মুহাম্মদ সুলাইমান
মনসা, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
উত্তর: নামাযের ভেতরে বা বাইরে উভয় অবস্থাতেই অহংকারবশতঃ লুঙ্গি-পায়জামা ও প্যান্ট ইত্যাদি টাখনুর নিচে পরিধান করা অথবা ঝুলিয়ে দেয়া/পড়া পুরুষের জন্য মাকরূহে তাহরীমী। যা অত্যন্ত নিন্দনীয় নিষেধ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সহীহ্ বুখারী শরীফে হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রাদ্বিয়াল্লাহু তা‘আলা আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে হুজুর করীম সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন- لا ينظر الله يوم القيامة من جر ثوبه خيلاء অর্থৎ যে ব্যক্তি তার কাপড়কে অহংকারবশত ঝুলিয়ে রাখে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তায়ালা তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। [সহীহ বুখারী শরীফ]
তাই নামাযের ভিতরে ও বাইরে অহংকার বশতঃ টাখনুর নিচে কাপড় তথা প্যান্ট/পায়জামা ও লুঙ্গি ইত্যাদি ঝুলিয়ে রাখা মাকরূহে তাহরিমা। যদি ঝুলিয়ে পড়া অহংকারবশত না হয় তবে মাকরূহে তানযীহি। অনেক লোককে দেখা যায়, ‘নামায পড়ার সময় পায়জামা বা প্যান্ট উপরের দিকে ভাঁজ করে দেয়, আর নামাযে এভাবে ভাজ করে দেয়াও ‘মাকরূহে তাহরীমি। পায়জামা বা প্যান্ট যদি লম্বা হয় এবং পায়ের টাখনু ঢেকে যায় তখন কাপড়কে টাখনুর উপর করার জন্য নীচের দিকে ভাজ করবে না বরং সম্ভব হলে কোমরের দিকে টেনে দিবে, এভাবে টানার দরুণও যদি কাপড় টাখনুর উপরে না উঠে তখন ওই অবস্থায় নামায পড়ে নেবে। নামাযে এভাবে আদায় করাও মাকরূহ তবে তা হবে মাকরূহে তানযীহী, তাহরীমি নয়। কিন্তু কাপড় টাখনুর উপরে তোলার জন্য নীচের দিকে ভাজ করাটা মাকরূহে তাহরিমী বিধায় ওই নামায পুনরায় আদায় করতে হবে। মাকরূহে তানযীহীর দরুণ সওয়াব কম হবে কিন্তু নামায পুনরায় আদায় করতে হবে না। বিস্ময়ের কথা এই যে, অনেক লোক ও মুসল্লিরা মাকরূহে তানযীহি থেকে বাঁচার জন্য মাকরূহে তাহরীমি করে বসে আর এটাকে সুন্নাত মনে করে। অনেক মসজিদের ইমাম/মোয়াজ্জিন/খতিব ও ওলামায়ে কেরাম এ মাসআলা সম্পর্কে উদাসীন। না জানলে জেনে নেয়ারও চেষ্টা করে না। তবে পায়জামা প্যান্ট লুঙ্গী ইত্যাদি পরিধানের সময় যেন টাখনুর (চুল গিরার) নীচে না যায় বরং টাখনু (চুল গিরা) খোলা থাকে, এটাই সুন্নাত নিয়ম। উক্ত মাসআলা দলিলসহ মাসিক তরজুমান প্রশ্নোত্তর বিভাগে একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে।
[আল্লামা আবব্দুস সাত্তার হামদানী কর্তৃক রচিত মুমিন কি নামায’ পৃ. ১৮০-১৮১ এবং ইমাম আলা হযরত শাহ্ আহমদ রেযা (রহ.) কর্তৃক রচিত ‘ফতোয়ায়ে রেজভিয়া, ৯ম খন্ড, পৃ. ৮৪ ইত্যাদি]