমনে আহমদ ওয়াহবিয়া শুদ নদে আহলে আঁ
অর্থাৎ সেই পবিত্র সত্তা যদি ভারতবর্ষের বুকে না আসত, তাহলে নবীদ্রোহী ওহাবী সম্প্রদায় এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের গ্রাস করত।
নি’মাতে ওজমা বরায়ে আহলে সুন্নাত বেগুমাঁ
জহরে কাতেল বুদ লেকিন আজ বরায়ে ওহাবীয়া
অর্থাৎ তাঁর আগমন নিঃসন্দেহে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের জন্য নি’মাতস্বরূপ। প্রকৃতার্থে তাঁর শুভাগমন ছিল ওহাবী সম্প্রদায়ের জন্য প্রাণ বিনাশী বিষতুল্য।
তুরবতশরা বাগে জান্নাত ছাজ আয় রব্বে জাহাঁ,
ইছতাজিব ইয়া রব তোফাইলে সরওয়ারে পয়গম্বরাঁ
অর্থাৎ হে বিশ্ব জগতের পালনকারী! তাঁর সমাধিস্থলকে জান্নাতের মরুদ্যানে রূপান্তরিত করুন। হে প্রভু! নবী কুলের সর্দারের ওসীলায় এ প্রার্থনা কবুল করুন।
দর বেরেলী গশত ওয়াক্বে রাওজায়ে পুরনুরে মরদেমা
হার ফয়জে বাশদ দায়েমা আজ জাতে উ
অর্থাৎ বেরেলী নগরে তাঁর আলোকময় রাওযা শরীফ অবস্থিত, সর্বদা এ মহান ব্যক্তিত্বের ফয়ূজাত আমাদের উপর প্রবহমান থাকুক।
নামে নাজেম গরতু খাহী শেরে বাঙ্গালা বেদাঁ,
মুনকিরানে সুন্নিয়ারা ছয়কে বররা বেগুমাঁ।
অর্থাৎ যদি এ কবিতায় রচিয়তার নাম জানতে চাও, (জেনে রেখো) তিনি হলেন শেরে বাংলা, যিনি সুন্নীয়তের অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে তেজোদীপ্ত তরবারী স্বরূপ।
মৌং আশরাফ আলী থানভী, ভারত
ইমাম আহমদ রেযা খাঁনের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে, যদিও তিনি আমাকে কাফের বলে ডেকেছেন। কেননা আমি পূর্ণ অবগত যে, এটা আমার অন্য কোন কারণে নয় বরং নবী দো’জাহানের ব্যক্তিত্বের প্রতি তাঁর সুগভীর ও ব্যাপক ভালোবাসা থেকে উৎসারিত।’
[সাপ্তাহিক সাত্তান, লাহোর, ১৯৬২, ২৩ এপ্রিল]
আমার যদি সুযোগ হতো তাহলে আমি মাওলানা আহমদ রেযা খাঁন ফাজেলে ব্রেলভীর পেছনে নামাজ পড়ে নিতাম।’’ [উসওয়া-ই আকাবির, পৃ. ১৮]
‘‘আমার অন্তরে আ’লা হযরতের প্রতি অসীম সম্মান রয়েছে। তিনি আমাদেরকে কাফির বলেন, কিন্তু ইশকে রাসূলে কারণেই বলেন, অন্য কোন উদ্দেশ্যে তো বলেন না। [আ’লা হযরত কি ফিকহী মকাম এর বরাতে মাওলানা আকতার শাহজাহানপুরী]
তাঁর সাথে আমাদের বিরোধিতার কারণ বাস্তবিকপক্ষে (নবী প্রেম সংক্রান্ত বিষয়); তিনি আমাদেরকে হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি অশালীনতা প্রদর্শনকারী মনে করেন।’’ [আশরাফুস্ সাওয়ানিহ্, ১ম খন্ড, পৃ. ১২৯]
আবুল আ’লা মওদুদী, পাকিস্তান
মাওলানা আহমদ রেযা খাঁনের পান্ডিত্যের উঁচুমান সম্পর্কে আমার গভীর শ্রদ্ধা বিদ্যমান। বাস্তবপক্ষে দ্বীনি চিন্তা চেতনায় তাঁর রয়েছে সুগভীর জ্ঞান। বহু বিতর্কিত বিষয়ে যারা তাঁর সাথে একমত পোষণ করেন না, তারাও তাঁর মেধাকে, শ্রেষ্ঠত্বকে স্বীকার করে।
[মাক্বালাতে ইয়াওমে রেযা, ১ম ও ২য় খন্ড, পৃ. ৬০]
আমার দৃষ্টিতে আ’লা হযরত মরহুম মাগফুর ধর্মীয় জ্ঞান গভীর অন্তদর্ৃৃষ্টির ধারক এবং মুসলমানদের একজন উঁচু পর্যায়ের সম্মানিত ইমাম ছিলেন। যদিও তাঁর কোন কোন ফতোয়া ও মতামতের সাথে আমার বিরোধ রয়েছে; কিন্তু আমি তাঁর দ্বীনি খেদমতের কথাও নির্দ্বিধায় স্বীকার করি।’’
[ইমাম আহমদ রেযা আল মিযান, ১৯৭৭সনে মুদ্রিত]
ইদ্রিস কান্দুলভী, প্রধান মুহাদ্দিস, দেওবন্দ মাদরাসা
তিনি আ’লা হযরত রচিত বিখ্যাত নাতিয়া কালাম ‘মোস্তফা জানে রহমত পে লাখো সালাম’ পাঠ করে ভাবাবেগে বলে উঠেন, রোজ হাশরে ইমাম আহমদ রেযা (রহ.) তাঁর অতুলনীয় এই একটি অনুপম কসিদার ওসীলায় নাজাত পেয়ে যেতে পারেন। [আ’লা হযরত কনফারেন্স, করাচী, কাউসার নিয়াজীর জবানী]
এভাবে আরো বহু পীর, মাশায়েখ, মনীষী এমনকি ভিন্ন আক্বিদাপন্থি ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও আ’লা হযরতের জ্ঞান-প্রজ্ঞার ব্যাপক প্রশংসা করেছেন।