সৈয়্যদা মাদিহা আল্ বাতুল
শিক্ষার্থী, জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মহিলা মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম। =
প্রশ্ন: মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম উপলক্ষে জশনে জুলুস উদযাপনের তাৎপর্য ক্বোরআন-হাদীসের আলোকে জানালে উপকৃত হব।===
উত্তর: জুলুস শব্দটি আরবী। আভিধানিক অর্থ শোভাযাত্রা বা বর্ণাঢ্য র্যালী ও শাহী সাওয়ারী ইত্যাদি। শরীয়তের পরিভাষায় সমগ্র সৃষ্টির প্রাণ ও উৎস হুযূর করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লামার এ ধরা বুকে শুভাগমনকে কেন্দ্র করে শুকরিয়া আদায়ের উদ্দেশ্যে হাম্দ-না’ত, দরূদ-সালাম, যিকির-আযকার ইত্যাদির মাধ্যমে শোভাযাত্রা ও খুশী উদ্যাপন করাকে জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম) বলা হয়। নবী করিম সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনের খুশী উদ্যাপন করা, হাম্দ-না’ত, দরূদ-সালাম ও যিকির আযকারের মাধ্যমে জুলুস করত: উক্ত মহান নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করা এবং তার প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রদর্শন করা শরীয়ত সম্মত এবং তা ক্বোরআনুল করিমের নির্দেশ। আল্লাহর করুণা ও খাস রহমতকে স্মরণ করে খুশী উদ্যাপন করার আদেশ প্রদান করে। সূরা ইউনূসে মহান আল্লাহ্ এরশাদ করেন- قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَالِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُوْنَ-
অর্থাৎ হে হাবীব! আপনি (বিশ্ববাসীকে) বলুন, আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁরই দয়া (তথা প্রিয় মাহবূব সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম)কে স্মরণ করে সেটার উপর তারা যেন আনন্দ প্রকাশ করে। এটা তাদের জমাকৃত সমস্ত ধন-সম্পদ ও নেক আমল সমূহ অপেক্ষা অধিক উত্তম।
বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থে উপরোক্ত আয়াতে করীমার ‘‘برحمته’’ শব্দ দ্বারা ‘প্রিয়নবী রাহমাতুল্লিল আলামীনের পবিত্র ও নূরানী’ জাতে পাক বলে বর্ণিত হয়েছে।
[তাফসীরে দুররে মানসুর: কৃত- ইমাম জালাল উদ্দীন সুয়ূতী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি ইত্যাদি]
উল্লেখিত আয়াতের আলোকে মহানবী সাল্লাল্লাহু তা‘আলা আলায়হি ওয়াসাল্লাম-এর শুভাগমনকে উপলক্ষ করে, তাঁরই শুভাগমনের মাসে শরীয়ত সম্মত তরিকায় হাম্দ-না’ত, দরূদ-সালাম, যিকির-আযকার ও দু’আর মাধ্যমে আনন্দ উৎসব করা, শান-শওকতপূর্ণ জশনে জুলুস বের করা নবী প্রেমের বহিঃপ্রকাশ।
বিশেষত: প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লামার শুভাগমনের মুহূর্তে আল্লাহ্ তা‘আলার হুকুমে অসংখ্য নূরানী ফেরেশতা দলে দলে জুলুস সহকারে আসমান হতে মক্কা শরীফে নবীর দাদা খাজা আবদুল মোত্তালেবের ঘরে হামদ-না’ত সহকারে নূরানী পতাকাসহ অবতরণ করেছেন। জশনে জুলুসের প্রমাণ সমূহের মধ্যে এটা অন্যতম। যা ইমাম কসতলানী রাহমাতুল্লাহি আলায়হি সহ অনেক হাদিস-ফিক্হের ইমামগণ বর্ণনা করেছেন। [মাওয়াহেবে লাদুনিয়া ইত্যাদি]
