প্রশ্ন: জুলুস শব্দের অর্থ কি? জশনে জুলুস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই?

0

? মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন
চকরিয়া, কক্সবাজার।

´প্রশ্ন: জুলুস শব্দের অর্থ কি? জশনে জুলুস সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাই?

্উত্তর: জুলুস আরবি শব্দ। যার শাব্দিক অর্থ হল বসা, শাহী সওয়ারী, শান ও শওকতপূর্ণ শোভাযাত্রা, মিছিল ইত্যাদি। শরিয়তের পরিভাষায় সমগ্র সৃষ্টির প্রাণ ও উৎস হুজুর পূরনুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর শুভাগমনকে স্মরণ করে খুশী উদ্যাপন ও শুকরিয়া আদায়ের জন্য হামদ-নাত, জিকির ও দরূদ সালামের সাথে অত্যন্ত শান শওকতের ভিত্তিতে নবী প্রেমিকদের শোভাযাত্রাকে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলা হয়। প্রিয়নবীর প্রতি ভক্তিশ্রদ্ধা ও ভালবাসা প্রদর্শনের এবং সমগ্র সৃষ্টির জন্য অদ্বিতীয় নেয়ামত নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামের আগমনে খুশী ও শোকরিয়া প্রকাশের নিমিত্তে এ ধরনের জুলুস নুরানী জগতের ফেরেশতাগণের সুন্নাতের অনুসরণ।

পবিত্র কুরআনের সূরা ইউনুসের ৫৮নং আয়াতে পরম করুণাময় আল্লাহ তায়ালা তাঁর বিশেষ অনুগ্রহ ও রহমতকে বিশেষভাবে স্মরণ এবং বৈধ পন্থায় খুশী উদ্যাপন করার জন্য আদেশ তদুপরি মহানবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামের আম্মাজান হযরত আমেনা খাতুনের বর্ণনা মতে দেখা যায় আল্লাহর প্রিয় মাহবুবের আবির্ভাবের শুভ মুহুর্তে অসংখ্য নুরানী ফেরেশতা দলে দলে জুলুস সহকারে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে মোবারকবাদ ও স্বাগতম জানানোর জন্য আসমান থেকে হযরত আমেনার গৃহে নাযিল হয়েছিলেন। উক্ত বর্ণনাসমূহ জগদ্বিখ্যাত হাদিসের ইমামগণ স্ব স্ব রচিত কিতাবে বর্ণনা করেছেন। যেমন আন্-নেয়ামতুল কুবরা আলাল আলম, কৃতঃ ইবনে হাজর হায়তমী মক্কী রহ., মাওয়াহেবে লাদুনীয়া কৃতঃ ইমাম কোস্তলানী রহ. আনওয়ারে মুহাদ্দীয়া কৃত আল্লামা ইউসুফ নেবহানী রহ. ও আল খাচায়েচুল কোবরা কৃতঃ ইমাম জালাল উদ্দিন সুয়ূতী রহ. সহ অনেক নির্ভরযোগ্য কিতাবে এ ধরনের উদ্ধৃতি বর্ণিত আছে।

সুতরাং নবী করিম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লামের শুভাগমনের মাস রবিউল আউয়ালে, নবী করিম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র শান-মান মর্যাদা প্রদর্শন এবং শ্রদ্ধা ও ভালবাসা নিবেদনের জন্য জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম’র আয়োজন এবং মহান রবের দরবারে শোকরিয়া আদায়ের জন্য সর্বত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলায়হি ওয়াসাল্লাম এর মাহফিল, দরুদ সালাম ও তাবাররুকের ব্যবস্থাপনা যুগযুগ ধরে হক্কানী ওলামায়ে কেরাম ও ফোকহায়ে এযাম অতি বরকতময়, পুণ্যময় ও অন্যতম ইবাদত হিসেবে ফতোয়া, ফায়সালা প্রদান করেছেন। সুতরাং এ সব নেক আমলসমূহকে ঠাট্টা-বিদ্রোপ করা, বিদআত-হারাম ইত্যাদি বলা মূলত, হামদ-নাত, দরুদ-সালাম, বয়ান-তকরির, খানা-পিনা পরিবেশন ও দোয়া মুনাজাতকে অস্বীকার করার নামান্তর যা সুস্পষ্ট গোমরাহী।

শেয়ার
  •  
  •  
  •  
  •